ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর শাবিপ্রবি

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২২
পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর শাবিপ্রবি ছবি: সংগৃহীত

শাবিপ্রবি (সিলেট): প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। ছোট ছোট টিলা আর সবুজ গাছ-গাছালিতে ঘেরা এ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য নজর কাড়ে সবার।

প্রতি বছর শীত, বসন্ত ও বর্ষা ঋতুতে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যের মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এ সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসু মানুষকে মুগ্ধ করে তোলে নিমিষেই। সম্প্রতি ক্যাম্পাসে পরিযায়ী পাখির আগমনে সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে শাবিপ্রবিতে।

বর্তমানে সিলেটের হাওড়গুলোতে অতিরিক্ত পানি থাকায় পরিযায়ী পাখিগুলো নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে।

বুধবার (৮ জুন) সরেজমিনে দেখা যায় ক্যাম্পাসের শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের পাশে, রেজিস্ট্রার ভবনের পাশের বিলগুলোতে সাঁ সাঁ করে উড়ে বেড়াচ্ছে পরিযায়ী পাখিগুলো।

এরপর বিলে হেঁটে হেঁটে খাবার অন্বেষন করছে তারা। মাঝে মধ্যে লম্বা ঠোটের দু’মাথায় শামুক নিয়ে খেতে দেখা যায়। আবার কখনো দলবেঁধে উড়ে বেড়াচ্ছে ক্যাম্পাসের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। এ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য আর তাদের কলকাকলিতে ক্যাম্পাসে নতুন আবহ সৃষ্টি হয়েছে, যা প্রত্যেক শাবিপ্রবিয়ানদের মনকে পুলকিত করে তুলেছে।

বাংলাদেশে সাধারণত অক্টোবরের শেষ এবং নভেম্বরের শুরুর দিকে শীতের আগমন ঘটে। শীতের শুরুতেই উত্তরের সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং নেপাল, চীনের জিনজিয়াং ও ভারতসহ প্রবল শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে পাখিরা পাড়ি জমায় বাংলাদেশের মত নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। এছাড়া বর্ষার মৌসুমেও এসব পাখিগুলো নিরাপদ আশ্রয় ও খাবারের খোঁজে পাড়ি জমায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তবে সিলেটের বিভিন্ন হাওরে পাখিদের অভয়াশ্রম কেন্দ্র হলেও পাখির উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হুঁমকির সম্মুখীন হচ্ছে এসব পরিযায়ী পাখি। তাই এদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব বলে মনে করছেন শাবিপ্রবিয়ানরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম আল শাহরিয়ার বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন মৌসুমে উত্তরের তুন্দ্রা অঞ্চল বরফাচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় পরিযায়ী পাখিগুলো বিভিন্ন দেশে চলে আসে। কিন্তু বিষটোপসহ পাখি শিকারিদের বিভিন্ন নিধনযজ্ঞের কারণে অন্যান্য পাখি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এদের নিরাপদ আবাস ও বিচরণের ব্যবস্থার মাধ্যমে সংরক্ষণ করা সম্ভব।

তাহমিনা হক নামের আরেক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, ক্যাম্পাসে পরিযায়ী পাখির আগমন একটি ভালো দিক। এটি ক্যাম্পাসের একটি গর্বের বিষয়। পাখির জন্য ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই পরিযায়ী পাখিদের যেন কেউ ক্ষতি না করে সে দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বর্ষার সময় পোকামাকড় বেশি থাকায় পরিযায়ী পাখিগুলো তাদের খাবারের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করে। যেখানে তারা পর্যাপ্ত খাবার ও চলাফেরা নিয়ে নিরাপত্তাবোধ করে সেখানে অবস্থান করে পাখিরা। বৃষ্টির ফলে খাবার-দাবারের পর্যাপ্ত সুবিধা আর ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় নিরিবিলি পরিবেশ বিরাজ করছে, তাই পাখিগুলো এখানে আশ্রয় নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারির সময় বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের দেশে পরিযায়ী পাখি এসছে। আমাদের দেশে আসা পাখিগুলোকে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ করে দেওয়া সবার দায়িত্ব।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২২
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।