ঢাকা : সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যদের মতো বিমান-রেল, হাসপাতাল ও কারাগারের সুযোগ-সুবিধা চায় গণফ্রন্ট।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) নির্বাচন ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত সংলাপে বসে এ প্রস্তাব দেয় দলটি।
প্রস্তাবনাগুলো হলো-
রাজধানী ঢাকার মত অন্যান্য বড় বড় শহরের আয়তন ও লোকসংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। জাতীয় সংসদের সীমানা পুনর্বিন্যাস করার জন্য আইনি কাঠামোর সংস্কারের যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি বাস্তবতার নিরিখে আসন সংখ্যাও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সংসদের আসন সংখ্যা ন্যূনতম ৩৫০/৪৫০ হতে পারে।
প্রতি জেলা ও প্রতি মহানগরী হতে একজন করে নারী সংসদ সদস্যকে নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। কারণ, রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকরী কমিটিসহ সব একজন সর্বোচ্চ ৩ জন নারী সদস্য রাখার বিধান চালু রাখার পাশাপাশি মহিলা আসন বৃদ্ধি করা যুক্তিযুক্ত বলে মনে করে তারা।
প্রত্যেকটি নিবন্ধিত দলের নিকট হালনাগাদ একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে বিনামূল্যে অথবা নামমাত্র মূল্যে; একই পোস্টারে সকল প্রার্থীর পরিচয় ও প্রতীক এবং একই মঞ্চে সকল প্রার্থীর নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্যের ব্যবস্থা গ্রহণ।
নির্বাচনকালীন প্রার্থীর মিছিল নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে হবে, চা-নাস্তা খাওয়ানোর জন্য নির্বাচনী ক্যাম্পের সংখ্যা কমাতে হবে।
নির্বাচনী ব্যয়ের সীমারেখা নির্ধারিত করার পাশাপাশি তা সঠিকভাবে মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সীমা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে; নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাবও করেছে গণফ্রন্ট।
স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তি, বিদেশী নাগরিক, এনজিও প্রধান ও দুর্নীতির অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত এমন ব্যক্তির নেতৃত্বে কোনো দল যাতে নিবন্ধিত হতে না পারে এবং দলীয় প্রধান না থাকতে পারেন সে ব্যাপারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে; নির্বাচনে প্রয়োজনবোধে সেনা সদস্য মোতায়েন করতেই হবে; কোনো অবস্থাতেই ঋণ কর ও বিল খেলাপিকে নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া যুক্তিযুক্ত হবে না।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদেরকে রিটার্নিং অফিসার করলে অপেক্ষাকৃত ভাল ফল পাওয়া যাবে বলে মনে করে দলটি। নির্বাচনে অনিয়ম হলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার হাতে ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা দিতে হবে বলেও তারা উল্লেখ করে।
বর্তমান সরকারকে সংবিধান সংশোধন করে হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, অরাজনৈতিক সরকার নয়, একটি নির্বাচনকালীন রাজনৈতিক সরকার অবশ্যই গঠন করতে হবে; নির্বাচন কমিশন একটি সার্কুলার জারি করতে পারে; যাতে অ-নিবন্ধিত দল নিবন্ধিত দলের সাথে জোট করতে না পারে; নির্বাচনের অন্তত ছয়মাস আগে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের দলীয় প্রধানের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সরকার এবং বিরোধী দলের সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। অন্যান্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের জন্যও বিমান-রেলওয়ের টিকিট, হাসপাতালের কেবিন, কারাগারের ডিভিশন পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের বিষয়টি বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছে গণফ্রন্ট। নতুন প্রযুক্তি দেশবাসীর নিকট সম্পূর্ণ বোধগম্য হওয়ার আগে পরীক্ষামূলকভাবে স্বল্প পরিসরে ইভিএম চালু করা যেতে পারে বলেও দলটি মনে করে।
সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, চার নির্বাচন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণফ্রন্টের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২২
ইইউডি/এমজে