ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

দুই সপ্তাহে দুটি হরিণ শিকার, পদক্ষেপ নেয়নি বন বিভাগ

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২২
দুই সপ্তাহে দুটি হরিণ শিকার, পদক্ষেপ নেয়নি বন বিভাগ দেখতে মায়াবী বলেই নাম মায়া হরিণ | বাংলানিউজ ফাইল ছবি

মৌলভীবাজার: দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সংঘবদ্ধ শিকারিদের গুলিতে দুটি হরিণ শিকারের ঘটনায় এখনো উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বন বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেট বন বিভাগের কালেঙ্গা রেঞ্জের অরণ্যঘেরা পাহাড়ি এলাকা রশিদপুর বিট।

এই বিট সংলগ্ন বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের সাতগাঁও রাবার বাগান এলাকা থেকে গত ১৮ মার্চ এবং সবশেষ ৩ এপ্রিল রাতে দুটি মায়া হরিণ গুলি করে মেরে নিয়ে যায় শিকারিরা। গণমাধ্যমকর্মীরা এ ব্যাপারে তথ্য জানতে চাইলে টনক নড়ে বন বিভাগের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ আশ্রয়-প্রশ্রয়ে শিকারিরা বন্যপ্রাণী শিকারের সুযোগ পাচ্ছে। স্থানীয় বন বিভাগ শিকারিদের সাম্প্রতিক কার্যক্রম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে জোরালো কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। স্থানীয় বিটের লোক সংকটের তথ্য উত্থাপন করে বন্যপ্রাণী শিকারের আপরাধকে হালকা করে ফেলা হয় বার বার।

সাতগাঁও রাবার বাগানের নিরাপত্তাকর্মী সূত্র জানায়, ১৮ মার্চ রাতে বিট সংলগ্ন এলাকায় দুটি গুলির বিকট শব্দ শোনা গিয়েছিল। গত ৩ এপ্রিল ইফতারের পর সন্ধ্যার দিকে একটি মায়া হরিণ মেরে বস্তার ভেতরে ঢুকিয়ে সাতগাঁও রাবার বাগানের প্রধান ফটকের পাশ দিয়ে চলে যায় শিকারিরা। দুটি মোটরবাইকে চারজন আরোহী ছিলেন। প্রথম মোটরবাইকের দুজনের মাঝখানে রাখা বস্তা থেকে মায়া হরিণের শিং দুটো বের হয়েছিল।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) ঘটনার তদন্ত করতে যান রশিদপুর বিটের বিট অফিসার সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে দুজন বনপ্রহরী এবং বনের সংশ্লিষ্ট অধিবাসীরা। পরের দিন বুধবার কালেঙ্গা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে রশিদপুর বিটের বিট অফিসার এবং বন সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বনের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বন্যপ্রাণী শিকারের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা।

৩ এপ্রিলের হরিণ শিকারের ঘটনাটির তদন্ত করতে যাওয়া বিট অফিসার সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি সত্য কিনা এ ব্যাপারে আমি কিছু বলবো না। তবে আমরা বন্যপ্রাণী শিকারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে গিয়েছিলাম।

কথাপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, এত বড় আমাদের বিট, মাত্র দুই তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষে সবসময় পাহারা দেওয়া সম্ভব?।

বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মাহমুদুল হক খান বাংলানিউজকে বলেন, বন্যপ্রাণী দেশের সম্পদ। কোনো অবস্থাতেই বন্যপ্রাণী ধরা, শিকার করা, খাওয়া এবং পাচার করা যাবে না। যারা এগুলো করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশের ভিত্তিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

মায়া হরিণ শিকারের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সিলেট বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. তৌফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এলাকায় দুটি হরিণ শিকারের বিষয় আমার জানা ছিল না। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২২
বিবিবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।