ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

মানসম্মত কাজ করলে স্বীকৃতি আসবেই: সামিয়া অথৈ

মো. জহিরুল ইসলাম মোহসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
মানসম্মত কাজ করলে স্বীকৃতি আসবেই: সামিয়া অথৈ সামিয়া অথৈ। ছবি: রাজীন চৌধুরী

২০১৬ সালে নাচভিত্তিক টেলিভিশন রিয়্যালিটি শো ‘সেরা নাচিয়ে’র মাধ্যমে পরিচিতি পান সামিয়া অথৈ। তবে নিজেকে শুধু নাচেই সীমাবদ্ধ রাখেননি তিনি, থিতু হয়েছেন অভিনয়ে।

নাটক থেকে সিনেমা, সবখানেই রয়েছে তার পদচারণা।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রথমবার অভিনয়ের স্বীকৃতি পেলেন অথৈ। তাও আবার একটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। একইসঙ্গে পুরস্কৃত হয়েছেন দেশি উৎসবেও।  

সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত ‘মুম্বাই শর্টস ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘প্রেম পুরাণ’র জন্য সেরা অভিনেত্রীর খেতাব জিতেছেন সামিয়া অথৈ। একইসঙ্গে ‘চট্টগ্রাম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এও সেরা অভিনেত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

এই নিয়ে উচ্ছ্বসিত সামিয়া অথৈ বলেন, ‘স্বল্পদৈর্ঘ্যটির গল্প গড়ে ওঠেছে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে। নির্মাতা দারুণভাবে গল্পটা তুলে ধরেছেন। কাজটি করতে গিয়ে যতটুকু কষ্ট করার দরকার ছিল, করেছি। কিন্তু সেরা অভিনেত্রী হবো আগে সেটা ভাবিনি। যখন আমাকে স্বল্পদৈর্ঘ্যটির পরিচালক জাহিদ গগণ ভাই সেরা অভিনেত্রী হওয়ার সার্টিফিকেট পাঠালেন, তখন অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করেছিল। ’

২০১৮ সালে লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। হয়েছেন দ্বিতীয় রানারআপ। এরপর নাচ থেকে পুরোদমে অভিনয়ে মনোযোগী হন সামিয়া অথৈ। তবে এখন তাকে কম কাজ করতে দেখা যায়। এর ব্যাখ্যা অবশ্য নিজেই দিলেন অভিনেত্রী, ‘আসলে আমি এখন মানসম্মত কাজের দিকে মনোযোগ দিয়েছি। চাইলে নিয়মিত কাজ করতে পারি, প্রতিদিন শুটিং করতে পারি। কিন্তু এতে কাজের মান ধরে রাখা সম্ভব হবে না। সেজন্যই মূলত গল্প বেছে কাজ করি। আর আমি বিশ্বাস করি মানসম্মত কাজ করলে স্বীকৃতি একদিন না একদিন আসবেই। ’

এতদূর আসতে অবশ্য সামিয়া অথৈকে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। কারণ তার বাবার ইচ্ছে ছিল তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন আর মা চাইতেন চিকিৎসক হবেন। কিন্তু অথৈর মন চাইতো অভিনেত্রীই হবেন। তার ভাষ্যে, ‘শুরুতে অভিনয়ে বাবা-মা তেমন সাপোর্ট করতেন না। কিন্তু যখন প্রতিবেশীরা আমাকে দেখে বাবা-মার কাছে প্রশংসা করতে শুরু করলেন, তখনই মূলত তাদের মনের বরফ গলতে শুরু করে। ছোটবেলা থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল অভিনয় করার। সেজন্য নাচ শুরু করেছিলাম। এখন নাচ-অভিনয় দুইটাই করছি একসঙ্গে। ’ 

শৈশবে শাবনূরের সিনেমা চললেই চট করে বসে যেতেন টিভির সামনে। মুগ্ধ হয়ে দেখতেন প্রিয় নায়িকাকে। তখন থেকেই মনের কোণে একটু একটু করে নিজেকে পর্দায় দেখার স্বপ্ন দানা বাঁধে সামিয়া অথৈর মনে। তবে বড়বেলায় নায়িকা হওয়ার চেয়ে অভিনেত্রী হওয়াটাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন তিনি। অভিনেত্রী হিসেবেই নিজের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন অথৈ।  

অভিনেত্রীর কথায়, ‘নায়িকাই হতে হবে এমন জেদ আমার মধ্যে নেই। আমি চাই যে চরিত্রটা আমাকে দেওয়া হবে সেটাকে একেবারে পারফেক্ট করে পর্দায় তুলে ধরতে। চরিত্রটি যখন আমি ঠিকঠাক করতে পারবো, তখনই আমি তৃপ্ত হবো। ’

সবশেষে নিজেকে নিয়ে এই সুন্দরী বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, শোবিজে যারা কাজ করেন, ‘অভিনেত্রী’ সুনামটা সবাই পায় না। নিজের সত্ত্বা থেকে বের হয়ে আরেকটা মানুষের সত্ত্বাকে ধারণ করতে সবাই পারেন না। যারা পারেন তারাই অনন্য। এই জিনিসটাই আমার ভালো লাগে বেশি। এটা আমি শাবনূর আপু, জয়া আপুকে দেখে শিখেছি। তাদের দেখলে মনেই হয় না তারা অভিনয় করছেন। মনে হয়, যে চরিত্রটি করছেন সেটাই উনি। তেমনই আমি অনন্য হতে চাই। ’

ভোলার মেয়ে সামিয়া অথৈ ২০২১ সালে ইংরেজিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। অভিনয় নিয়ে তার অনেক দূর যাওয়ার স্বপ্ন। তবে কাজের পাশাপাশি স্নাতকোত্তরটাও করে ফেলার ইচ্ছে রয়েছে। রায়হান রাফি পরিচালিত ‘দামাল’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন সামিয়া। চলতি বছর এই সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটবে তার।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২
জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।