ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

সৈয়দপুরের গ্রামে গ্রামে আজও গজলের প্রথা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
সৈয়দপুরের গ্রামে গ্রামে আজও গজলের প্রথা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এভাবেই গজল গায় শিশু-কিশোর-কিশোরীরা

নীলফামারী: বড়দের দল এখন আর নেই। ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে দলবেধে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি যাচ্ছে।

গাইছে ইসলামী গজলসহ নানা ধরনের গজল।  

১০ রমজানের পর থেকে শুরু হয়েছে এ গজল গাওয়া। চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত। বিনিময়ে নারী-পুরুষ শ্রোতারা তাদের অর্থসহায়তাও করছেন।  

সৈয়দপুরের কামারপুকুর, খাতামধুপুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বোতলাগাড়ি ও বাঙালিপুর ইউনিয়নে প্রতিবছর রমজান এলে এ গজলের প্রচলন দেখা যায়। আগে বড় দল বের হতো। কালের বিবর্তনে সেটি হারিয়ে গেছে। তবে পাঁচ থেকে ১০/১২ বছরের শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের গজলের দল আজও গ্রামে রয়েছে।  

‘মরণের কথা কেন স্মরণ করো না’, ‘আহারে রহিমা বিবি হাতে কেন ভিক্ষার ঝুলি’সহ নানা গজল গেয়ে চলেছে ওই শিশু-কিশোরদের দল। প্রতিটি দলে চার-পাঁচজন থেকে ১০/১২ জন থাকে। এর মধ্যে একজন দলনেতা থাকে, যাকে স্থানীয় ভাষায় হাদি বলা হয়। অর্থাৎ সে প্রথম গজল ধরবে আর বাকিরা তার সঙ্গে কোরাস গেয়ে যাবে। ভালো গজলের দল হলে অনেক গৃহবধূ কেঁদে চোখের পানি ফেলেন।

উপজেলার কামারপুকুরে কথা একটি গজল দলের সদস্যদের সঙ্গে। কিশোরী ওই গজল দলের দলনেতা মরিয়ম নেছা বলে, আমাদের গজলের দলে ১২ জন রয়েছে। এর মধ্যে কেউ প্রাইমারিতে পড়ি, কেউ বা লেখাপড়া করে না। সবাই সমবয়সী। ঈদের দিন পর্যন্ত গজল গেয়ে যে আয় হবে, তা দিয়ে ভুরকা ভাত (বনভোজন) খাব। এটাই আমাদের আনন্দ।
  
সৈয়দপুরের বাঙালিপুর ইউনিয়নের কৃষক আলতাফ হোসেন ও একই ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার ষাটোর্ধ্ব রহিমা বেওয়া জানান, মোবাইল ফোনের যুগে বর্তমান ছেলে-মেয়েরা এসব গজল শুনতে চায় না। তবে বয়োবৃদ্ধরা ইসলামী গজল ও পুঁথিপাঠ শুনে থাকেন। এখনো গ্রামে এসব গজলের কদর কমেনি। এ গজলের দল প্রতিদিন আসে না, ১১ মাস পর রমমজানে আসে। তাই আমরা ভালোমতো তাদের খুশি করি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।