সিলেট: জেলা পরিষদ নির্বাচনে হবিগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বাছাইয়ে ঝরে পড়েন স্বতন্ত্র প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী শাহীন আহমেদ।
তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দলের জাতীয় পরিষদের সদস্য, জেলার সাবেক সভাপতি ও প্রশাসক, স্বাচিপ ও বিএমএ’র সভাপতি ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরী। তার সঙ্গে ভোট যুদ্ধে লড়বেন জাতীয় পার্টির নেতা অ্যাডভোকেট মোল্লা আবু নঈম মো. শিবলী খায়ের ও আইনজীবী মো. নুরুল হক।
নির্বাচনে কমিশনে দাখিলকৃত হলফনামা নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত ও সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন তারা। তাঁদের তিন জনই শিক্ষিত। তবে অর্থ সম্পদে ধনাঢ্য, কোটিপতি ডা. মুশফিকের হবিগঞ্জ ছাড়িয়ে রাজধানীতেও রয়েছে সহায় সম্পত্তি।
হলফনামায় দেওয়া তথ্যানুযায়ী ডা. মুশফিকের নগদ অর্থ সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৫৪ টাকা। আর প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী অর্থ-সম্পদ মিলিয়ে লাখপতির কোঠায় তারা। তাদের মধ্যে মোল্লা আবু নঈম মো. শিবলী খায়ের যৌথ সম্পদ ব্যতিরেকে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার মালিক। এছাড়া অপর প্রার্থী মো. নুরুল হকের আসবাবপত্র, স্বর্ণসহ অর্থ সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছে ২১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, শিক্ষায়, অর্থ সম্পদে বলিয়ান আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক প্রশাসক ডা. মো. মুশফিক হোসেন চৌধুরী। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিবিএস, ব্যবসায় প্রাইভেট প্রেক্টিশনার চিকিৎসক মুশফিকের নামে একটি ফৌজদারি মামলা চলছে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে।
তিনি বছরে আয়ের উৎস দেখিয়েছেন কৃষিখাতে ২৫ হাজার টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান ভাড়া থেকে ১২ লাখ ৯৬ হাজার ২০০ টাকা, ব্যবসা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ব্যাংকে আমানত আছে ২ লাখ ২৩ হাজার ২০০ টাকা, পেশা থেকে (পরামর্শ বাবদ) আয় ৫৫ হাজার ৪৬১ টাকা, ফার্মের আয় ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৩০ টাকা, সম্মানী ভাতা বাবদ ৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, অন্যান্য খাতে আয় দেখিয়েছেন ৪ লাখ ৯০ হাজার ৫৭৫ টাকা।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ দেখিয়েছেন ৩ লাখ ১০ হাজার ১৫৩ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকার পরিমাণ ৪৪ লাখ ১৪ হাজার ২৩৫ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত ৫০ লাখ টাকা, গাড়ি আছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের, তবে সংখ্যা উল্লেখ করেননি। স্বর্ণালঙ্কার নিজ নামে ২০ ভরি, তবে দাম উল্লেখ করেননি। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র দেখিয়েছেন ২ লাখ টাকার। ডিপিএস আছে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৭ টাকার।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে ডা. মুশফিকের ৯ একর কৃষি জমি রয়েছে, একটি চারতলা দালান, রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনে ছয়তলা ভবন। তবে ব্যাংকে কোনো দায়-দেনা নেই। এছাড়া হলফনামায় নির্ভরশীলদের ওপর আয় ও স্ত্রীর নামে কোনো সম্পদ দেখাননি তিনি।
পেশায় আইনজীবী মোল্লা আবু নঈম মো. শিবলী খায়ের’র শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তিনি আয়ের উৎস দেখিয়েছেন আইন পেশা থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ দেখিয়েছেন ৫০ হাজার ও ব্যাংকে জমা ১লাখ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে ৪ লাখ এবং স্ত্রীর নামে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্বর্ণ ১০ ভতি দেখালেও দাম উল্লেখ করেননি। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্রের নাম-সংখ্যা উল্লেখ করলেও মূল্য দেখাননি। তার স্থাবর সম্পাদের মধ্যে যৌথ মালিকানায় ১৪ শতকের বসতবাড়ির ১১ ভাগের ২ অংশের মালিক এই প্রার্থী। তার ব্যাংকে দায়-দেনা নেই।
অপর প্রার্থী মো. নুরুল হক শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ, এলএলবি। পেশায় আইনজীবী এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। ব্যবসা থেকে নিজের আয় দেখিয়েছেন ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ (ব্যবসার পুঁজি) ১৬ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণের ক্রয়কালীন মূল্য দেখান ৮০ হাজার টাকা, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র দেখিয়েছেন ১ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে যৌথ মালিকানায় রয়েছে কৃষি,অকৃষি ও দোকান কোঠা। তবে ব্যাংকে কোনো দায়-দেনা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২
এনইউ/এএটি