মৌলভীবাজার: দীর্ঘ বিরতির পর আবার পাওয়া গেল ‘বিরল’ একটি পাখি। যে পাখিকে খুবই কম অর্থাৎ হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায়।
দীর্ঘ বিরতির পর হঠাৎ করে নতুন কোনো পাখি ছবি ধারণ করতে পারার আনন্দ যে কী – সেটা পাখিবিষয়ক আলোকচিত্রীই সবচেয়ে ভালো জানেন। কেননা, একেকটি পাখির ছবি তোলার পেছনে তাদের অসীম ধৈর্য এবং কষ্ট অবিশ্বাস্য।
সরেজমিন বা মাঠপর্যায়ে না গেলে সহজে কেউ বিশ্বাস করতে চাইবেন না। আর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয়ের কথা - সে তো বলাই বাহুল্য।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ পাখিটির নাম ‘মেটোচাঁদি-চড়ুইভরত’। কেউ কেউ আবার ‘বালুচাটা ভরত’ও বলে থাকেন। ইংরেজি নাম Ashey crowned sparrow lark. ১১ নভেম্বর আমরা ১৩ জন বার্ড ফটোগ্রাফার মাওয়া দিয়ে লৌহজংয়ের একটি পাখির খোঁজে পদ্মার চরে যাই। ২০১০ সালে এই পাখিটি পঞ্চগড়ে প্রথম দেখা যায়। তখন অল্প সংখ্যক ফটোগ্রাফার পাখিটির ছবি তুলেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর ২০২০ সালে রাজশাহীর পদ্মার চরে একজন ফটোগ্রাফার পাখিটির আবার দেখা পায়।
পাখিটির শারীরিক বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরা ধূসর বর্ণের ছোট পোকা শিকারি পাখি। দৈর্ঘ্য ১৩ সেন্টিমিটার এবং ওজন ১৬ গ্রাম। এদের ঠোঁট খুব খাটো ও গোলাকার। এরা মূলত কাঁটাযুক্ত বিচ্ছিন্ন ঝোপসমেত শুকনো অঞ্চল, ঘাসের ঝোপ, বালুময় নদীর পাড়ে ও শুকনো জোয়ার-ভাটার কাদাচরে বিচরণ করে। এরা জোড়ায় থাকে। কখনো ছোট দলেও দেখা যায়। এদের খাবার তালিকায় রয়েছে বীজ, শক্ত খোলকযুক্ত গোবরে পোকা, পিঁপড়া ও অন্যান্য পোকামাকড়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের বালুময় নদীতীরে পাওয়া যায়।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি জানান, ‘পাখিটি বাংলাদেশের ‘বিরল আবাসিক পাখি’। সহজে দেখা যায় না। সর্বশেষ ২০২৩ সালে পাখিটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের পদ্মার চরে আবারও দেখা যায়। খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই পাখিটির ছবি তোলার জন্য। পাখিটির ছবি তুলতে পেরে আমরা সবাই আনন্দিত। ’
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) বাংলাদেশের ‘রেড লিস্ট’ অনুযায়ী এই প্রজাতিটি ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
বিবিবি/এএটি