ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

অসুস্থ শিশুদের জন্য গোটা শহরের আলোকসজ্জা (ভিডিও)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
অসুস্থ শিশুদের জন্য গোটা শহরের আলোকসজ্জা (ভিডিও) অসুস্থ শিশুদের জন্য গোটা শহরের আলোকসজ্জা

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের ইস্ট প্রভিডেন্স। রাতে হঠাৎ করে জ্বলে উঠলো পুলিশ লাইট। না, কাউকে ধরার জন্য ছুটছেন না কোনো পুলিশ অফিসার।

তারা আলো জ্বালাচ্ছেন জীবনের জন্য। এক কথায় বললে, এই আলো হাসপাতালে বেডে শুয়ে থাকা অসুস্থ বাচ্চাদের জন্য।

 

শহরের বাসিন্দা কার্টুনিস্ট স্টিভ ব্রসনিহান ২০১০ সালে প্রথম এটি শুরু করেন। তার কাছের একজন কিশোর দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় হাসব্রো চিলড্রেন হসপিটালে ভর্তি ছিলো। কিশোরটির মৃত্যুর আগের রাতে তাকে শেষ শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আলাদা কিছু একটা করা কথা ভাবেন স্টিভ।

সেই আলাদা কিছু আয়োজনে, স্টিভ ছেলেটিকে জানালা দিয়ে বাস স্টপের দিকে তাকাতে বলেন। সেসময় স্টিভ তার বাইকের আলো ঠিক তার রুমের দিকে তাক করে জ্বালাতে-নেভাতে থাকেন। ছেলেটিও নিজের রুমের আলো জ্বালিয়ে প্রতিউত্তর জানায়।

এভাবেই শুরু...

এরপর রোজ রাতে স্টিভ হাসপাতালের অন্য শিশুদের উদ্দেশ্যে ‘গুডনাইট লাইট’ হিসেবে বাইকের আলো জ্বালাতে থাকেন। পাঁচ বছর বাদে এটিই একটি রীতি হয়ে দাঁড়ায় শহরের বাসিন্দাদের জন্য। তিনি এটিকে একটি স্যোশাল ওয়ার্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

স্টিভের এক বন্ধু কাজ করতেন সেখানকার হট ক্লাব নামে একটি রেস্টুরেন্টে। এটির মালিকও স্টিভের দেখাদেখি রোজ রাত সাড়ে ৮টায় তাদের নিয়ন আলোটি মিটমিট করে জ্বালিয়ে বাচ্চাদের শুভেচ্ছা জানান। বসে থাকেন না রেস্টুরেন্টে আসা ক্রেতারাও। তারাও মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট ও আলো জ্বালিয়ে গুডনাইট লাইটে যোগ দেন।

ধীরে ধীরে এই মহৎ উদ্যোগে শহরের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি যোগ দিয়েছে ২০ টিরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা রোজ রাত সাড়ে ৮টায় অসুস্থ বাচ্চাদের জন্য মিটমিট করে আলো জ্বালান।

এ নিয়ে উদ্যোক্তা স্টিভের বক্তব্য, কোনো ভালো কাজ একবার শুরু করে এরপর বন্ধ করা খুব কঠিন। ওইসব অসুস্থ বাচ্চা, তাদের পরিবার ও হাসপাতালের পাশে দাঁড়াতে সবাই এটি করে তাকে। এই আলো জ্বালানোর মধ্য দিয়ে সবাই বলতে চায়, আমরা তোমাদের পাশে আছি। তোমরা শিগগিরই ভালো হয়ে উঠবে।

শিশুরা হলো আলোর মতো, এজন্য তারা ঝলমলে আলো দেখলে খুশি হয়। এটি এখন আমরা যদি বন্ধ করে দিই, তারা ধরে নেবে— আমরা তাদের প্রতি আর খেয়াল রাখছি না, যোগ করেন তিনি।

সবচেয়ে আশ্চযের বিষয়, হাসপাতালে ভর্তি বেশ কয়েকজন বাচ্চা সারাদিন রাতের এই আলোকসজ্জার জন্য অপেক্ষা করে থাকে।

তাদেরই মধ্যে একজন ১০ বছর বয়সী এবিগাইল ওয়ালড্রন। লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত এ শিশুটির বক্তব্য, কেউ আলো জ্বালাচ্ছে মানে আমাদের গুডনাইট জানাচ্ছে। এছাড়া আলোকসজ্জার সময়টির এ অনুভূতি আমাদের বাকি সময়ে শারীরিক যন্ত্রণা ভুলে থাকতে সাহায্য করে।

‘কঠিন সময়গুলোতে আমি জানালার বাইরে তাকাই। তখন মনে হয়, অনেক আলো জ্বলছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।