ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রোববার (১৭ জুলাই) থেকে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে দলগুলোর সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন ভবনে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে তারা।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় প্রতিদিনই চারটি করে দলের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিএনপির সঙ্গে যে দিন বসবেন, সেই দিন তিনটি দল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে যে দিন বসবেন সেদিন দুটি দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি দল ১০ জন করে সদস্য নিয়ে বৈঠকে অংশ নিতে পারবে।
এদিকে অনুষ্ঠেয় সংলাপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জন্য দুই ঘণ্টা করে সময় বরাদ্দ রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অন্য ৩৬টি নিবন্ধিত দলের জন্য রাখা হয়েছে ১ ঘণ্টা করে সময়।
কোন দলের সঙ্গে কবে সংলাপ: আগামী ১৭ জুলাই জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ কংগ্রেস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)- এই চারটি দলের সঙ্গে বসবে নির্বাচন কমিশন।
১৮ জুলাইয়ের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
১৯ জুলাই সময় পেয়েছে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্য জোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)।
২০ জুলাই সময় পেয়েছে গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
২১ জুলাই নির্ধারিত রয়েছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও গণফ্রন্টের জন্য।
২৪ জুলাই সময় পেয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় পার্টি (জেপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ।
২৫ জুলাইয়ের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।
২৬ জুলাই জমিয়েতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
২৭ জুলাই বৈঠক হবে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), জাকের পার্টি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে।
২৮ জুলাই রয়েছে গণফোরাম, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সঙ্গে।
সব শেষ ৩১ জুলাইয়ের তালিকায় আছে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় দেড় বছর আগে আগস্টে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বসেছিল তৎকালীন কেএম নূরুল হুদা কমিশন। এবার একই পথ ধরে সংলাপ শুরু করছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।
সে সময় ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তৎকালীন ইসি। এক্ষেত্রে বেশির ভাগ দিন সকাল এবং বিকেলে মোট দুটি দলের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে যে দুদিন বসেছিল, সেদিন আর কোনো দলের সঙ্গে সংলাপ করেনি ইসি।
সে সময় ইসির সঙ্গে ৩৯টি দলই সংলাপে অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে বেশিরভাগ দল সেনা মোতায়েনের পক্ষে এবং বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিপক্ষে ও ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ না করার সুপারিশ করেছিল।
সংলাপের মতামত পর্যালোচনা করে দুটি অংশে ভাগ করে একটি অংশকে নিজেদের বাস্তবায়ন যোগ্য মনে করে ইসি, যেটি তাদের কাছেই রাখে। অন্য অংশটি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত হওয়ায় ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দফতরসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়।
>>> আরও পড়ুন: ইভিএমে ভুল প্রতীকে ভোট, থাকছে না সংশোধনের সুযোগ
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১২
ইইউডি/এমএমজেড