ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজনৈতিক দায়িত্ব আমাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। আপনাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব আপনাদেরই পালন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ এর সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, অসম্ভব সুন্দর একটি প্রস্তাব সংখ্যানুপাতিক আসন সংখ্যা বন্টন। আপনারা এসব নিয়ে কথা বলছেন না কেন। আপনারা সব কিছু কমিশনের ব্যক্তিদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। সিস্টেম যদি আপনারা প্রয়োগ করতে পারেন, তাহলে আমাদের কাজই করা লাগবে না। আপনারা ওই গবেষণাটা করেন, আমাদের যে চলমান পদ্ধতি, পদ্ধতিটাতে যদি কোনো পরিবর্তন আনতে পারেন। যেটা আপনারা বলছেন, আরও দু’তিনটা দল থেকে এটা আসছে।
তিনি বলেন, এতে আমি খুব আকৃষ্ট হয়েছি। তাহলে আমার যে সুবিধাটা হবে, আমার না, আমার পরের প্রজন্মে যে নির্বাচন কমিশন আসবে, তাদের এতোটা পরিশ্রম করতে হবে না। যদি প্রপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন হয়, সংকুচিত হয়ে যাবে-একটি হলো পেশিশক্তি, আরেকটি হলো অর্থশক্তি। আপনারা আপনাদের মঞ্চে কথা বলেন না কেন?
সিইসি বলেন, ভোটের হারের ভিত্তিতে আসন সংখ্যা বন্টনের ব্যবস্থাটা নিয়ে রাজনীতিবিদরা গবেষণা করে দেখবেন এটা আমাদের দেশের জন্য উপযোগী কিনা, আমাদের দেশের মানুষের সেন্টিমেন্টের সঙ্গে উপযোগী কিনা, সেটা আপনারা দেখবেন। এটা আপনাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব। আর আপনাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব আমাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। আমাদের সমর্থন হয়তো থাকবে। কিন্তু আপনাদের উপলব্ধি করতে হবে। আমি চাই আপনারা আরও সরব ভূমিকা পালন করেন। আপনাদের ভূমিকা নিয়ে আমার সংশয় আছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় সরকার থাকবে। তার সহায়তা আমার লাগবে। নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে যদি রাজনৈতিক সুস্থতা কিছুটা ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলে সেটা আমার মনে হয় আপনাদের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের পক্ষ থেকে একটা বড় অর্জন হতে পারে। আপনারা আমাদের সঙ্গে কেবল না, আপনারা নিজেরাও আলোচনা করেন। আমরা বারবার শুনছি। কিন্তু একটা সিস্টেম দাঁড় করিয়ে দেন, যেখানে সিস্টেম নিশ্চিত করবে সঠিক নির্বাচন।
সিইসি আরও বলেন, বাস্তবতাকে উপেক্ষা করা যায় না। সিস্টেম যদি নির্মোহভাবে কাজ করে, সেটাকে গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। আমরা বিশ্বাস করি জাতীয় সংসদকে কার্যকর হতে হবে। সেই দিক থেকে আমাদের জনপ্রতিনিধিত্বমূলক তো হতে হবে, ভারসাম্যপূর্ণ যতটা হতে পারে, সেটা কাঙ্খিত।
সশস্ত্র বাহিনীসহ তিন সদস্যের রিটার্নিং কর্মকর্তার প্যানেল করার প্রস্তাবটি নতুন। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর উপস্থিতি যদি রাখার বিধান থাকে, আমরা যদি রাখতে পারি, সেটা নির্বাচনের স্বার্থে কল্যাণকর হবে।
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, প্রতিটা সংলাপে শুধু প্রত্যাশা আমাদের ওপর। দায়-দায়িত্ব সব আমাদের। আমরাই কেবল সমালোচিত হচ্ছি। সবাই যদি যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি সততার সঙ্গে, তাহলে এতো সমস্যা থাকে না। আমরা অবশ্যই সমালোচনার ঊর্ধ্বে না। সবার কাছ থেকে আমরা সহায়তাও পাবো না। কিন্তু আমাদের তো ভয়েস রেজ করার জায়গা নেই। ভয়েস রেজ করার জায়গা আপনাদের আছে। আপনাদেরই ভয়েস রেজ করতে হবে।
সংলাপে দলের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানির নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
ইইউডি/আরআইএস