ঢাকা: ডিগবাজী না খেয়ে সর্বশক্তি দিয়ে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) নির্বাচন ভবনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র সঙ্গে সংলাপে বসে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে তারা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। এ সময় অতীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন ও সে সময়কার সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলেন তিনি। বিভিন্ন কারণে ভোটের ফল ব্যাহত হওয়া, হা-না ভোট, ব্যালট ছিঁড়ে সিল দেওয়া, সামরিক শাসনের সময়কার নির্বাচনের ব্যাপারেও তিনি উল্লেখ করেন।
ইভিএম’র সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, এতে লাঠি বা হকিস্টিক দিয়ে ভেঙে ফেললেও ভোট নষ্ট হবে না।
কেন্দ্র দখল ও ভোটার প্রতি পাঁচশ ভোট পড়লে এর হার বেড়ে যাওয়া সম্পর্কেও আলোচনা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে, এসবের সমাধান করে অর্থবহ ও নিরপেক্ষ এবং দুর্নীতি মুক্ত নির্বাচন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের ওপর আস্থা রাখেন। কিন্তু চোখ বন্ধ রাখলে হবে না। নজদারিতে রাখতে হবে, যে আমরা কি আসলেই সাধু, নাকি ভেতরে ভেতরে অসাধু। সেটা যদি আপনারা নজর না রাখেন, তবে আপনাদের দায়িত্ব পালন হবে না।
এ সময় সংলাপে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অর্থ শক্তিকে কীভাবে সামাল দেবো, একটা বুদ্ধি দেন। এই অর্থ নিয়ন্ত্রণ করবো কীভাবে? কাগজে-কলমে পাঁচ লাখ টাকা করা হলেও যদি প্রকৃত খরচ পাঁচ কোটি টাকা হয় কীভাবে আমি আপনাকে ধরবো? আপনি আমাকে কীভাবে ধরবেন? এটা সম্ভব, এজন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সিইসি আরও বলেন, আমাদের চর্চাটা অপসংস্কৃতি হয়ে গেছে। পয়সা ঢালছে, মাস্তান ভাড়া করছে। একজন প্রফেশনাল কিলারকে হায়ার করতে খুব বেশি পয়সা লাগে না, আজকাল যেটা হয়েছে। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সকলকে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে। মাঠ আপনাদের থাকতে হবে। আমাদের তথ্য দিলে আমরা আপনাদের সাহায্য করবো। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এই প্রতিশ্রুতির কিছু মূল্য থাকা উচিত। একেবারে যে আমরা ডিগবাজী খেয়ে যাবো তা তো না। সেটা হওয়ার কথা নয়।
তিনি বলেন, নির্বাচন নির্বাচনের আইন অনুযায়ী হবে। সময় মতো হবে। ভোটাররা যাবেন, ভোট দিতে যাবেন। আমরা আমাদের দায়িত্ব সর্বশক্তি দিয়ে পালন করার চেষ্টা করবো। আপনারাও কিছু দায়িত্ব নেবেন। অর্থ শক্তি, পেশি শক্তি মোকাবিলা ও ভোটকেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য বেশি দায়িত্ব নেবেন। আমরা শেয়ার করবো দায়িত্বটা।
সমালোচনা, অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব নিয়েও আলোচনা করেন সিইসি। জানান, এসব দূরে রেখে দায়িত্ব পালন করতে চান। কমিশনের পক্ষে থেকে এ ব্যাপারে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন। অনাস্থা দূর করতে সকলের সহযোগিতাও কামনা করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সংলাপে অংশ নিয়ে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা প্রতিহত করতে কমিশনের আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।
সংলাপে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২২
ইইউডি/এমজে