ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

শেষ মুহূর্তের গোলে মান বাঁচাল বাংলাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২৪
শেষ মুহূর্তের গোলে মান বাঁচাল বাংলাদেশ

সাফের শিরোপা ধরে রাখার মিশনে শুরুটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। দেশ ছাড়ার আগে দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেছিলেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ‘অঘটন’ না ঘটলে জয় দিয়ে আসর শুরু করবে বাংলাদেশ।

তবে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে তারা।  

আজ নেপালে পাকিস্তানকে হারাতে পারলেই সেমিফাইনালে খেলতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু সেটি হয়নি। মাঠের খেলায় আজ শুরুতে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তবে শামসুন্নাহার জুনিয়রের গোলে মান বাঁচিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে তারা।  

প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হেরেছে পাকিস্তান। ফলে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ ছিল সহজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেলেই সেমিফাইনালে উঠতে পারতো বাংলাদেশ। তবে তেমনটি হয়নি। সেমিফাইনালে উঠতে হলে বাংলাদেশকে এখন সমীকরণের মধ্য দিয়েই যেতে হবে। পরের ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট পেলেই নকআউট নিশ্চিত হবে সাবিনাদের।

শুরুতেই বাংলাদেশি ডিফেন্ডারদের ভুলে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে বাংলাদেশের বক্সে শট নেয় পাকিস্তান। যদিও সুহা আমিনের শট বক্সের ওপর দিয়ে যায়। পরের মিনিটে পাকিস্তানের আরও একটি শট বাম দিকে ঝাঁপিয়ে আটকে দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। ওই আক্রমণ থেকে খেলায় প্রথমবার পাকিস্তানের রক্ষণে কাঁপন ধরায় বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা সেই আক্রমণ আটকে দেন।

পঞ্চম মিনিটে কোহাতি কিসকুর ‍বদৌলতে বড় বিপদের হাত থকে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ডিফেন্ডারদের ফাঁক গলে বল পেয়ে যান পাকিস্তানের ফরোয়ার্ড নাদিয়া। অনেকটা একা গোলরক্ষককে পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে বক্সে ঢুকে শট নেওয়ার আগে পেছন থেকে এসে দারুণ স্লাইডে বল ক্লিয়ার করেন কোহাতি।

সপ্তম মিনিটে ঋতুপর্ণা চাকমার পাস থেকে মাথায় হেড নিতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র। তিন মিনিট পর ফের আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। মাঝ মাঠ থেকে আক্রমণের সুর বেঁধে দেন তহুরা। তার কাছ থেকে পাস পেয়ে বাম প্রান্ত দিয়ে সামনে এগিয়ে যান ঋতুপর্ণা। বক্সে থাকা শামসুন্নাহারকে দেখে এই ফরোয়ার্ড উড়ন্ত পাস দেন। হেড নিতে পারলেই গোলের সম্ভাবনা ছিল; কিন্তু এবারও হতাশ করেন শামসুন্নারহার জুনিয়র।

খেলার ২০ মিনিটে বড় শামসুন্নার আক্রমণের সুর বেঁধে দেন। মাঝমাঠ পার করে বল দেন ঋতুকে। পাকিস্তানের দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তিনি বল বাড়িয়ে দেন বড় শামসুন্নাহারকে। বল পেয়ে বক্সে থেকে দারুণ শট নেন তিনি, যদিও সেটি যায় বক্সের সামান্য উপর দিয়ে।

বাংলাদেশ এ সময় একের পর এক আক্রমণ শানায় পাকিস্তানের বক্সে। যার বেশিরভাগ আক্রমণ আসে লেফট উইং দিয়ে। একের পর এক ক্রস দেন ঋতু। অভিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ড পাকিস্তানের রক্ষণে একের পর এক আতঙ্ক ছড়ান।  

তবে বাংলাদেশের আক্রমণের মধ্য থেকেই পাকিস্তান আতঙ্ক ছড়ায় ম্যাচের ২৫তম মিনিটে। সেটপিস থেকে দূরপাল্লার শট নেন পাকিস্তানের সুহা। বক্সের ডান দিক দিয়ে সেই বল খুঁজে নিচ্ছিল বাংলাদেশের জাল। তবে গোলবারের সামনে অতন্দ্র প্রহরী রুপনা লাফিয়ে সেটি নিয়ন্ত্রণে নেন।

৩১ মিনিটে অনেকটা দূর থেকেই গোলে শট নেন তহুরা। তবে পাকিস্তানের গোলরক্ষক ছিলেন প্রস্তুত। পরের মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠেন মনিকা। কিন্তু সফল হতে পারেননি তিনি। বরং বাংলাদেশকে স্তব্ধ করে খেলার ৩২ মিনিটে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। বক্সের নিজেদের অর্ধ থেকে জামিনা সামিন মালিককে লং পাস দেন রামিন ফরিদ। তবে বল পেয়েছিলেন সিউলি আজিম। কিন্তু এই ডিফেন্ডার বল পায়ে লাগালেও ক্লিয়ার করতে পারেননি। তাকে ও আফিদা খন্দকারকে টপকে আলতো টোকায় জালে বল জড়ান পাকিস্তানের সামিন মালিক।

৪৩ মিনিটে ঋতুর শট ক্রসবারে লাগলে গোলবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে ডানদিক থেকে দূরপাল্লার শট নেন ঋতু। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের, বারে লেগে ফিরে আসে বল।

দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ আগের মতো দাপট অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে সাবিনার জায়গায় কৃষ্ণা রানী নামেন। তাতে আক্রমণের ধার বাড়ে। তবে গোল আসছিল না। তিন পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা জেগেছিল। তবে যোগ করা সময়ের গোলে এক পয়েন্ট নিশ্চিত করলে হাফ ছেড়ে বাঁচে বাংলাদেশ। বাঁ দিক থেকে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ঋতুপর্ণার মাপা ক্রসে শামসুন্নাহার জুনিয়র আলতো হেডে গোলকিপারকে পরাস্ত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২৪
এআর/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।