নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জি আর ইনস্টিটউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভেতরে নতুন ভবন নির্মাণের অজুহাতে ৫৪টি মেহগনি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ওইসব গাছ কাটার সময় শিক্ষার্থীরা বাধা দিলেও তাতে কর্ণপাত করেনি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করেই গাছকাটা হয়েছে বলে অধ্যক্ষ দাবি করলেও পরিষদের প্রধান ও স্থানীয় এমপি সেটা অস্বীকার করেন।
গাছকাটা নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় পরিবেশবাদীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ। স্থানীয় নাগরিক কমিটি ও পরিবেশ আন্দোলকারীরা অচিরেই কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় শহীদ জিয়া হল প্রাঙ্গণে পক্ষকালব্যাপী বৃক্ষমেলা উদ্বোধনের সময় জেলা প্রশাসক মনোজ কান্তি বড়াল নারায়ণগঞ্জবাসীকে বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান।
বাংলানিউজকে তিনি জানান, গাছকাটার জন্য সাধারণত জেলা প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন হয়। কিন্তু, এ প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেয়নি।
জানা যায়, উপজেলার সবচেয়ে পুরাতন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সোনারগাঁও জি আর ইনস্টিটউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে নতুন ভবন নির্মাণের নামে ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সুলতান মিয়া ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে প্রতিষ্ঠানের ৫৪টি মেহগনি গাছ শুক্রবার বিকেলে মাত্র ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
শনিবার দুপুরে ক্রেতারা গাছ কাটতে গেলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে বিষয়টি জানাজানি হলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় তথা নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সারের মামা পরিচয় দেন অধ্যক্ষ সুলতান মিয়া।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিভাবকরা জানান, অধ্যক্ষ সুলতান মিয়া প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির অসাধু সদস্যদের যোগসাজশে নানা অনিয়ম করে আসছেন।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ সুলতান মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ সুলতান মিয়ার বক্তব্যের সত্যতা অস্বীকার করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার বলেন, “গাছ বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই। কেন গাছগুলো এভাবে বিক্রি করা হয়েছে, তা জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ”
সোনারগাঁও নাগরিক কমিটির সভাপতি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘নির্ভীক’-এর প্রধান সমন্বয়কারী এটিএম কামাল বাংলানিউজকে জানান, এভাবে গাছ কাটা চরম অন্যায়। যদি একান্ত প্রয়োজনেই গাছ কেটে ফেলতেই হয়, তখন আগে গাছ রোপন করতে হবে। কিন্তু, ওই প্রতিষ্ঠান সেটি করেনি। এর বিরুদ্ধে যদি প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে অবশ্যই আন্দোলন করা হবে। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৩
তানভীর হোসেন/সম্পাদনা: মীর সানজিদা আলম, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর