ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

‘সুইজারল্যান্ড বলে বুড়িগঙ্গার তীরে শুটিং, আমি দুঃখ পাই’

নাজমুল আহসান তালুকদার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
‘সুইজারল্যান্ড বলে বুড়িগঙ্গার তীরে শুটিং, আমি দুঃখ পাই’ সাইমন সাদিক

‘সুইজারল্যান্ড বলে শুটিং হয় বুড়িগঙ্গার তীরে, আমি দুঃখ পাই। সবকিছু মেনে নিয়ে যতো কাজ করছি মেক্সিমাম ক্ষেত্রে হাহাকার আর হাহাকার।

কষ্ট নিয়েই কাজ করি। ’

সম্প্রতি একটি শুটিং সেটে আলাপকালে এভাবেই আক্ষেপ প্রকাশ করলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা সাইমন সাদিক।  

প্রচারণার অভাবেই অনেক ভালো সিনেমা মুখ থুবরে পড়ে বলেই মনে করেন এই অভিনেতা। নিজের সিনেমা ‘লাইভ’র উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমি যদি এভাবেই বলি- আমারো একটি সিনেমা ছিল যেটা হয়তো ভালো পর্যায়ে যেতে পারতো। সেটি হচ্ছে শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ‘লাইভ’। সিনেমাটি নিয়ে আমি ব্যাপক আশাবাদী ছিলাম। দর্শকদের জানানোর জন্য যে প্রচারণার প্রয়োজন সেই জায়গায় প্রযোজনা সংস্থা ফেল করলেন। যাতে দর্শকরা সিনেমার ব্যাপারে জানতেই পারলেন না। এই কারণেই অনেক ভালো কাজও দর্শক পর্যন্ত পৌঁছায় না।  

‘পরাণ’, ‘হাওয়া’ এই সময়ের দর্শক সমাদৃত সিনেমা। এ প্রসঙ্গে সাইমন সাদিক বলেন, যে সিনেমাগুলো দর্শক পর্যন্ত পৌঁছেছে অবশ্যই ভালো সিনেমা, দর্শক সমাদৃত সিনেমা। এর মধ্যে রয়েছে- ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’, ‘দিন-দ্যা ডে’, ‘শান’। সিনেমাগুলো দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাগিদ তাদের প্রযোজনা সংস্থার ছিল। এই তাগিদ সব প্রযোজনা সংস্থা বহন করে না। আর এ কারণে অনেক ভালো সিনেমা হারিয়ে যায়।  

যোগ করে ‘পোড়ামন’খ্যাত এই নায়ক বলেন, যারা আমার ‘লাইভ’ সিনেমা দেখেছেন তারা বলতে পারবে। এটা নিয়েও যদি প্রযোজনা সংস্থার প্রচারের তাগিদ থাকতো তাহলে সবার মাঝে মনে হয় পৌঁছে যেত।

তিনি আরো বলেন, কেন জানি আমরা শুটিং পর্যন্ত ক্লান্ত হয়ে যাই। যেটা ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’ টিম হয়নি, এখন পর্যন্ত তারা প্রচার করে যাচ্ছে। এই মানসিক শক্তি, অর্থনৈতিক শক্তি এবং শৈল্পিক শক্তি সব প্রযোজকের থাকে না। আমার মনে হয়, এই কারণে বছরে ১০-১৫ টি সিনেমা দর্শক গ্রহণ করেন না। এর একটি মাত্র কারণ সঠিক প্রচারণার অভাব।   

অনেকেই সিনেমার শুটিংয়ের আগে আলোচনায় আসতে নানা কল্প কথা বলে থাকেন। যা পরে ফাঁকা আওয়াজে পরিণত হয়। এ বিষয়ে সাইমন বলেন, আমরা অনেক সময় শুনি সিনেমাটির শুটিং হবে সুইজারল্যান্ড। কিন্তু সেই সিনেমার শুটিং হয় বুড়িগঙ্গার তীরে, আমি দুঃখ পাই। দুঃখ পাওয়া ছাড়া আমার করার কিছু থাকে না কারণ আমি প্রযোজক না।  

সংখ্যা না বাড়িয়ে ভালো কাজ করতে চান সাইমন। তিনি বলেন, আমি চাই বছরে একটা সিনেমা করতে। যে সিনেমাটা সাইমনকে নতুনভাবে পরিচয় করাবে। কিন্তু আমার প্রেক্ষাপট বা আমার ব্যাকগ্রাউন্ড সেটা আমাকে সাপোর্ট করে না।  
এসবের মধ্য দিয়ে আমাকেও কাজ করতে হয় এবং করছি। ভালোলাগা নিয়েই কাজ করছি।  

তিনি বলেন, সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো, এটা বজায় রাখতে হলেও আমি কিছু বলি না। এখন একটা সেট থেকে যদি ফিরে আসি সেটাও আমার জন্য ভালো লাগার হবে কি না! তখন বলবে, সাইমন শুটিং ফাঁসিয়ে চলে গেল! এটাও একজন শিল্পীর জায়গা থেকে করতে পারি না।  

তবে যেসব কাজ করছেন, মনের কোনে এক প্রকার কষ্ট পুষেই করছেন বলেই জানান সাইমন। তার ভাষ্য, সবকিছু মেনে নিয়ে যতো কাজ করছি মেক্সিমাম ক্ষেত্রে হাহাকার আর হাহাকার। কষ্ট নিয়েই কাজ করি। ভাবি- কেন আসলাম, কী ভেবে গেলাম, কেন হচ্ছে না। তবে আমি মনে করি- এই দায় আমার, কারণ কেন আমি না করতে পারলাম না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।