ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

ট্রেডমিল, শুরুটা যার জেলখানায়

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২১
ট্রেডমিল, শুরুটা যার জেলখানায়

ঘরের ভেতরে হাঁটা কিংবা দৌড়ের মাধ্যমে শরীরচর্চার যন্ত্র ‘ট্রেডমিল। ’ আধুনিক সময়ে ঘরে বসে ব্যায়াম করার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে যন্ত্রটি।

তবে মজার ব্যাপার হলো এর শুরুটা কিন্তু শরীরচর্চার উদ্দেশ্যে হয়নি। হয়েছিল জেলে বন্দি থাকা সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত অপরাধীদের জন্য।

জেদি ও নিষ্ক্রিয় বন্দিদের জন্য ১৮১৮ সালে ইংরেজ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার স্যার উইলিয়াম কিউবিট ‘ট্রেড-হুইল’ নামে একটি মেশিন তৈরি করেছিলেন। পরে উনিশ শতকে ব্রিটেনে এর প্রচলন হয়। তবে আজকের দিনের ট্রেডমিলগুলো যেখানে চলন্ত মেঝের মতো লাগে, শুরুর দিকের জেলখানার ট্রেডমিলগুলো কিন্তু দেখতে তেমন ছিল না। এটা ছিল অনেকটা ওয়াটার হুইলের মতো।

ট্রেডমিলের শুরু।

তবে বন্দিরা সেখানে শরীরচর্চার জন্য দৌড়াতো না। এটা ছিল তাদের শাস্তির অংশ। দৈনিক আট ঘণ্টা তাদের এর ওপর হাঁটাচলা করতে হতো। সবমিলিয়ে সাত হাজার ২০০ ফুট সিঁড়ি তারা আরোহণ করতেন। অবশ্য মাঝে মাঝে বিরতিও পেতেন তারা। তবে এমন গাধার মতো খাটানোর উদ্দেশ্য ছিল একটাই। তাদের অপরাধ থেকে নিরুৎসাহিত করা।

 স্যার উইলিয়াম কিউবিট

অনেক জায়গায় আবার এগুলো কোনো যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতো। যেমন বলা যায়, বেডফোর্ড কারাগারের কথা। এর ট্রেডমিলগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিল একটি ময়দা তৈরির মেশিন। ফলে বন্দিরা এর ওপর দিয়ে হাঁটলে অপর প্রান্তে লাগানো মেশিন থেকে প্রস্তুত হতো ময়দা। পরে ওই ময়দা বিক্রি করে পাওয়া অর্থের একটি অংশ বন্দিরাও পেতেন। তবে অপুষ্টিকর খাদ্য ও অতিরিক্ত পরিশ্রম বন্দিদের অসুস্থতার দিকে নিয়ে যায়। অবশ্য এরপরেও ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ট্রেডমিল কেনা থেকে বিরত থাকেনি।

ট্রেডমিলের প্রাথমিক রূপ।

১৮২৪ সালে কারারক্ষক জেমস হার্ডি নিউইয়র্কের বিদ্রোহী বন্দিদের বশ করার জন্য ট্রেডমিলকে কৃতিত্ব দেন। তবে ধীরে ধীরে আমেরিকানরা ট্রেডমিল ব্যবহার করে পাথর ভাঙা বা অন্য কাজগুলো বন্ধ করে দেয়। ইংল্যান্ডে ট্রেডমিল উনিশ শতকের শেষ পর্যন্ত টিকে ছিল। পরে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলে যন্ত্রটি ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে যায়। যদিও ষাটের দশকে ডা. কেনেথ কুপার যখন অ্যারোবিক ব্যায়ামের স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদর্শন করেছিলেন, তখন ট্রেডমিল আবারও নতুন রূপে ফিরে আসে।

বাংলাদেশ সময়:১৯৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।