ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

মেছোবাঘের গলায় স্যাটেলাইট

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৩
মেছোবাঘের গলায় স্যাটেলাইট মেছোবাঘটির শরীরে স্যাটেলাইট লাগানো হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বন্যপ্রাণীর সঙ্গে মানুষের সংঘাত নতুন নয়, বহুকাল ধরেই চলছে। বিভিন্ন কারণে সেই আদিকাল থেকেই বন্যপ্রাণীদের হত্যা করা হচ্ছে।

বর্তমানে সময়ে বন্যপ্রাণীরা একেবারেই বিপন্ন হয়ে পড়েছে, তারপরও মানুষের অমানুষখচিত প্রতিহিংসাকে কিছুতেই লাগাম টানা যাচ্ছে না।

জলাভূমির মাছ খেয়ে জীবন কাটানো মেছোবিড়াল বা মেছোবাঘের অবস্থা তো আরও করুন! এ প্রাণীটিকে দেখা মাত্রই মানুষ মেরে ফেলে।

প্রাণীটিকে নিয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজার একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি তারা একটি পুরুষ মেছোবাঘের গায়ে স্থাপন করেছে স্যাটেলাইট। এর ফলে কোথায় থাকে এই প্রাণী? কি খাবার খায়? কখন লোকালয়ে আসে? মানুষের কাছাকাছি কখন আসে? কখন প্রজনন করে? ইত্যাদি বিষয়ে জানা সহজ হবে।

মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্র জানায়, সম্প্রতি শনিবার একটি মেছোবাঘের গলায় স্যাটেলাইট কলার পরিয়ে মৌলভীবাজার সদর ইউনিয়নের অফিসবাজার এলাকায় ছাড়া হয়েছে। এ অভাবনীয় কাজে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে সাহায্য করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও জাপানের রিছসোমেইকান ইউনিভার্সিটি। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এ কার্যক্রমটিকে স্মরণীয় করে রাখতে মেছো বাঘটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বাধীন’।

সূত্র আরও জানায়, প্রায়ই মানুষের তৈরি করা ফাঁদে মেছোবাঘ আটকের ঘটনা ঘটছে। এদের কোনোটাকে নির্মমভাবে হত্যাও করা হয়। এছাড়া রাস্তা অতিক্রমের সময় দ্রুতগামী গাড়ির চাপাও প্রাণ হারায় এ প্রাণীগুলো। যে মেছোবাঘটির গলায় স্যাটালাইট স্থাপন করা হয়েছে, সেটি কিছুদিন আগে অফিসবাজার এলাকায় মানুষের পাতা ফাঁদে আটকা পড়েছিল। পরে বনবিভাগ সেটিকে উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকালে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষক বিভাগ, সিলেট অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, হাওর পাড়ের মানুষরা তো বলেই থাকে, মেছোবাঘ হাঁস-মুরগি খেয়ে বাঁচে। এর (স্যাটেলাইট) মাধ্যমে আমরা মানুষদের দেখাতে পারবো যে, ওরা হাস-মুরগি নয়, বিল হাওরের মাছ খেয়ে বেঁচে থাকে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মেছোবাঘের ওপর কোনো গবেষণা হয়নি। মেছোবাঘগুলো কতটুকু পানিতে নেমে মাছ শিকার করে। কোথায় ঘুমাচ্ছে? বিশেষ করে ফিমেল (মহিলা) মেছোবাঘের কাছ থেকে আমরা তথ্য পাবো যে, সে কোথায় বাচ্চা দিয়েছে? কয়টা বাচ্চা দিয়েছে? ব্রিডিং সিজনে (প্রজনন মৌসুমে) সে দিনের বেলা কোথায় কোথায় থাকছে। সে জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

ডিএফও রেজাউল করিম বলেন, স্যাটেলাইটের কারণে এরকম অনেক তথ্য বের হয়ে আসবে বলে আশা করছি আমরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৩
বিবিবি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।