ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

নওয়াপাড়া থেকে মাহমুদ মেনন

ভোট যত বেশি, নির্বাচন তত সফল

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
ভোট যত বেশি, নির্বাচন তত সফল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নওয়াপাড়া (যশোর) থেকে: নওয়াপাড়া পৌরসভায় ৫৫ হাজার ভোটার। যশোর জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম পৌর এলাকা।

এখানে ভোট মানেই জমজমাট। শুধুই কি ভোটারের কারণে? না, নওয়াপাড়ায় আরও অনেক ইকুয়েশন রয়েছে। এখানে পয়সাওয়ালারা প্রার্থী। শিল্প-কারখানায় উন্নত এই বন্দর পৌরসভার মেয়র প্রার্থীরা তো বটেই, কাউন্সিলরদেরও ভোটে খরচের হাত বড়। তার সুফল (!) পাচ্ছেন ভোটের ক্যানভাসাররা। মিছিল বন্ধ, তাই গলা ফাটিয়ে স্লোগান দিতে হচ্ছে না, তবে মিটিংগুলোতে গেলেই পকেটে ঢুকছে দুই-চার-পাঁচশ'। কর্মী বুঝে একটু কম-বেশি।

তবে নওয়াপাড়ার ভোট যে জমজমাট, তা বুধবার বিকেলে শহরে ঢুকেই টের পাওয়া গেলা। রাস্তার মোড়ে মোড়ে মাইকিং চলছে। ইজিবাইককে এর সবচেয়ে ইজি পদ্ধতি হিসেবেই বুঝি বেছে নিয়েছেন প্রার্থীরা। এক পক্ষের মাইকিং একদিক থেকে যাচ্ছে তো উল্টোদিক থেকে আসছে অন্য প্রার্থীর মাইকিংয়ের গাড়ি। দিনে দুই-তিন হাজারে এসব গাড়ি ভাড়া হয়েছে। তৈরি হয়েছে মাইকিংয়ের ক্যাসেট। ইজিবাইকের ওপর বড় বড় হর্ন-মাইক লাগিয়ে শহরময় চষে বেড়াচ্ছে এসব ক্যানভাসের গাড়ি। সব মিলিয়ে নওয়াপাড়া এখন ভোটের শহর।

চাখানায় আর আড্ডার সাধারণ জায়গাগুলোতে ভরদুপুরেও ভোট এসেছে, ভোট এসেছে আমেজ। আর বিকেল যতই ঘনিয়ে এসেছে, এসব স্থানে ভিড় বাড়ছেই।

যারা দিনে নিজের নিয়মিত কামাইটা নিশ্চিত করে ভোটের মওসুমে একটু বাড়তি কামাই করতে চান, তারাই বিকেল নাগাদ আসতে শুরু করেছেন। এরা ভোটের কর্মী।

মেয়র প্রার্থীদের একজনের সঙ্গে বাংলানিউজের কথা হলো তার কার্যালয়ে। বললেন, টাকা পয়সার ছড়াছড়ি বলে যে কথা ছড়াচ্ছে তা ঠিক নয়। তবে যে কর্মী সারাদিন এখানে-সেখানে পোস্টার লিফলেট বিলি করলো, তাকে তো দুই-পাঁচশ' টাকা দিতেই হয়। দুপুরের খাবারেই তো এক-দেড়শ' টাকা লেগে যায়।

নির্বাচনের জন্য এখন আর কর্মী পাওয়া মুশকিল। কারণ অনেকেই কাজ করেন। তরুণরাও বেকার পড়ে নেই। আর শিল্প-কারখানার শহর হওয়াতে নওয়াপাড়ার অবস্থা আরও ভালো। সে কারণে ভোটের কর্মী পাওয়া অনেকটাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে।

একই ধরনের কথা শোনা গেলো নওয়াপাড়ার ব্যস্ত ব্যবসায়ী পাড়ার এক চায়ের দোকানির কণ্ঠেও। বললেন, নির্বাচনের কর্মী হওয়ার চেয়ে অনেকেই নিজের কাজ করতে চায়। আয় রোজগার ভালো বলেই এমনটা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
Naoapara_6
নওয়াপাড়ায় বেকার যুবক-তরুণ অপেক্ষাকৃত কম।

তবে এতকিছুর পরেও সাধারণের মাঝে ভোট নিয়ে উৎসাহ রয়েছে। ভোট ৭৫ শতাংশের বেশি কাস্ট হবে বলেই মনে করছেন একজন মেয়র প্রার্থী। তার মতে, কাউন্সিলরদের কারণেই ভোটাররা বেশি হারে ভোট কেন্দ্রে আসবে।

সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে যে উৎসাহ তাকেই বড় করে দেখছেন প্রার্থীরা। আর ভোটার যত বেশি ভোট দিতে আসবেন, নির্বাচনও তত বেশি সফল হবে, মত তাদের।

ভোটার বেশি ভোট দিতে গেলে, প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, বলেও মনে করেন তারা।
Naoapara_1
অন্য পৌরসভার মতো নওয়াপাড়ায়ও ৯টি ওয়ার্ড। এতে মেয়র প্রার্থী রয়েছেন তিন জন। ৯টি পদের জন্য লড়াইয়ে শামিল ৪৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী আর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের তিনটি পদের জন্য লড়াইয়ে নেমেছেন ৭ জন।

মেয়র প্রার্থীদের একজন আওয়ামী লীগ সমর্থিত, একজন বিএনপি সমর্থিত আর অন্যজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী। লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র নৌকা ও ধানের শীষ মার্কার মধ্যেই।

নির্বাচনে যারা ভোটার তারা মনে করছেন, এখনই চূড়ান্ত করে কিছু বলা যায় না, কোন পক্ষে ভোটের পাল্লা ভারি হবে। মেয়র প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা পুরোই প্রস্তুত ও আশাবাদী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এইচএ/এমএমকে/


** দলীয় প্রতীক এখানে আশীর্বাদ
** মানবিক গুণের প্রার্থী হলে বেশি ভোট
** প্রতীক দেখে সিল দেবে, মিছিল ভোটের ঐতিহ্য
** আউশের চিড়া ও তার কারিগরের গল্প
** প্ল্যাটফর্মে বস্তা-বস্তা ডাক, ডিজিটালে চাপ কমছে
** সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিলম্বের কথা জানতেও দেড় ঘণ্টা বিলম্ব

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।