ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

জোঁকে আর নেই ভয়

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৪ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৭
জোঁকে আর নেই ভয় জোঁক দূরীকরণের ওষুধ ‘কংফু লিকুইড’, ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বর্ষা মৌসুমে প্রকৃতিতে জেঁকে বসে জোঁক। ঘাস, লতা, বন মাড়ানো মানেই জোঁকের আড্ডাখানায় অনাহুত। আর এক শ্রেণীর জোঁকভীতু এদের দেখা মাত্রই ওঠেন আঁতকে। শরীর বেয়ে এই ছোট্ট কীটটি ওঠা মাত্রই শুরু হয় চিৎকার-চ্যাঁচামেচি। চারপাশ ঘিরে তখন অপ্রস্তুত হওয়ার পালা!

জোঁক নিয়ে অনেকেরই রয়েছে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা। রয়েছে ভয়, দুর্ভোগ আর যন্ত্রণার দুঃসহ স্মৃতি।

বর্ষা মৌসুমে বন-জঙ্গল বা পাহাড়ি পরিবেশে জোঁকের উপদ্রপ অনেকখানি বেড়ে যায়।

জোঁকের কামড়ের উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- আমাদের শরীরে বিশেষ করে দুই পায়ের কোনো একটি স্থানে সে যখন রক্ত খেতে শুরুতে অথবা রক্ত খাওয়ার সময় তা একটুও টের পাওয়া যায় না। রক্ত চুষে যখন সে নিজে পড়ে যায় তখন সেই ক্ষত জায়গাটিতে চুলকানি ওঠে। তখনই বোঝা যায় জোঁকে ধরেছিল! কখনও আবার ক্ষতস্থান থেকে পড়ে রক্ত।

তবে জোঁক সম্পর্কিত সব ভয় দূর করতে দেশে পাওয়া যাচ্ছে ‘কংফু লিকুইড’। ৩ মিলিলিটারের এই ছোট্ট শিশিটির দাম পঞ্চাশ টাকা।

ওষুধটির প্লাস্টিক কাভারের গায়ে লেখা রয়েছে- মেনথল, মিথাইল নেটসিলেইট, কর্পূর, ইউক্যালিপটাস তেল এবং লবঙ্গের নির্যাস তেল দিয়ে প্রস্তুত। এটি হংকংয়ের তৈরি। দেশীয় পদ্ধতি লবণ ব্যবহারে জোঁক মরে যায়। কামড়ানোর পর জোঁকটাকে না মেরে এ ওষুধ লাগিয়ে বনে ঘুরলে জোঁকের প্রাণ অন্তত রক্ষা পায়।

জোঁক ভয় পাওয়া প্রকৃতিপ্রেমীরা ওষুধটি ব্যবহার করে নির্ভয়ে বন্য পরিবেশে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটক নির্মাণ করতে ময়মনসিংহ থেকে আসা ভাস্কর শফিকুল ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, লাউয়াছড়ায় এসে প্রথম দিনই কয়েকটি জোঁকের কামড় খেতে হলো। ঘটলো কিছুটা রক্তপাত। তারপর শুরু হলো অসহ্য চুলকানি।

তিনি আরও বলেন, পরে দু’দিনের ছুটিতে বাড়ি এসে একজনের পরামর্শে ময়মনসিংহ শহর থেকে এই ‘কংফু লিকুইড’ ওষুধটি ৫০ টাকা দিয়ে কিনি। এটি ব্যবহার করে দেখলাম বেশ কার্যকর। এর কার্যক্ষমতা প্রায় বারো-চৌদ্দ ঘণ্টা।

তিনি ঠাট্টা করে বলেন, মজার ব্যাপার হলো- এখন আপনাদের লাউয়াছড়ার জোঁক আমাকে ভয় পায়।

এর ব্যবহারবিধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি দু’ভাবে ব্যবহার করা যায়। একটি পদ্ধতি হলো- বনে প্রবেশের আগেই এটি দু’পায়ে মেখে নেওয়া। তাতে এর গন্ধে জোঁক শরীরে আসে না। অপর পদ্ধতি হলো– জোঁক কামড়ানোর স্থানে ওষুধটি লাগানো। তাতে আর অসহ্য চুলকানি হবে না।     

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৭
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।