ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

হ্যালোইন ডে’র ইতিহাস

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
হ্যালোইন ডে’র ইতিহাস

ঢাকা: চাঁদনি রাত। ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২টা।

কোথাও টু শব্দটি নেই। দূর থেকে শুধু বাতাসের হুহু আওয়াজ। হঠাৎই চারপাশে নেমে এলো ঘোর অন্ধকার। একখণ্ড মেঘ এসে ঢেকে দিলো রূপালি চাঁদকে। দপ্ করে নিভে গেলো টেবিলে রাখা মোমবাতি। দরজায় ঠক্ ঠক্ শব্দ। কে এলো এতো রাতে? দরজা খুলতেই মূর্ছা যাবার জোগাড়। লম্বা টুপি মাথায়, হাতে উড়ন্ত ঝাড়ু নিয়ে দাঁড়িয়ে নাক বাঁকানো হ্যালোইন ডাইনি!

হ্যালোইন ডে-র কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন। প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ দিনটি অর্থাৎ ৩১ তারিখ মৃত আত্মাদের স্মরণে পালিত হয় এ দিবস। বিগত কয়েক বছরে প‍াশ্চাত্য ও প্রাচ্যের অলিগলির প্রায় সর্বত্রই হ্যালোইন ডে পরিচিতি পেয়েছে। আচ্ছা এই হ্যালোইন ডে-র উ‍ৎপত্তি কোথায় তা কি কেউ জানেন?

অক্টোবরের ৩১ তারিখ মৃতের দেবতা সামান সব মৃত অ‍াত্মাদের পৃথিবীতে আহ্বান জানান। ওইদিন উড়ন্ত ঝাড়ুতে করে হ্যালোইন ডাইনি সারা উড়ে বেড়ায় অ‍াকাশ জুড়ে। কখনওবা সবুজ খরখরে দেহের ডাইনি বুড়ি কড়া নাড়ে কোনো বাড়ির দরজায়।

হ্যালোইনের দিনটি সম্পর্কে লোকজ ধারণা এটি। এবার আসি উৎসব প্রসঙ্গে, হ্যালোইন উৎসব পালনের শুরুটা ছিলো মধ্যযুগে। আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ডের উচ্চ ভূমি ও ফ্রান্সের উওর অংশ জুড়ে তখন কেল্টিক সভ্যতা বিস্তার। প্রাচীন কেল্টদের পালিত সামহাইন উৎসব থেকেই মূলত হ্যালোইনের সূত্রপাত।

কেল্টদের বছর শুরু হতো নভেম্বরের ০১ তারিখ থেকে। গ্রীষ্ম ও ফসলী মাসের  শেষ ও শীতের শুরু। কেল্টদের বিশ্বাস ছিলো, নতুন বছর শুরু হওয়ার আগের রাতে জীবিত ও মৃতের দুনিয়ার মধ্যকার ফারাক কেটে যায়। সেসময় মৃত আত্মা ও ভূত-প্রেত পৃথিবীতে আসে। তাই ৩১ রাতে অক্টোবর মৃত স্বজনদের অ‍াত্মার সঙ্গে মিলনের কামনায় তারা সামহাইন উৎসব পালন করতো।

পরবর্তীতে এ ভূত উৎসবে খ্রিস্ট‍ান ধর্মেরও প্রভাব পড়ে। বিশ্বব্যাপী ০১ নভেম্বরকে ‘অল সেইন্টস ডে’ ঘোষণা করা হয় ও এর আগের সন্ধ্যা মানে ৩১ অক্টোবরকে ‘অল-হ্যালোস-ইভ’ বা হ্যালোইন হিসেবে পালিত হয়।
 
উনিশ শতকের দ্বিতীয়ভাগে আমেরিকায় জাতীয়ভাবে হ্যালোইন ডে পালিত হতে থাকে। ১৯২০ থেকে ১৯৫০ সালের ভেতর পুরো আমেরিকায় হ্যালোইন ডে’র আনুষ্ঠানিকতা বাড়তে থাকে। পরে দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। এদিন সবাই ভূতের সাজে নিজেকে সাজায়। অনেকের মতে, এসময় সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে যায় বিদেহী আত্মারাও।

এ দিনটিকে ঘিরে পুরো অক্টোবর মাসব্যাপী চলে আয়োজনের ঘনঘটা। কুমড়োর লণ্ঠন তৈরি, বাড়িঘর-রাজপথ সাজানো ও চকলেট-পেস্ট্রি তৈরিতে ব্যস্ত থাকে আয়োজকরা।

বর্তমানে আমেরিকায় হ্যালোইন ডে’র বাণিজ্যিক গুরুত্বও রয়েছে। দেশটি প্রতিবছর হ্যালোইন ডে উৎসবে খরচ করে প্রায় ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
এসএমএন/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।