ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

নিরব-ঋদ্ধির না-বলা কথাগুলো

কামরুজ্জামান মিলু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫
নিরব-ঋদ্ধির না-বলা কথাগুলো ছবি:নূর /বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নায়ক হলে ফেসবুকে প্রতিদিন অ্যাড রিকোয়েস্ট আসতে থাকে। এর মধ্যে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি।

নিরবের কাছেও আসে। একদিন একটি মেয়ে অ্যাড পাঠালেন তাকে। মেয়েটির নাম তাসফিয়া তাহের ঋদ্ধি। তাকে নিরাশ হতে হয়নি। নিরব অ্যাড করে নিলেন ঋদ্ধিকে। ফেসবুকে হাই-হ্যালোর পর তাদের কথা হলো ফোনে। ও-প্রান্ত থেকে ভেসে আসা কণ্ঠ শুনেই জনপ্রিয় এই অভিনেতার মনে হলো, এমন একজনকেই যেন খুঁজছিলেন! সেই সঙ্গে বুঝলেন মেয়েটা অন্যদের চেয়ে আলাদা। এরপর দেখা করলেন দু’জনে। শুরু হলো আলাপচারিতা।  

 

নিরব ও ঋদ্ধির প্রেমের গল্পের শুরুটা এমনই। কিন্তু তখনও তারা জানতেন না, এটা ক্লাইমেক্স দৃশ্যেরও শুরু! কারণ ঋদ্ধিকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিলেন বাবা এমএ তাহের চৌধুরী ও মা মুর্শিদা আক্তার। তখন নিরবের অবস্থা কেমন ছিলো? ‘আমি কোনোভাবেই তাকে হারাতে চাইনি। কারণ ওকে পাগলের মতো ভালোবেসেছি। আর ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার জন্য আদালত পর্যন্ত যেতে হলেও পিছপা হবো না সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ’ 

এরপরের ঘটনা সবারই জানা। পরিকল্পনামাফিক সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে বিয়ে করে ঘর বাঁধলেন নিরব-ঋদ্ধি। সেটাও সিনেমার দৃশ্যের মতো। সেদিন একজনের সঙ্গে ঋদ্ধির আক্দ হওয়ার কথা ছিলো। এজন্য তাকে সাজাতে পারসোনার উত্তরা শাখায় নিয়ে গিয়েছিলেন খালারা। ঋদ্ধি বের হওয়ার সুযোগ খুঁজছিলেন। হঠাৎ খালারা একটু সরে যেতেই নিচে নেমে যান তিনি। নিরব আগে থেকে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। এরপর সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে কবুল বলে ফেলেন তারা। নিরব বললেন, ‘বিয়েটা হঠাৎ হলেও বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাক্ষী সবাই আমাদের জন্য দোয়া করেছেন। ’

 

মা-বাবার একমাত্র মেয়ে ঋদ্ধি। উত্তরার মাইলস্টোন কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিষয়ে ভর্তি হয়েছেন। পালিয়ে বিয়ে করার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এভাবে পালিয়ে বিয়ে করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। কারণ পেশায় চিকিৎসক একজনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেছিলেন আমার মা। তবে বিয়ের পর মা অনেকদিন কথা বলেননি। এ কারণে কষ্ট পেয়েছি। ’

বিয়ের পর ভয়-সংকোচ ভুলে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন নিরব। তখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না। ঋদ্ধি বললেন, ‘মায়ের কাছ থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছি। কারণ নিরব আমাদের বাসায় যাওয়ার পর মা আমার সঙ্গে কথা বলছিল না। বাবা বরং আমার ও নিরবের সঙ্গে স্বাভাবিক ছিলেন। ’ 

 

পালিয়ে বিয়ের পর মামলা, লুকিয়ে থাকা, জামিন নেওয়া, নিরবের গাড়ি আদালতে নিয়ে যাওয়া, মায়ের বিরূপ আচরণ সবই মেনে নিয়েছেন নিরব-ঋদ্ধি। এই তো জীবন! নিরবকে বেশ ধকল সইতে হলেও এখন সবই শিথিল।  

নিরবের ঘরে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন ঋদ্ধি। স্ত্রীকে তিনি খুব ভালো বুঝতে পারেন। এই গুণটাই ঋদ্ধিকে মুগ্ধ করেছে বেশি। বিয়ের পর কেমন পরিবর্তন এসেছে জীবনে? এ প্রশ্নের উত্তরে ঋদ্ধি বললেন, ‘বিয়ের আগে টুকটাক ঝগড়া হতো! কিন্তু বিয়ের পর আর তা হয়নি। ’

 

বিয়ের পর নবদম্পতি প্রথমবার ভালোবাসা দিবস উদযাপন করবেন। তাই দিনটিকে ঘিরে তাদের পরিকল্পনার কমতি নেই। নিরব বললেন, ‘ঋদ্ধি ও আমার জন্য এ দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই ওকে চমকে দেওয়ার মতো অনেক পরিকল্পনা করেছি। ’ 

এদিকে নিরব সব প্রতিক‚লতা কাটিয়ে আবার কাজে ফিরেছেন। চলতি বছরের মে মাস থেকে ঋদ্ধিও আবার ক্লাস শুরু করতে যাচ্ছেন। এর মধ্যে এক ফাঁকে মধুচন্দ্রিমা উদযাপন করতে দেশের বাইরে যেতে চান তারা। বাংলানিউজের পক্ষ থেকে তাদের নতুন জীবনের জন্য রইলো শুভকামনা ও অভিনন্দন। ভালোবাসার জয় হোক। বছরের পর বছর অটুট থাকুক তাদের বন্ধন, তাদের ভালোবাসায় গড়া সংসার।  

নিরব-ঋদ্ধির টুকিটাকি

পরিচয় : ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস

প্রথম ফোনে কথা : ১০ ফেব্রুয়ারি

প্রথম দেখা : ২১ ফেব্রুয়ারি, উত্তরা

বিয়ে : ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা 

নিরবের প্রিয় খাবার : মিষ্টি

ঋদ্ধির প্রিয় খাবার : মাশরুম 

বিয়ের পর ঋদ্ধির প্রথম রান্না : পাসতা এবং নুডুলস 

বাংলানিউজের জন্য পোশাক সৌজন্য : ইনফিনিটি 

 

বাংলাদেশ সময় : ১৫০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।