কঠিন সময় পাড়ি দিয়েই সাফল্য ধরা দেয়। এর আগে কত কত বন্ধুর পথই না পাড়ি দিতে হয়।
তাকেও পাড়ি দিতে হয়েছে কঠিন সময়। কাতারে নিজের রুমকে তিনি সাজিয়েছিলেন একটু ভিন্নভাবে। মনোবিদের সঙ্গে তখন নিয়মিতই কথা বলতেন, বিশেষত সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর। এর আগে থেকেই নিজের সন্তান ও তাদের পুতুলের ছবি টাঙিয়ে রেখেছিলেন নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে।
ইএসপিএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেসব গল্প শুনিয়েছেন মার্তিনেস, ‘সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচের পরের ওই তিনদিন আমি অনেকবার মনোবিদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তাকে বলেছি, দেখো, আমার কেবল মনে হচ্ছে মেক্সিকোর সঙ্গে হেরে গেলে বাড়ি ফিরে যেতে হবে, এটা আমাকে ভেতরে ভেতরে মেরে ফেলছে। ’
‘আমি ঘুমাতে গেছি, তারপর উঠেই বলছিলাম, যদি মেক্সিকোর সঙ্গে হেরে যাই তাহলে বাড়ি চলে যেতে হবে। আমি রুমে একা ছিলাম...এক মাস ধরে ওই রুমটা ঠিক করেছি। আমার বাচ্চাদের, তাদের প্রিয় পুতুল, সবকিছুর ছবি টাঙিয়ে রেখেছিলাম। ’
‘প্লে স্টেশন বসিয়েছি, একদম সবকিছু বাড়ির মতো করে করেছি। আমি তখন বারবার নিজেকে বলেছি, ১০ দিনের ভেতর কোনোভাবেই আর্জেন্টিনায় যাওয়া যাবে না। এটা নিশ্চিতভাবেই ধ্বংসাত্মক হবে। আমি যেখানে খেলতাম, সেই স্টুডিওতেও বিশ্বকাপ ছিল। ট্রফিটা ছিল একটু উপরে, আমি ওখানেও বাতি লাগিয়েছি। মাঝেমধ্যে রাতে গিয়ে আলো জ্বালতাম, নীল আলো; তারপর ট্রফির দিকে তাকিয়ে হাসতাম। ’
বিশ্বকাপের আগেই কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। ওখানেও নায়ক ছিলেন মার্তিনেস। তাদের ওই দলটাকে এবার ইতিহাসের সেরাদের কাতারে নিয়ে যেতে চান মার্তিনেস। এর জন্যই জিততে চান আরও একটি কোপা আমেরিকার শিরোপা।
তিনি বলেছেন, ‘আমি আরেকটি কোপা আমেরিকা জিততে চাই। এরপর বলবো, এই দলটা ইতিহাসের সেরা। যেটা আমি সবচেয়ে বেশি, এই মুহূর্তে, প্রতিদিন, এমনকি মৃত্যুর সময়ও উপভোগ করবো- আমাদের জার্সিতে এখন একটা বাড়তি তারকা আছে। ’
‘ব্যাপারটা এমন না যে শুধু আমিই বিশ্বকাপ জিতেছি, একই সঙ্গে এই বিশ্বকাপটা আমাদের পরের প্রজন্মের জন্যও। তারা বলবে আর্জেন্টিনার জার্সিতে তিনটা তারকা আছে। আমরা পরের প্রজন্মের জন্য একটা নতুন স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করে দিয়েছি- তাদের চতুর্থ বিশ্বকাপ জিততে হবে। দিনশেষে আর্জেন্টিনায় ফুটবল একটা আবেগের ব্যাপার। ’
ফাইনালে আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্সের। নির্ধারিত সময়ের খেলা ৩-৩ গোলে ড্র ছিল। পরে টাইব্রেকারের পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে নায়ক বনে গিয়েছিলেন মার্তিনেস। তবে নিজের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স নিয়ে একদমই সন্তুষ্ট নন আলবিসেলেস্তে গোলরক্ষক।
মার্তিনেস বলেন, ‘ফ্রান্সের বিপক্ষে আমার সেভগুলো খারাপ হচ্ছিল। তারা তিনবার আমার অবধি এসে সবগুলোতেই গোল দিয়েছি। এমবাপ্পের গোলটায় আমার পজিশন খারাপ ছিল, আমি বল ছুয়েছি কিন্তু সেটি গোল হয়ে গেছে পরে। আমার মনে হয়নি বিশ্বকাপে ভালো সেভ করেছি। সবাই হয়তো শেষের সেভ বা পেনাল্টিগুলো দেখছে। কিন্তু আমার মনে হয় না ফাইনালে ভালো সেভ দিয়েছি। ’
বাংলাদেশ সময় : ১২২৬ ঘণ্টা, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩
এমএইচবি