ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

ময়লার স্তূপে জীবিকার সন্ধান

জিএম মুজিবুর, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
ময়লার স্তূপে জীবিকার সন্ধান

ঢাকা: তিনটা বাচ্চার মুখে খাবার তুলে দেওয়া জন্য, নিজের জীবনের দিকে না তাকিয়ে এই ময়লা পলিথিন পরিস্কারের কাজ করতে বাধ্য হয়েছি, বলে জানান এই কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিক শাহারা খাতুন (৫৫)।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার শাহারা বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামের বাড়িতে ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে পারতাম না।

তাই বহু চিন্তা করে ২০১২ সালে ঢাকায় আসি। স্বামী অসুস্থ। একদিন কাজ করলে ৬ দিন পড়ে থাকে। আমার বয়স বেশি হওয়ার কারণে কোনো গার্মেন্টসে চাকরিতে নেয়নি।

প্রত্যাকটি মানুষ সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু কেউ জানেনা তার বাস্তব জীবন কোথায়, কীভাবে কাটবে। শাহারা খাতুন মনে করেন তাদের জন্মটাই যেন ময়লার পলিথিনের কাজ করার জন্য।

বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত ও কল-কারখানার ফেলে দেওয়া পলিথিনগুলো পরিষ্কার করে আবার নতুন পলিথিন তৈরি করা হয়। অপরিস্কার এসব কাজ করেও তারা ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না।

শাহারা বলেন, আমার দলে পাঁচজন আছে। আমরা সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই ময়লা পলিথিনের কাজ করি। আমাদের প্রতি দিনের ইনকাম মাত্র ২৩০ টাকা। ময়লা পলিথিনের কাজ করায় সব সময় রোগ-ব্যাধি লেগেই থাকে। অসুস্থতার জন্য কাজ না করতে পারলে বেতন নাই। কিন্তু ঔষুধ খেতে পারিনা। বাজার করবো না ঔষুধ কিনবো? দুই-একদিন কামাই গেলে পরে আবার কাজেও নিতে চান না।

তিনি বলেন, গত ৭ বছর ধরে এই কাজ করে আসছি। ছোট বাচ্চাদের ঘরে রেখে সারাদিন এই পলিথিন পরিস্কারের কাজ করি। কাটতে হয়, ধুতে হয়, শুকাতে হয়।

ভবিষ্যৎ কোনো চিন্তা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের আবার ভবিষ্যৎ! আমাদের জীবন তো শেষ। এখন ছেলে মেয়ে মানুষ করতে পারলে, ওরা কিছু করে খেতে পারলেই আমরা খুশি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
জিএমএম/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।