ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

বাহারি ফুলে রঙিন ইবি ক্যাম্পাস

তারিকুল ইসলাম, ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
বাহারি ফুলে রঙিন ইবি ক্যাম্পাস

ইবি: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। ১৭৫ একরের এই ক্যাম্পাস প্রত্যেক ঋতুতে নতুনভাবে নিজেকে সাজিয়ে তোলে।

গ্রীষ্মে প্রকৃতি যখন নতুন রূপে সাজে তখন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও তার নিজ সাজ বদলায়। সারা বছরই সৌন্দর্য আর স্নিগ্ধতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের মাতিয়ে রাখলেও গ্রীষ্মকাল একটু ভিন্নতা আনে ইবির রূপে।  

ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে প্রতিটা প্রান্তেই দেখা মেলে বাহারি সব ফুলের। ছবির মতো এই ক্যাম্পাসটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এসব ফুলের কারনে। কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, জারুল, রঙ্গন, টগর, কদম, ঘাসফুলসহ অসংখ্য প্রজাতির ফুল যেন ক্যাম্পাসকে স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে। প্রধান ফটকের দুইপাশে রয়েছে সাজানো দুইসারি সাদা রঙের ছোট ছোট ফুল গাছের সমারোহ। আর নতুন রোপিত কৃষ্ণচুড়ার চারপাশে রয়েছে হরেক রকমের রঙিন ফুল। রঙিন ফুল গুলো নিজেদের সবটুকু রঙ ছড়িয়ে যেনো দর্শনার্থীদের ডাকছে ১৭৫ একরের ক্যাম্পাসটি ঘুরে দেখার জন্য।  

প্রধান ফটক থেকে একটু সামনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে রয়েছে বিভিন্ন ফুলের মেলা। এখানে বাহারি সব ফুলের গাছ রঙ ছড়াচ্ছে চারদিকে। বিকালে বাইরে থেকে দর্শনার্থীরা এসো ছবি তোলায় মেতে ওঠে এখানে। এর ঠিক সামনে ডায়না চত্বরে রয়েছে লাল রঙের নাম না জানা এক ফুল। যা অনেক দূর থেকে মানুষকে আকৃষ্ট করে তার সৌন্দর্যে।  

এছাড়া, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দেখা মেলে ভিন্ন সব ফুলের। লাল ও সাদা রঙের দুইটি আলাদা ফুলের গাছ শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে এখানের। সাদা রঙের একটা কোমল পাতার ফুল গাছের সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু পাতা বাহার গাছ।

একটু সামনে হাতছানি দিচ্ছে বকুল। গ্রীষ্মের দিনে বকুলের গন্ধে ভরে গেছে চারিদিক। সেই সাথে কদম শোভা বাড়িয়ে দিয়ছে কয়েকগুণ। কদমের পাপড়ি পড়ে পিচঢালা রাস্তা হয়ে উঠেছে পাপড়িময়। প্রকৌশল অফিসের সামনে রয়েছে রঙ্গনের মেলা। রাস্তার দুপাশ দিয়ে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে রঙ্গনের দল।  

ক্যাম্পাসের অন্য সব জায়গার কৃষ্ণচূড়ার থেকে বেশি চোখে পড়ে খালেদা জিয়া হলের কৃষ্ণচূড়া গাছটি। এই গাছের ফুল অনেক দূর থেকে মানুষের চোখে আটকায়। জারুল ফুলের বাহারি রঙ মিশে আছে মীর মোশাররফ ভবনের পাশে। জারুলের সঙ্গে কদমের মিলিত স্নিগ্ধ শীতল হাওয়া শিক্ষার্থীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।  

গ্রীষ্মের তাপদাহে যখন সকলে একটু প্রশান্তির খোঁজে ব্যস্ত ঠিক তখনি এসব ফুলের সুবাস প্রকৃতি প্রেমীদের হৃদয় ছুয়ে যায়। চারদিকে মন মাতানো সব ফুলের সৌন্দর্যে অনেকে আবার কবি হয়ে উঠেন। কৃষ্ণচূড়ার নিচে প্রেমিক-প্রেমিকার খুনসুটি দেখা যায় পড়ন্ত বিকালে।  

সবুজ শ্যামল ক্যাম্পাসে সাদা ঘাসফুল ফুটে প্রকৃতিকে যেন নতুন রূপে সাজিয়েছে। সবুজ ঘাসের বুকে সাদা ঘাসফুলের দোল খেলা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়ে যায়। মনে হয় আমাদের ইশারায় ডেকে বলে, এসো গল্প করি কোনো এক অজানার।

এছাড়াও প্রত্যেক হলের সামনে রয়েছে আলাদা আলাদা ফুলের বাগান। যেখানে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ফুল। এগুলো আবাসিক হলের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মনে আনন্দের জাগরণ সৃষ্টি করে।

ব্যস্ত সময়ে একটু অবসরের প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের গল্প আড্ডায় জমে উঠে ফুলের বাগিচাগুলো। বন্ধুরা গোল হয়ে বসে আড্ডায় মেতে ওঠে ঘাসফুলের সঙ্গে। কেউ ব্যস্ত সেলফি তুলতে, কেউ ব্যস্ত বন্ধুদের সাথে দল বেধে ছবি তুলতে। কেউবা প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে মনের অজানা গন্তব্যে। কেউ আবার প্রিয় মানুষের চুলের খোপায় ফুল গুজে দিতে ব্যস্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।