ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

বিশ্বের বর্ণিল ৭ উৎসব

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫
বিশ্বের বর্ণিল ৭ উৎসব

উৎসব মানেই আনন্দ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রকম উৎসবের প্রচলন রয়েছে।

কোনোটা ধর্মীয়, কোনোটা সাংস্কৃতিক, আবার কোনোটা সামাজিক। উৎসবগুলোর মধ্যে কিছু আবার অনেক বেশি বর্ণিল। বিভিন্ন দেশের সেই বর্ণিল উৎসবগুলোর সবটার সঙ্গে হয়তো অনেকেরই পরিচয় নেই। জেনে নেওয়া যাক তেমন কিছু বর্ণিল উৎসবের কথা।


রিও ডি জেনেরিও কার্নিভাল
বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্নিভাল এটি। প্রতিবছর ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে এ কার্নিভাল হয়। প্রতিদিন কার্নিভালে প্রায় ২ মিলিয়ন মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। কার্নিভাল প্যারেডে বাহারি পোশাকে ঐতিহ্যবাহী নাচ, গান, ফূর্তি আর হুল্লোড়ের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মুখোশ, ফানুস, সাজসজ্জা উৎসবটিকে আরো রঙিন করে তোলে।

চায়নিজ নববর্ষ
চীনের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে লম্বা উৎসব এটি। একে বসন্ত উৎসবও বলা হয়। চীনা নববর্ষের আগের দিন, অর্থাৎ বছরের শেষ দিন থেকে শুরু হয়ে বছরের প্রথম মাসের ১৫তম দিনে ল্যান্টার্ন ফেস্টিভ্যালে গিয়ে শেষ হয় এই উৎসব। এখানে ফুল, ড্রাগন, ফানুস, বাজি, রঙিন পোশাক- সবকিছুর ব্যবহারই থাকে। সেজন্য স্বাভাবিকভাবেই উৎসবটি হয়ে ওঠে অনেক বেশি রঙিন ও আনন্দময়।


হারবিন বরফ ও তুষার উৎসব
চীনের হারবিনে এই উৎসব করা হয়। উৎসবে তুষার ও বরফ দিয়ে তৈরি অপূর্ব সব ভাস্কর্য প্রদর্শিত হয়। প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ এ উৎসবে বরফ ও তুষারের ভাস্কর্য তৈরি করে তাদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটান। তৈরি করা ভাস্কর্যগুলোতে নানা রঙের আলো ও লেজার লাইট ব্যবহার করায় সেগুলো হয়ে ওঠে কল্পনার মতো।
 

ডিয়া ডি লস মুয়েরটোস
ডিয়া ডি লস মুয়েরটোস মানে মৃতের দিন। এটি মেক্সিকোর একটি উৎসব। প্রতিবছর এই দিনে মেক্সিকানরা তাদের মৃত আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের শুভেচ্ছা জানায়। দিনটি মেক্সিকোতে ছুটির দিন। এদিন পরিবারগুলো ‘অফ্রেন্ডাস’ নামক নিজস্ব বেদি তৈরি, নানারকম পোশাক পরানো চিনি দিয়ে তৈরি কঙ্কাল, ফুল, মৃত বক্তির পছন্দের খাবার ও পানীয় দিয়ে প্রিয় মানুষদের মৃত আত্মাকে শুভেচ্ছা জানায়। এসব জিনিস তারা কবরস্থানে মৃত ব্যক্তির কবরের কাছে রেখে আসে। কঙ্কালকে বিভিন্ন রকম বাহারি পোশাকে সাজিয়ে সেগুলো দিয়ে রঙিন করে তোলা হয় শহর। এটি মেক্সিকানদের একটি অন্যতম বৃহৎ উৎসব।


কার্নিভাল অব ভেনিস
ইতালির ভেনিস শহরের এই কার্নিভাল শুরু হয়েছিল ৯০০ বছর বা তারও বেশি আগে। এটি ছিল বছরের একটি সময় সবাই পছন্দমতো কাজ করতে স্বাধীন ছিল। উৎসবে সবাই মুখোশ পরে থাকে। তাই যে কেউ পছন্দমতো কাজ করতে পারে, কোনো কাজে কেউ তাকে দোষ দেবে না।

এই উৎসবে রাস্তাঘাটে রঙিন পোশাক ও মুখোশ পরা লোকজন ও খালগুলোতে বাহারি রঙিন নৌকায় ভেনিস শহর রঙিন হয়ে ওঠে। এছাড়া রাতভর পার্টি, নাচ-গানের আয়োজন তো আছেই। সবমিলে কার্নিভাল অব ভেনিস অনেকটা রূপকথার মতোই।


আলবুকুরকিউ ইন্টারন্যাশনাল বেলুন ফিয়েস্টা
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর আলবুকুরকিউয়ে এ উৎসব হয়। এটি বিশ্বের বৃহত্তম হট এয়ার বেলুন ওড়ানোর উৎসব। অক্টোবরের শুরু থেকে টানা নয় দিন এই উৎসব চলে। এখানে প্রায় ৭৫০টি হট এয়ার বেলুন ওড়ানো হয়। নানা রকম নকশা করা রঙিন বেলুনগুলো আকাশটাকে করে তোলে রঙিন এক কল্পনার জগত।


হোলি উৎসব
হিন্দু ধর্মবলম্বীদের উৎসব হোলি উৎসব। হোলি উৎসব মানেই রং। এর অপর নাম তাই রঙের উৎসব। হোলির দিন রাস্তাঘাট রঙিন হয়ে ওঠে। পরিচিত-অপরিচিত, ধনী-দরিদ্র, ছেলে-বুড়ো- অসংখ্য মানুষ অংশ নেয় এই উৎসবে। একে অন্যের দিকে রং ছুড়ে আনন্দে মেতে ওঠে তারা। এছাড়া নাচ-গানও করা হয়। মূলত ভারতে এই উৎসবটি সবচেয়ে বড় করে করা হলেও বাংলাদেশসহ এশিয়ার আরো কয়েকটি দেশে এই উৎসবের প্রচলন আছে। শুধু হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা নয়, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এই উৎসবে অংশ নেয়।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।