ঢাকা: সরকারের আন্তরিক সদিচ্ছা ও সহায়তা যদি না থাকে তাহলে নির্বাচনটাকে একটা কাঙিক্ষত মাত্রায় সফল করা হয়তো সম্ভব হবে না। এছাড়া দলগুলো নিজেরা যদি ভারসাম্য তৈরি না করে তাহলে পুলিশ, মিলিটারি দিয়ে সব সময় নির্বাচন সুষ্ঠু এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে, আস্থাভাজনভাবে উঠিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এ কথা বলেন।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, তিন জন সিনিয়র নেতা কয়েকদিন আগেও বলেছেন আমি নাম বলবো না, বড় দলের, ওনারা বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ডায়লগ অপরিহার্য। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি মোটাদাগে কিছু মতৈক্য না থাকে, নির্বাচন কমিশন একটা সুন্দর নির্বাচন তুলে দিতে পারবে না। অবশ্যই দলগুলোর সহায়তা লাগবে, একটা সমঝোতা লাগবে এবং সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে হবে। এবং পদ্ধতিটা স্বচ্ছ হবে তাহলেই নির্বাচনটা গ্রহণযোগ্য হবে।
আইন সংস্কারের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সাড়া না দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো সাড়া আসেনি। কিন্তু আসবে না সেটা বলছি না। আমরা একটু অপেক্ষা করি। পাঠিয়েছি, আমার বিশ্বাস সরকার সেটা পরীক্ষা নিরিক্ষা করবে। করে যেটা যৌক্তিক, আমার মনে হয় না সরকার সেটা অগ্রাহ্য করবে। আমরা আরও কিছু দিন দেখি। তারপর সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ফের ডায়গলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। ডায়লগ যত করা যায় ভালো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিদ্যমান ব্যবস্থায় সরকার, আওয়ামী লীগ নয়। সরকারের একটা ভিন্ন সত্তা আছে। তার যে মিনিস্ট্রিগুলো আছে, ডিপার্টমেন্টগুলো আছে, যাদের আমাদেরকে সহায়তা করতে হবে, তাদের দিক থেকে যদি আন্তরিক সদিচ্ছা ও সহায়তা না থাকে তাহলে নির্বাচনটাকে একটা কাঙিক্ষত মাত্রায় সফল করা হয়তো সম্ভব হবে না। তাদের সহযোগিতা যদি থাকে নির্বাচনটা আরও সুন্দর ও সফল হবে। যার ফলে রাজনৈতিক নেতারা বলেছেন ডায়লগ খুব প্রয়োজন। আমরা যেটা দেখছি দলগুলোর মধ্যে ডায়লগ হচ্ছে না। এটা হওয়া খুব প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে আমরা সহায়তা প্রত্যাশা করি।
সিইসি বলেন, আমাদের এই বক্তব্যগুলো যদি গণমাধ্যমের মাধ্যমে ওনাদের কাছে যায়, ওনাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আছে ওনারাও একটু চিন্তা করবেন। রাজপথে শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সুন্দর নির্বাচন হবে এটা বিশ্বাস করি না। এখন সব দলই বলতে চাচ্ছে, রাজপথে দেখা হবে, রাজপথে শক্তি পরীক্ষা হবে। সিইসি হিসেবে আমি বলবো রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করে রাজপথে শক্তি দেখিয়ে সত্যিকারের যে গণতান্ত্রিক নির্বাচন সেটা হবে না।
দলগুলোর উদ্দেশ্য কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আপনাদের নির্বাচনে আসতে হবে। নির্বাচনের মাঠে নীতি, বিধি অনুসারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। আমি যেটার ওপর জোর দেবো সেটা হচ্ছে নির্বাচনে কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ পুলিশ দিয়ে কিন্তু আমি ব্যালেন্স তৈরি করবো না। ব্যালেন্স তৈরি হবে কিন্তু দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে।
এ সময় তিনি নেপালের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন। সিইসি বলেন, ওদের ওখানে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা আছে। এছাড়া ওরা খোলা জায়গায় ব্যালটে সিল মারার ব্যবস্থা রেখেছে। ওরাও আগে গোপন কক্ষেই করতো। কিন্তু আমি জিজ্ঞাসা করায় জানালো যে স্বচ্ছতার জন্য ও অবিশ্বাস দূর করতে তারা এই ব্যবস্থা এনেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
ইইউডি/এসআইএস