ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

পত্নীতলায় চীনামাটি ও রূপার খনি

তৌহিদ ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
পত্নীতলায় চীনামাটি ও রূপার খনি

নওগাঁ: ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর তৎকালীন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের শক্তিশালী অনুসন্ধানী দল নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার আমবাটি নামক স্থানে জরিপ করে।  

এরপর জায়গা নির্ধারণ ও খনন করে ১০ বছর পর সেখানে উৎকৃষ্ট মানের চীনামাটি ও রূপার সন্ধান পায় ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর।

 

১৯৬৮ থেকে ২০২২, কেটেছে ৫৪ বছর। কিন্তু এখনো চীনামাটি বা রূপা উত্তোলনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কেউ। কিংবা এখন সেই খনির অবস্থাই বা কি, সেটাও জানার পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি কখনো। ফলে অযত্নে- অবহেলায় আজও পড়ে রয়েছে খনির নিদর্শনগুলো।  

উপজেলার আমবাটি গ্রামের আমজাদ হোসেন (৬৫) বাংলানিউজকে বলেন, যে সময় এখানে খনির খনন কাজ হয়েছিল, তখন আমরা অনেক ছোট ছিলাম। যতদূর মনে পড়ে এখানে বিদেশি লোকজন কাজ করেছে খনির সম্পদ বের করার জন্য।  কিন্তু তেমন কিছুই পায়নি। খনন কাজ চলাকালে স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসত খনি দেখতে।  

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন খনন কাজ চালানোর মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর কিছুদিনের মধ্যে এখানে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কাজ বন্ধ হওয়ার এক মাসের মাথায় এখান থেকে সব যন্ত্রপাতিও নিয়ে চলে যায় কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে এ জায়গা এভাবেই পড়ে আছে। চাষাবাদে সমস্যা হয়, এজন্য এলাকাবাসী এ জায়গা ভেঙে ফেলার অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু পিলারগুলো এত শক্ত যে ভাঙা যায়নি।  

বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরুলেও এ খনির প্রতি গুরুত্ব দেয়নি কোনো সরকার। দেশের খনিজ মানচিত্রে এ খনিটি একটি বিন্দু হয়ে আছে মাত্র। এ স্থানটিসহ একই ইউনিয়নের চকনিরখিন মোড় ও গাহন মৌজায় দু’টি স্থানেও একই সময় জরিপ ও খনন কাজ চালানো হয়। তবে তার কোনো স্মৃতি চিহ্ন বর্তমানে খুঁজে পাওয়া যায় না। বরেন্দ্র এলাকার অজপাড়া গাঁয়ে এ খনিটির অবস্থান হওয়ায় প্রচার মাধ্যম ও ভূতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের নজরে এটি সেভাবে গুরুত্ব পায়নি বলে জানান এলাকাবাসী। তবে পত্নীতলার এ উৎকৃষ্ট মানের চীনামাটি উত্তোলন করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যাবে বলে মনে করেন গ্রামবাসী।  

বিষয়টি নিয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন সরকার বলেন, পত্নীতলার আমবাটি নামক স্থানে উৎকৃষ্ট মানের চিনামাটির সন্ধান পাওয়ার কথা অনেক আগে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে তেমন কিছু জানা নেই আমার। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ভূতত্ত্ব জরিপ অধিদপ্তর অফিস না থাকায় বিশেষ কিছু জানা যায় না।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।