ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

ঈদে খোলা থাকছে রাজধানীর যে বিনোদন কেন্দ্রগুলো

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৭
ঈদে খোলা থাকছে রাজধানীর যে বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঈদে খোলা থাকছে রাজধানীর যে বিনোদন কেন্দ্রগুলো

ঢাকা: ঈদ মানে আনন্দ। আর এই আনন্দ কয়েক গুণ বেড়ে যায় বন্ধু বা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে গেলে। রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও নেওয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। নির্মল আনন্দ বিলিয়ে দিতে ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে বিনোদন কেন্দ্রগুলোর কর্তৃপক্ষ।

ফ্যান্টাসি কিংডম
ফ্যান্টাসি কিংডম
থিমপার্কগুলোর মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় ফ্যান্টাসি কিংডম। ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় গড়ে ওঠা এই বিনোদন কেন্দ্র ঈদের প্রথম সাতদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

বড়দের প্রবেশমূল্য ৪শ টাকা। ৩ ফুটের নিচে শিশুদের জন্য কোনো টিকিট লাগবে না। রাইডে চড়ার জন্য কোনো প্যাকেজ থাকছে না। সাঁতার কাটা যাবে ওয়াটার কিংডমে। এ জন্য মাথাপিছু ৮শু টাকা খরচ করতে হবে।

নন্দন পার্ক
সাভারের নবীনগরের নন্দন পার্কে নানা রকম রাইড আর ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের পাশাপাশি আছে খুদে চিড়িয়াখানাও। ঈদ উপলক্ষে কনসার্টের ব্যবস্থা থাকছে এখানে। নন্দন পার্ক খোলা থাকবে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা।

যমুনা ফিউচার পার্ক
যমুনা ফিউচার পার্ক ঢাকা শহরের অভিজাত জায়গা কুড়িল, বারিধারা, প্রগতি সরণি ও গুলশানের মতো জায়গার কাছাকাছি। এটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও খুব কাছে অবস্থিত। যমুনা ফিউচার পার্কে থাকছে নানা রকম মজার রাইড, ব্লক বাস্টারে রোমাঞ্চকর মুভি দেখার সুযোগ। এছাড়া রয়েছে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের আয়োজন।

চিড়িয়াখানা
ঈদের সময় দর্শনার্থী সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায় ঢাকা চিড়িয়াখানায়। এবারও হবে না তার ব্যতিক্রম। ঈদের দিন না হলেও ঈদের পরের দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের ঢল নামবে চিড়িয়াখানায়। প্রতিদিনের মতোই সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা। প্রবেশমূল্য ২০ টাকা।

দিয়াবাড়ি
ভ্রমণপিপাসুদের কাছে একটি প্রিয় নাম ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত দিয়াবাড়ি। শরতে কাশবনের সৌন্দর্য দেখতে দিয়াবাড়িতে মানুষের ভিড় লেগে থাকে। এছাড়া বছরের অন্য সময়গুলোতেও দিয়াবাড়ির বটগাছ, প্রাকৃতিক শোভা দেখতেও মানুষের ঢল নামে। দর্শনার্থীদের জন্য দিয়াবাড়ির অভ্যন্তর দিয়ে বয়ে চলা তুরাগ নদের শাখায় বেশকিছু নৌকা ছাড়া হয়েছে। তার আশপাশে পাড় বাঁধানো স্থানে দর্শনার্থীদের জন্য বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। দিয়াবাড়ির আশপাশে গড়ে উঠেছে বেশকিছু রেস্টুরেন্টও।

সাগুফতা
কালশী সড়ক ধরে মিরপুর ডিওএইচএসের দিকে কিছুটা এগিয়ে এলে ফাঁকা জায়গায় পাবেন নাগরদোলা। আছে ঘোড়ার পিঠে ঘোরার ব্যবস্থাও। বেলুন, খেলনার দোকান মিলিয়ে পুরো জায়গায় গ্রামীণ মেলার আমেজ। রাস্তার পাশে কিছুটা ফাঁকা জায়গা এবং ঝিল থাকায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন এখানে। ঘোরাঘুরি শেষে দেশি-বিদেশি খাবারের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ আছে সাগুফতা এলাকায়। ডিওএইচএসের প্রবেশমুখে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান। মিরপুর ১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে নেমে কিংবা কালশী নতুন রাস্তার মোড়ে নেমে রিকশায় যেতে পারবেন সাগুফতায়।

কেন্দ্রীয় শিশুপার্ক
ঈদ উপলক্ষে সাজানো হয়েছে শাহবাগে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শিশুপার্কটিকে। নতুন করে রং নষ্ট হয়ে যাওয়া রাইডগুলোতে লাগানো হয়েছে নতুন রং। রাইডগুলোর ছোটখাটো যান্ত্রিক ত্রুটিগুলো মেরামত করা হয়েছে। এবারও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করেছে শিশুপার্ক কর্তৃপক্ষ। এর পাশাপাশি পার্কের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ঈদের প্রথম চারদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। প্রবেশমূল্য ১৫ টাকা। তবে ঈদে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বিনা টিকিটে প্রবেশ ও রাইডগুলো চড়ার সুযোগ পাবে।
জাতীয় জাদুঘর ও স্বাধীনতা জাদুঘর
জাতীয় জাদুঘর ও স্বাধীনতা জাদুঘর
এবার ঈদের দিন খোলা থাকছে না জাতীয় জাদুঘর ও এর আওতাধীন স্বাধীনতা জাদুঘর। ঈদের পরদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এগুলো। এদিন শিশু-কিশোর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোনো টিকিট লাগবে না।
শিশুমেলা
শিশুমেলা
শিশু-কিশোরদের অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র রাজধানীর শ্যামলীর শিশুমেলা। এখানে আছে ৪০টির মতো রাইড। পরিবারের সবার চড়ার মতো আছে ১২টি রাইড। শিশুমেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের প্রথম সাতদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এটি। প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা।  
হাতিরঝিল
হাতিরঝিল
ইটপাথরের এই ব্যস্ত শহরে ক্লান্তিকর নাগরিক জীবনে রাজধানীর হাতিরঝিল হয়ে উঠেছে মনোরম এক বিনোদন কেন্দ্র। দিনে কিংবা রাতে যে কেউই ঘুরে আসতে পারেন হাতিরঝিলে। একটু সন্ধ্যা হলেই বেশি জমে ওঠে এই এলাকা। ভিন্ন ডিজাইনে করা ব্রিজের নিচ থেকে আলো যেন পুরো পরিবেশকে দিয়েছে অন্য রূপ। আর পুরো হাতিরঝিল ঘুরে দেখতে চাইলে রয়েছে বাসসার্ভিসও।  
লালবাগ কেল্লা
লালবাগ কেল্লা
পুরান ঢাকার ভিড় ঠেলে কেল্লার সদর দরজা দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়বে পরী বিবির মাজার। এখানে রয়েছে দরবার হল, নবাবের হাম্মামখানা। আছে শাহি মসজিদ। রয়েছে একটি জাদুঘরও। লালবাগের কেল্লা বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রাচীন দুর্গ। মোগল আমলে স্থাপিত এই দুর্গটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। এটি পুরান ঢাকার লালবাগে অবস্থিত। আর সে কারণেই এর নাম হয়েছে লালবাগের কেল্লা। এটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল। খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের টিকেট লাগবে না।

বুড়িগঙ্গা ইকোপার্ক
বইছে মৃদুমন্দ হাওয়া। শানবাঁধানো নদীর ঘাটে নৌকা বাঁধা। চাইলে এখানে নৌকায় করে ঘুরতে পারেন। একপাশে পাতা আছে বেঞ্চ। সেখানে বসে গল্পে মশগুল হতে পারেন বন্ধুদের সঙ্গে। জায়গাটা গাছগাছালিতে ঢাকা। গাছের সারির ফাঁকে ফাঁকে পাকা রাস্তা। এটি একটি পার্ক, নাম বুড়িগঙ্গা ইকোপার্ক। শহরের কোলাহল ছেড়ে রাজধানীর উপকণ্ঠ শ্যামপুরে প্রায় সাত একর জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে পার্কটি। সবুজ বৃক্ষরাজি আর বুড়িগঙ্গা নদী পার্কটিকে করে তুলেছে নয়নাভিরাম।

আহসান মঞ্জিল
পুরান ঢাকার ইসলামপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে মোগল আমলের ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আহসান মঞ্জিল। খোলা থাকবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ১৫ টাকা। ১২ বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা আর প্রতিবন্ধীদের জন্য জাদুঘর উন্মুক্ত।

তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্ক
নতুন নতুন চমকপ্রদ রাইডস ও মজার সব খেলনা উপভোগের জন্য আপনার আনন্দকে আরো প্রাণবন্ত করতে পার্ক সাজানো হয়েছে নতুন রূপে। তাই সপরিবারে ঘুরে আসতে পারেন তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্ক থেকে। এটি ঢাকার মিরপুর ১-এ অবস্থিত। খোলা থাকবে সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত।

ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক
ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক ঢাকার সায়েদাবাদ রেলক্রসিংয়ের পাশে অবস্থিত। খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এখানে ১৩টি রাইডের মধ্যে রয়েছে ফ্লাওয়ার কাপ, মিনি ক্যাব, বেবি কার, টয় ট্রেন, ভয়েজার বোর্ড, টুইস্টার, সুপার চেয়ার, মেরি-গো-রাউন্ড, ওয়ান্ডারল্যান্ড হুইল ইত্যাদি। প্রবেশমূল্য ছোট-বড় সবার জন্য ৫০ টাকা। আর সব রাইডের মূল্য ৩০ টাকা করে।

অন্যান্য আয়োজন
এসবের বাইরে ছোট-বড় আরো অনেক বিনোদন কেন্দ্রে ঈদ উদযাপনের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান, সংসদ ভবনসহ বিভিন্ন খোলামেলা জায়গায় মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াতে পারবেন নগরবাসী। মুভি দেখার জন্য খোলা থাকবে সিনেমা হলগুলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৭
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।