সিলেট: পঞ্চম ধাপে সিলেটের ১৮টিসহ বিভাগে ৭৫টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে বুধবার (৫ জানুয়ারি)। এরমধ্যে সিলেটের কানাইঘাটে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ হলেও নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটেছে জকিগঞ্জ উপজেলায়।
ফলে উপজেলার কাজলসার ইউনিয়নের নির্বাচন পুরোপুরি স্থগিত করা হয়েছে। আর সুলতানপুর ইউনিয়নে একটি কেন্দ্রের ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় গণনা হলেও ইউনিয়নের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়।
এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপর ইউনিয়নগুলোতে ভোট গ্রহণ শেষে গণনার পর ফলাফল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটানিং কর্মকর্তারা। প্রাপ্ত ফলাফলে দুই উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়নে ছয়টিতে নৌকা জিতলেও ১০টিতে ভরাডুবি হয়েছে। এ দুই উপজেলায় দুটিতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী, তিনটিতে জামায়াত ও দুটিতে জমিয়তের প্রার্থী, দুটিতে স্বতন্ত্র এবং একটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
এরমধ্যে জকিগঞ্জে চারটি ইউপিতে নৌকা, একটিতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী, একটিতে জাতীয় পার্টি, একটিতে জামায়াতের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া একটি ইউনিয়নের ফলাফল ও আরেকটির ভোট স্থগিত রাখা হয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলার দুটিতে নৌকা, দুটিতে জমিয়ত, একটিতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী, দুটিতে জামায়াত ও দুটিতে বিএনপির প্রার্থীরা ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন।
জকিগঞ্জের ৯ নম্বর মানিকপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর মো. রায়হান, ৫ নম্বর জকিগঞ্জ সদর ইউপিতে আফতার আহমদ (নৌকা), ৭ নম্বর বারোঠাকুরী ইউনিয়নে মহসীন মর্তুজা চৌধুরী (নৌকা), ২ নম্বর বীরশ্রী ইউপিতে আব্দুস সাত্তার (নৌকা), ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির আব্দুল হক, ১ নম্বর বারোহাল ইউপিতে মোটরসাইকেল প্রতীকে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাক আহমদ, ৮ নম্বর কসকনপুর ইউপিতে আনারস প্রতীকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন লস্কর বিজয়ী হয়েছেন।
এছাড়া ৬ নম্বর সুলতান পুর ইউনিয়নে গণিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট বক্স ছিনতাই হওয়ায় কেন্দ্রটি স্থগিত করা হয়েছে। যে কারণে ওই ইউনিয়নে ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম (আনারস) ৩ হাজার ৮১৬ ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ১ হাজার ১১৭ ভোট পেয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ২ হাজার ৬৯৯ ভোটে তিনি এগিয়ে আছেন। যা স্থগিতকৃত কেন্দ্রের সব ভোট পেলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে তিনি এগিয়ে থাকেবেন।
এদিকে, কাজলসার ইউনিয়নের রিটানিং কর্মকর্তাকে সিলমারা ব্যালটসহ আটকের ঘটনায় পুরো ইউনিয়নের ফলাফল স্থগিত করা হয়।
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলে পাওয়া তথ্যে, ১ নম্বর লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী তমিজ উদ্দিন। ২ নম্বর লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মনোনীত খেজুর গাছ মার্কার প্রার্থী মাওলানা জামাল উদ্দিন, ৩ নম্বর দিঘীরপাড় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকের আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী আব্দুল মোমিন চৌধুরী, ৪ নম্বর সাঁতবাক ইউনিয়নে চশমা প্রতীকের জামায়াতের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু ত্যায়িব শামীম, ৫ নম্বর বড়চতুল ইউনিয়নে বিপুল ভোটে বিজয়ী আনারস প্রতীকের প্রার্থী বিএনপির আব্দুল মালিক চৌধুরী, ৬ নম্বর সদর ইউনিয়নে বিজয়ী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আফসার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ৭ নম্বর দক্ষিণ বানীগ্রামে মোটরসাইকেল প্রতীকের জামায়াতের মাস্টার লোকমান আহমদ, ৮ নম্বর ঝিঙাবাড়ী ইউনিয়নে চশমা প্রতীকের বিএনপির মাস্টার আবু বকর এবং ৯ নম্বর রাজাগঞ্জ ইউনিয়নে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের খেজুর গাছ মার্কায় মাওলানা শামসুল ইসলাম বিজয়ী হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২২
এনইউ/আরআইএস