ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

হলদে সুন্দরী ‘অলকানন্দা’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
হলদে সুন্দরী ‘অলকানন্দা’ গাছজুড়ে অলকানন্দার সৌন্দর্য। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: দুপুররোদের অবসাদ তখন। দীর্ঘক্ষণের ভ্রমণ ফুলের মুগ্ধতার কাছে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম পেলো। দারুণ সে সৌন্দর্য রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশের মাঝে চারদিকে তীব্রতা ছড়িয়ে রেখেছে। আলোকেও যেন হার মানাচ্ছে অলকানন্দার সে হলুদ রঙের আভা।

‘অলকানন্দা’ শব্দটি গেঁথে ছিল মনের কোণে। অপূর্ব এ ফুলটি চেনার আগে থেকেই ফুলের শ্রুতিমধুর নামটির সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠার সুযোগ হয়।

আবদুল গাফফার চৌধুরীর ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ সেই বিখ্যাত কবিতা ও গানে এ ফুলটির কথা উল্লেখ রয়েছে।  

সেদিন শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপকের বাংলো তখন ছিল অলকানন্দার দখলে। অসংখ্য ফুল রয়েছে মাঝারি আকারের ঝোপময় গাছে। পাশে গিয়ে দেখতে ইচ্ছে করে বারবার। সবুজ-হলুদের মিলিত রূপের শোভা।  

গাছজুড়ে অলকানন্দার সৌন্দর্য।  ছবি: বাংলানিউজ বলতে ইচ্ছে করে হলদে সুন্দরী অলকানন্দা। মুখে যেন তার প্রসন্ন হাসি। মায়াবি রূপের ঝলকানি পাতার ভাঁজে ভাঁজে। গন্ধ নেই, তবু দারুণ মোহময়। দেখলে কেবল দেখতেই ইচ্ছে হয়। ফুলের ভেতর একটি ছোট্ট পতঙ্গের কিছুক্ষণের বিশ্রাম দৃশ্যটি দারুণ মনোমুগ্ধকর।  

বাংলোর খোলা বারান্দায় বসে প্রকৃতির দিকে চোখ রাখতেই অলকানন্দা নজরে চলে আসে। খুব সহজেই নজর কাড়ে ওরা। ফুলগুলো দেখতে অনেকটা মাইক বা ঘণ্টার মতো। ঘন সবুজ গাছের উপর হলুদময় সুগভীর শোভা। তবে ফুলগুলো গন্ধহীন।

কৃষিবিদ ও ফুলপ্রেমী সুকল্প দাস বলেন, অলকানন্দা ফুলটির ইংরেজি নাম ‘অ্যালামন্ডা’। বৈজ্ঞানিক নাম Allamonda cathertica। বাংলায় একে ‘ঘণ্টালতা’ও বলা হয়। এটি Apocynaceae পরিবারের ফুল। আমাদের দেশে হলুদ রঙের এ ফুলটিই বেশি দেখা যায়। তবে এ ফুলের বেগুনি রঙের আরেকটি প্রজাতি রয়েছে।

গাছজুড়ে অলকানন্দার সৌন্দর্য।  ছবি: বাংলানিউজ তিনি আরো বলেন, এটি মূলত বসন্ত ও গ্রীষ্মকালের ফুল। তবে বর্ষার সময়ও ফুটতে দেখা যায়। ফুলটি প্রায় দু সপ্তাহ খানেক সতেজ থাকে। গাছ বিশ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ফুলটির আদি নিবাস ব্রাজিল।  

খুবই সাধারণ গড়নের ফুলটির বিশেষত্ব লুকিয়ে আছে এর রঙে। উজ্জ্বল টকটকে হলদে বর্ণের পাঁচটি পাপড়ি আর সবুজ পাতার নান্দনিক গঠন সহজেই নজর কাড়তে বাধ্য। কাণ্ড, পাতা ও ডাল ভাঙলে সাদা রঙের ‘কস’ বের হয় বলেও জানান এই কৃষিবিদ।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।