ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

সাংবাদিকতায় ২০১৭’র শঙ্কা ও সম্ভাবনা

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৭
সাংবাদিকতায় ২০১৭’র শঙ্কা ও সম্ভাবনা

পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি গণতান্ত্রিক পরিমণ্ডলেও তথ্যের মান যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে- তাতে ২০১৭ সালের সাংবাদিকতা চর্চা বড় শঙ্কার মধ্যে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবির্ভাব, ফ্রান্স ও জার্মানির চলমান নির্বাচন প্র্রক্রিয়ায় যেমনটা দেখা যাচ্ছে তাতে যোগাযোগের নতুন নতুন চ্যানেলেরই জয়জয়কার।

সনাতনি মিডিয়া টানা হারিয়ে চলেছে তার অর্থশক্তি ও প্রভাব। ফলে প্রযুক্তিনির্ভর প্ল্যাটফর্মগুলোর ভূমিকা ও ব্যাপ্তি নিয়ে তপ্ততর্ক এ বছরের জন্য অনিবার্য হয়ে উঠছে।

কিভাবে এদের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেও হবে অন্যতম বিবেচ্য। মোবাইলকেও ছাপিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন প্রযুক্তির সবচেয়ে গরম টপিকে পরিণত হয়েছে। কিভাবে কোনপথে এর ব্যবহার হবে তারই প্রায়োগিক ও নৈতিক দিকগুলো হয়ে থাকবে সারা বছরের আলোচ্য।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স তার জার্নালিজম মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি ট্রেন্ডস অ্যান্ড প্রেডিকশনস ২০১৭ শীর্ষক প্রতিবেদনের নির্বাহী সারসংক্ষেপে এমনটাই বলেছে।

জরিপভিত্তিক এই প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছে সারা বিশ্বের ১৪৩ জন প্রধানসারির সম্পাদক, সিইও এবং ডিজিটাল লিডারদের সঙ্গে কথা বলে।

তাতে দেখানো হয়েছে- ৭০ শতাংশরই মত ভূয়া আর মিথ্যা খবর দিয়ে সামাজিক নেটওয়ার্কগুলো তাদের অবস্থান আরও জোরদার করবে। ৪৬ শতাংশই মনে করছেন গত বছরের তুলনায় এ বছর এই প্ল্যাটফর্মগুলো আরও বেশি হারে ব্যবহৃত হবে এবং প্রভাব বাড়াবে। ৫৬ শতাংশের মত ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার তাদের অফসাইট কাজগুলোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিংবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ৫৩ শতাংশ এমন কাজে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারের কথা বলেছেন। আর ৪৯ শতাংশ থেকেছেন স্ন্যাপচ্যাটের পক্ষে। সংবাদপত্রের ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে এমন ৩৩ শতাংশই বলেছেন তাদের কোম্পানিগুলো আগের বছরের তুলনায় এ বছর আরও বিপদেই পড়বে। মোটেই ৮ শতাংশ বলেছেন- তাদের শঙ্কা অপেক্ষাকৃত কম।

রয়টার্স তার গবেষণা থেকে কিছু সুনির্দিষ্ট ফাইন্ডিংস তুলে ধরেছে।
 
এক. ভূয়া খবর ধরতে পাবলিশার্স ও প্ল্যাটফর্ম উভয় পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগ থাকলেও তা জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ। ফলে ফ্যাক্ট চেকিং সেবাগুলো ভালো জায়গা করে নেবে।

দুই. নিউজ ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে আরও চাকরিচ্যুতি দেখা যাবে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ অন্যান্য অঞ্চলে আরও কিছু সংবাদপত্র হয় বন্ধ হয়ে যাবে নয়তো কেবল অনলাইনে প্রকাশিত হবে।

তিন. সংখ্যাভিত্তিক জবাবদিহিতা, ডাটা ও ফিগারের ব্যবহার আর প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ক্ষমতাই হবে প্রধান বিবেচ্য।

চার. নিজেদের প্রাথমিক বিনিয়োগ থেকে টিকে থাকা ও আয় করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠলে ফেসবুক লাইভের বিরুদ্ধে প্রকাশকরা সোচ্চার হবেন।

পাঁচ. প্রকাশকরা তাদের ওয়েব সাইট ও অ্যাপসগুলোতে সাইন-ইন বা রেজিস্টার বাড়াতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে। পাঠকের জন্য আরও ব্যক্তিগত কনটেন্ট দিতে সচেষ্ট থাকবে।

ছয়. ম্যাসেজিং অ্যাপস, চ্যাট বটস’র মতো আরও ব্যাপকভিত্তিক উদ্ভাবনের দিকে তাকিয়ে থাকবেন আর ‘সংলাপধর্মী সাংবাদিকতা’ আয়ত্ব করে নেবেন।

সাত. আমরা অনেকেই অ্যামাজনের অ্যালেক্সা, অ্যাপলের সিরি ও গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের ভয়েস ড্রিভেন সুবিধা নিয়ে কম্পিউটারের সঙ্গে কথা বলা শুরু করবো।

আট. ফেসবুক সোশ্যাল ও লাইভ অডিও ফরম্যাট ছাড়ছে ফলে এটি হবে অডিও কিংবা পডকাস্টের বছর।

নয়. নিউজের মোবাইল অ্যালার্টের বিষ্ফোরণ ঘটবে।

দশ. ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নিয়ে আরও আরও পরীক্ষা নীরিক্ষা হবে ফলে সংবাদ ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে হতাশাই বাড়বে।

এগারো. ব্যক্তির ওপর নজরদারিত্বের মাত্রা নিয়ে সরকার ও নাগরিকের মধ্যে লড়াইয়ের জেরে সাইবার যুদ্ধ আরও ঘণীভূত হবে

বারো. ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো বিশ্বের আরও অনেকেই সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে নেতৃত্বে চলে আসবেন।  

বাংলাদেশ সময় ১১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৭
এমএমকে          

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।