ঢাকা: সদ্য অনুষ্ঠিত চতুর্থ ধাপের ৮৩৭টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা নির্বাচনী যেকোনো অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট জেলার সিনিয়র সহকারী জজকে নিয়ে ‘নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল’ এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে ‘নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করা হয়েছে। ইসির আইন শাখার উপ-সচিব আফরোজা শিউলী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
গত ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মোট ২৯৫ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৪৮ জন প্রার্থী। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ১৩৫ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ হাজার ৮১৪ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৯ হাজার ৫১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩০ হাজার ১০৬ জন প্রার্থী ভোটের লড়াই করছেন। চেয়ারম্যান পদে এই ধাপে ১৬টি রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিয়েছে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সংখ্যা ছিল তিন-চতুর্থাংশ। এদের কেউ বা তাদের পক্ষে যে কোনো ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন।
আইন অনুযায়ী, নির্বাচনী ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে হয়। ট্রাইব্যুনাল তা ১৮০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করে। ট্রাইব্যুনালের রায়ে কেউ সন্তুষ্ট না হলে, সেই রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আবার আপিল ট্রাইব্যুনালে যাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে আপিল ট্রাইব্যুনালও আবেদনের ১৮০ দিনের মধ্যে রায় দেবেন।
অনিয়মের জন্য ‘নির্বাচিত প্রার্থীর নির্বাচন বাতিল এবং সামগ্রিক নির্বাচন বাতিলের আবেদন করা যাবে। ’ এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অপরাধ সংঘঠিত হওয়ার স্থান, সময় ও তারিখ স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। উভয় পক্ষের শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনাল যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটাই চূড়ান্ত হবে।
নির্বাচিত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধ হলে; নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হলে; দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে ভোটের ফল অর্জন বা ফল অর্জনের জন্য কার্যকলাপ বা আচরণ করা হলে; নির্বাচিত প্রার্থী তার এজেন্ট বা অন্য কোনো ব্যক্তির সংগে যোগসাজশ করে কোনো দুর্নীতিমূলক কার্যকলাপ বা বেআইনি আচরণ করলে; এবং নির্বাচনী ব্যয়সীমা লঙ্ঘন করলে ট্রাইব্যুনাল নির্বাচিত প্রার্থীর নির্বাচন বাতিল করতে পারবেন।
আবেদনকারী শুনানিতে হাজিরা দিতে না এলে বা অনুপস্থিত থাকলে বা মৃত্যুবরণ করলে আবেদন বা আপিল বাতিল হয়ে যাবে। আবেদনকারী শুনানির যেকোনো সময় আবেদন বা আপিল প্রত্যাহার করতে পারবেন। এছাড়া ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনালের খরচ আবেদনকারীকেই বহন করতে হবে।
ইতোমধ্যে চার ধাপে তিন হাজারের বেশি ইউপিতে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করেছে ইসি। পঞ্চম ধাপে ৭০৭টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৫ জানুয়ারি। আর ষষ্ঠ ধাপে ২১৯ ইউপিতে ভোট হবে ৩১ জানুয়ারি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
এমজেএফ/এমজেএফ