ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

অগ্নিগোলকের রক্তিম বৃত্তাকার পুষ্পশোভা

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
অগ্নিগোলকের রক্তিম বৃত্তাকার পুষ্পশোভা বৃত্তাকার মে ফ্লাওয়ারের রক্তিম সৌন্দর্য। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: সময়চক্রে ‘মে’ মাস এসে শেষের দিকে। যেখানে ফুলটি ফোটার কথা, চোখ যেখানে বারবার চলে যায় অনায়াসে।

প্রতিদিন দু-চারবার করে দৃষ্টি অনুসন্ধান মুখর হয়। কিন্তু কোথায় কাঙ্ক্ষিত ফুল?

ফুল আর দেখা যায় না। সময় গড়ায়। মে মাস তার দিনগুলোকে দ্বিতীয় সপ্তাহে নিয়ে দাঁড় করালো।  এদিকে চোখের অনুসন্ধানী দৃষ্টি তীব্র হয়ে উঠছে। কিন্তু সেভাবে সেই বিশেষ ফুলটির দেখে নেই। স্বাভাবিক ভাবনা দুর্ভাবনায় রূপান্তরিত।

তবে, কী প্রতিবছর যেখানটাই ফুলটি আপনা থেকে প্রকাশিত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সেখানে আজ তার অস্তিত্ব নেই? যে মাটির নির্জন কোণে সে সবার অলক্ষ্যে লুকিয়ে থাকে সেখানে কী সে আর লুকিয়ে নেই? তবে, তাকে কী সেখান থেকে শেকড়মূলসমেত উপড়িয়ে ফেলা হয়েছে? এমন নানান দুর্ভাবনার টুকরো টুকরো অংশগুলো দানা বাঁধছে। পরিবারের অন্য মানুষগুলো মুখোমুখি হয়ে প্রশ্ন হিসেবে বের হওয়ার জন্য অংশগুলো ঘনীভূত হচ্ছে। বিশেষ ফুলের প্রতি তীব্রতর ভালোবাসা আত্মক্ষোভ, আত্মদ্রোহে নিজেকে হঠাৎ আবিষ্কার করে ফেলেছে! বিষণ্ণতার ফুল ভাবনার সেই রাতটুকু প্রায় নিদ্রাহীন। চোখে-বুকে প্রিয় ফুলটিকে হারানোর তীব্রতর ছাপ! অথচ দারুণ অগোচরে। কেউ বুঝে না। কেউ টের পায় না। কেবলই নীরবে ঘটে যায় বিরতীহীন মর্ম যন্ত্রণায় তুষানল।

প্রতিটা ভোরকে আহ্বান করে প্রভাতসঙ্গীত গাওয়া সেই প্রিয় উদয়ী-দোয়েল (Oriental Magpie Robin) পাখিটার লালিত কণ্ঠ সেদিনও মধুর। ঘুম ভাঙলো তার মধুরতম সুরের ধারায়। চোখের দৃষ্টি যেনো প্রায় নিন্দ্রহীন যন্ত্রণা সহ্য করার মতো অনেকটা!

গৃহকোণ থেকে বাহিরকোণে বেরিয়েই সব প্রথম দৃষ্টিতে বিস্ময় ছড়ালো – সেই প্রতীক্ষিত প্রিয় ফুলটির আপন সৌন্দর্য। আহা! এতো দিন কোথায় ছিল — হৃদয়ের সরল অর্থহীন জিজ্ঞাসা! অনতিবিলম্বে কাছে দিয়ে রেণুগুলোকে স্পর্শ করা মাত্রই সেদিনের শ্রেষ্ঠতম মৃদৃশিহরণ।  

বৃত্তাকার রক্তিমশোভা পূর্ণ এই বিশেষ ফুলটির নাম ‘মে ফুল’ বা ‘মে ফ্লাওয়ার’ (May Flower)। তবে ফায়ার বল লিলি, ফায়ার বল, ফুটবল লিলি নামেও এর পরিচিত রয়েছে। বাংলায় কেউ কেউ এই ফুলটিকে ‘অগ্নিগোলক’ বা ‘বল ফুল’ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।  এই ফুলটির আদি নিবাস আফ্রিকা। এর কন্দ, মূল সারা বছর মাটিতে লুকিয়ে থাকে। কেবল প্রতি বছর মে মাস এলেই (কখনো জুন মাস) লম্বা দণ্ড মাটিতে আবির্ভাবের পর গোলাকৃতি লাল রঙের ফুল প্রস্ফুটিত হয়ে ব্যতিক্রমী বিন্যাস ঘটে। যা অতি আকর্ষণীয় এবং গভীর সৌন্দর্যপূর্ণ। এর রয়েছে পুংকেশর ছয়টি এবং গর্ভাশয় তিনটি এবং গর্ভপত্র তিন কোষী। ফুলটি প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন ফুটে থেকে তার বৃত্তাকার শোভা ছড়ায়। এর আকর্ষণে ছুটে আসে ছোট পাখি, প্রজাপতি এবং মৌমাছির দল।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২২ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।