সাতক্ষীরা: বিদ্রোহী প্রার্থী দমনে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হলে সাফল্য যেতে পারে বিএনপির ঘরে।
সে ক্ষেত্রে সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কারান্তরীণ আক্তারুল ইসলামের বিজয় ঠেকানো মুশকিল হতে পারে অন্যান্য প্রার্থীদের জন্য।
৩০ ডিসেম্বর সারা দেশে অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে এমনটাই ভাবছেন সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌর এলাকার বাসিন্দারা।
কলারোয়া পৌর এলাকার একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, কলারোয়ায় যেমন আওয়ামী লীগের সমর্থক রয়েছে, তেমনি বিএনপির সমর্থকও কম নয়। বিগত দিনে এখানে সংসদ সদস্য নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী যেমন বিজয়ী হয়েছেন, তেমনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীও বিজয়ী হয়েছেন।
সে সূত্র ধরেই কলারোয়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আক্তারুল ইসলাম। তবে, এবার যে তার বিপরীত ফলাফল আসতে পারে না তা নয়, কিন্তু সেক্ষেত্রে ফ্যাক্টর হতে পারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।
কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ১৮ হাজার ৫শ ২৫ জন ভোটার কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন, কাউন্সিলর পদে ২৮ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ছয়জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে মেয়র পদে উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ইমান আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
অন্যান্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আক্তারুল ইসলাম ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মুনসুর আলী নিজ নিজ দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আরাফাত হোসেন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
স্থানীয় নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, উপজেলা জামায়াতের আমির ইমান আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় কিছুটা সুবিধা পাবেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র আক্তারুল ইসলাম। এক্ষেত্রে জামায়াতের ভোট ধানের শীষে পড়তে পারে। আর বিএনপি নেতাকর্মীরাও ধানের শীষকে বিজয়ী করতে একাট্টা। যদিও কারাগারে থাকায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না মেয়র প্রার্থী আক্তারুল ইসলাম।
এদিকে, প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু।
তবে, শেষ পর্যন্ত যদি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আরাফাত হোসেন নির্বাচনের মাঠে থেকে যান- তাহলে আওয়ামী লীগের ভোট দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে। এতে ফলাফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তার দলের নেতাকর্মীরাই।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মুনসুর আলীও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রচারণার মধ্য দিয়ে।
সাধারণ ভোটাররা সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করতে চান।
কলারোয়া পৌর এলাকার বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কলারোয়া দ্বিতীয় শ্রেণির পৌরসভা। তবে, এখানকার নাগরিক সুযোগ-সুবিধার মান আরও কম। যে প্রার্থী সেবার মান বাড়াতে পারবেন ভোট তাকেই দেবো।
একই ভাবে আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কলারোয়া পৌরসভায় এবার দ্বিতীয়বারের মতো ভোট হচ্ছে। পৌর এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নে এখনো বহুদূর যেতে হবে। উন্নয়ন কাজে সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজন। যে প্রার্থী এই নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য, ভোট তাকেই দেবো।
এ ব্যাপারে কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম লাল্টু বাংলানিউজকে বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ হতে বলা হচ্ছে। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
কলারোয়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে বিএনপির ধানের শীষ বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়যুক্ত হবে।
বিএনপির প্রার্থী সাবেক মেয়র আক্তারুল ইসলামকে মামলায় জড়িয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। এতে তার প্রতি পৌরবাসীর ভালবাসা আরো বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন কলারোয়া পৌরসভার বহিষ্কৃত মেয়র আক্তারুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫
এসআই