বরিশাল: বরিশাল সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র প্রার্থীরা। জুমার দিনেও তারা নিজ নিজ প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
নগরের চকবাজারের জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)। নামাজের আগে-পরে তার কর্মী-সমর্থকরা গণসংযোগ করেছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন খোকন। এ সময় তিনি নির্বাচিত হলে নগরের উন্নয়ন করবেন বলে ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শুক্রবার সকালে সকালে বরিশাল নগরের সাগরদী এলাকায় গণসংযোগ করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। এরপর তিনি নগরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল সড়কস্থ আল আকসা জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। এ সময় তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করে দোয়া ও ভোট চান। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে।
নগরের নথুল্লাবাদস্থ সিদ্দিকিয়া জামে মসজিদে জুমার নামাজে অংশ নেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সৈয়দ ফায়জুল করীম। পরে তিনি রূপাতলী এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইছাকাঠী কলোনি জামে মসজিদে জুমা আদায় করেন জাকের পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু। নামাজের পর সেখান থেকেই তিনি গণসংযোগ করেন।
টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসানও গণসংযোগ করেছেন রূপাতলী এলাকায়। তিনি রুপাতলী হাউজিং বড় মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। এসময় তিনি বিএনপির ভোটের পাশাপাশি যুব শ্রেণির ভোট পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান নগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রাজ্জাক স্মৃতি কলোনির বালুরমাঠ জামে মসজিদে জুমা আদায় শেষে গণসংযোগ করেন।
এর আগে তিনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীমের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুরে তিনি বরিশাল সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে তিনি লেখেন, হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীমের নির্বাচনী শতাধিক প্রচার মাইকে গান বাজিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে প্রচার অভিযান পরিচালনা করছে। যেটা মেয়র প্রার্থী হিসেবে তিনি মনে করেন ভোটারদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করছে এবং যা তার নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করছে। যে কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হন বলেও উল্লেখ করেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি তিনটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সংক্রান্ত বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। যা হলো ‘এবার যেখানে সেখানে ভোট দিবেন না ভাই’, ‘হাতপাখায় ভোট দিলে আল্লাহ রসুল পায়’ ও ‘হাতপাখায় ভোট দিলে ভাই আল্লাহ খুশি হয়, রসুল খুশি হয়’ ইত্যাদি প্রচার করছেন। এসব থেকে ফয়জুল করীমকে বিরত রাখতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলেন আসাদুজ্জামান।
এ ব্যাপারে ফয়জুল করীম বলেন, আমি নিজেই একজন ধর্মীয় লোক, আমার দাড়ি-টুপি, পোশাক, কলেমা, নামাজ, আচরণ, কৃষ্টিকালচার সবই ধর্মীয়। যারা ধর্ম পালন করে না তার তো আমাকে ধর্মীয় হিসেবেই দেখবে। কিন্তু আমি তাদের বলছি নির্দিষ্ট করে বলতে হবে সেই ধর্মীয় উস্কানিটা কি দিয়েছি। আমি খ্রিষ্টান, হিন্দুসহ সবার কাছে গিয়েছি। হিন্দুরা আমার জন্য কাজও করছে, আমি যদি ধর্মীয় উস্কানি দিতাম তাহলে তারা আমার জন্য কেন কাজ করবে? বরং আমরা ধর্মীয় সহবস্থান সৃষ্টি করতে চাই এবং ধর্মীয় সহবস্থান সৃষ্টি করতে পারবো এই বিশ্বাস আছে বলেই তারা আমার পক্ষে কাজ করছে। আসলে ব্যাপারটা হলো হাতপাখার গণজোয়ার দেখে তারা ঈর্ষান্বিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৩
এমএস/এমজে