ঢাকা: আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হিসেবে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, এক্ষেত্রে যদি সরকারি প্রতিষ্ঠান না থাকে তবেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনায় নিতে হবে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রার্থীর ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত থাকলে সেই প্রতিষ্ঠানেও ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না।
ইসি সচিব মো. আব্দুল হালিম সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নির্দেশনাটি মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন। যার অনুলিপি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে সব জেলা প্রশাসক ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদেরও দেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে- ভোটকেন্দ্রের তালিকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে তৈরি করবেন এবং ভোটগ্রহণের তারিখের ১৫ (পনের) দিন আগেই যাতে ইসির অনুমোদন নেওয়া যায় সেটি বিবেচনায় রেখে ভোটগ্রহণের যথেষ্ঠ সময় আগে ইসি সচিবালয়ে পাঠাতে হবে। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় মনিটরিং করবেন এবং উক্ত কার্যাদি যথাযথভাবে সম্পাদন হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হবেন।
এছাড়া জেলা পরিষদের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র স্থাপন, কেবল বাস্তবতার নিরিখে প্রয়োজন অনুযায়ী একাধিক কেন্দ্র স্থাপন, সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ, জনগণের জন্য উন্মুক্ত নয় যেমন-কবরস্থান, হাটবাজার এমন স্থানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন না করা, কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন স্থানে কোনো অবস্থাতেই ভোটকেন্দ্র স্থাপন না করা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, দূরত্ব এবং ভোটারদের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করে যতদূর সম্ভব মধ্যবর্তী স্থানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা কথাও বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
অন্যদিকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুরুষদের জন্য একটি এবং নারীদের জন্য একটি করে ভোটকক্ষ স্থাপন, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে কমিশনের ইমেজের প্রতি লক্ষ্য রাখা, ভোটকেন্দ্রের স্থান নির্ধারণে কোনো আপত্তি থাকলে যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া কথাও বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
তফসিল অনুযায়ী, ৬১ জেলা পরিষদ (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের সময় ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি ২২ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর। আর ভোটগ্রহণ করা হবে ১৭ অক্টোবর।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা জানিয়েছে, চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১৬২ জন, বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থী ১৪২ জন। সাধারণ সদস্য পদে ১ হাজার ৯৮৩ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন, তাদের মধ্যে বৈধতা পেয়েছেন ১ হাজার ৭৪২ জন। আর সংরক্ষিত সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৭১৫ জন, যাদের মধ্যে বৈধতা পেয়েছেন ৬৭৩ জন। আর চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন ২২ জেলায় ২২ জন।
চেয়ারম্যার পদে একজন করে প্রার্থী রয়েছে, এমন জেলাগুলো হলো- কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, গোপালগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝালকাঠি, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, ফেনী, বরগুনা, বাগেরহাট, ভোলা, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, লক্ষ্মীপুর, লালমনিরহাট, শরিয়তপুর, সিরাজগঞ্জ ও সিলেট।
এছাড়া নরসিংদী ও নারয়ণগঞ্জে একজন করে সাধারণ সদস্যও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন। নির্বাচনের আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারদের। রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাইয়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধরা আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়া শেষে কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা একক প্রার্থীদের বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২
ইইউডি/এমএমজেড