তবে এবার বাইক্কা বিলের পরিযায়ী পাখির নতুন একটি তথ্য উঠে এসেছে। আর তা হলো, অতি উৎসাহী সৌখিন দর্শনার্থীরা বাইক্কা বিলের পরিযায়ী পাখিদের ছবি ধারণ করতে দিয়ে পাখিদের মারাত্মকভাবে বিরক্ত করছেন।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, দূর-দূরান্ত থেকে বাইক্কা বিলে আগত দর্শনার্থীরা পাখিদের ছবি তুলতে গিয়ে সেটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। পাখিদের বিরক্ত করে এমন ছবি ধারণের ফলে বাইক্কা বিলের পাখিরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে বিল ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
চিকিৎসক, প্রকৃতিপ্রেমী এবং বন্যপ্রাণী বিষয়ক আলোকচিত্রী সাঈদ বিন জামাল বাংলানিউজকে বলেন, বাইক্কা বিলের জন্য নতুন আতঙ্ক হলো অতি উৎসাহী দর্শনার্থীরা। এরা নৌকা নিয়ে পরিযায়ী পাখিদের ঝাঁক আকাশে উড়িয়ে তারপর ছবি তোলেন। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। এটা ‘ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি’ (বন্যপ্রাণী আলোকচিত্র) নীতিমালার পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন, আপনি পাখি বা বন্যপ্রাণীর ছবি তুলবেন তাদের কোনো প্রকার বিরক্ত না করে। আর এটাই হলো ‘ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি’র নিয়ম। কিন্তু সম্প্রতি আমি বাইক্কা বিলে এসে শুনলাম কিছু কিছু আলোকচিত্রীরা পাখিদের মারাত্মকভাবে বিরক্ত করে তারপর ছবি ধারণ করছেন। কেউ কেউ আবার রাত্রিও যাপন করছেন বাইক্কা বিলের টাওয়ারে।
বৃহম্পতিবার (১০ জানুয়ারি) বাংলানিউজে প্রকাশিত ‘পাখি কমে গেছে বাইক্কা বিলে’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রসংশা করে তিনি বলেন, আপনাদের প্রকাশিত এই নিউজটি পুরোপুরিভাবে সঠিক। আমি নিজে সম্প্রতি বাইক্কা বিলে গিয়ে তেমন সংখ্যক পরিযায়ী পাখিদের না দেখতে পেয়ে মারাত্মকভাবে হতাশ হয়েছি। বাইক্কা বিলের আশপাশে কৃত্রিম মাছের খামার গড়ে ওঠায় বাইক্কা বিল নিজস্ব নির্জনতাটুকু হারিয়েছে। বেড়েছে মানুষের পদচারণা এবং কমেছে পাখিদের কিচিরমিটির ডাক।
তিনি আরও বলেন, আমি বাইক্কা বিলে গিয়ে শুনেছি, বিলের প্রবেশমুখে গড়ে ওঠা জনবসতিও এই সংরক্ষিত বিলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ওই জনবসতির কেউ কেউ নাকি ভোরের দিকে জাল পেতে পরিযায়ী পাখিদের ধরে তা উচ্চমূল্যে লুকিয়ে বিক্রি করে। এভাবে চলতে থাকলে বাইক্কা বিলে পাখি আসা বন্ধ হয়ে যাবে।
বাইক্কা বিলের পরিযায়ী পাখিরা আমাদের দেশের মূল্যবান সম্পদ। এদের নিরাপদ আশ্রয় এবং শান্তিপূর্ণ বাসবাসের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে এখনই জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে বলে জানান বন্যপ্রাণী বিষয়ক আলোকচিত্রী সাঈদ বিন জামাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ১২ জানুয়ারি, ২০১৯
বিবিবি/আরআর