ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ক্রিকেটার থেকে ফুটবলার জিকু!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৬
ক্রিকেটার থেকে ফুটবলার জিকু! ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়াম থেকে: এক সময় ক্রিকেটের প্রতিই ছিল তার ভালবাসার টান। ময়মনসিংহ নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে নিয়মিত প্র্যাকটিস করতেন।

২০০৪ সালের শেষের দিকে এক বন্ধু মারফত জানতে পারেন ফুটবলে অনূর্ধ্ব-১৫ টিমের ক্যাম্পিং’র কথা।

খালি পায়েই সেই ক্যাম্পে গিয়েছিলেন জিকু। কিন্তু কোচ তাকে সুযোগ দেননি। মুখ ভার করে বাবা আব্দুল কুদ্দুস দুলালকে বলেছিলেন বুট ছাড়া ক্যাম্পে ফুটবলের সুযোগ না পাওয়ার কথা। ছেলের কষ্ট লাঘবে বুট কিনে দিলেন বাবা। বল পায়ে প্রথম দিনেই নজর কাড়েন কোচের।

ক্রিকেট ছেড়ে জাকির হোসাইন জিকু’র ফুটবলার হবার গল্প এমনই। এরপর জিকু সুযোগ পান অনূর্ধ্ব-১৬ টিমে খেলার। পরে ময়মনসিংহ লিগে মোহামেডান স্পোর্টিং কাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার গৌরবও অর্জন করেন।

এরপর খেলা চলাকালীন সময়ে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বর্তমান কোচ মারুফুল হকেরও দৃষ্টি কাড়েন এ ফুটবলার। তার হাত ধরেই ২০০৯-১০ সালের মৌসুমে সুযোগ পান ওয়ারী ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগ খেলার। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্রিকেটার জিকু হয়ে উঠেন পুরোদস্তুর ফুটবলার।

২০১২ সালে টিম বিজেএমসি’র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। এ পর্যন্ত তার ফুটবলের ক্যারিয়ারে রয়েছে ৬ টি গোল।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বিরুদ্ধে টিম বিজেএমসি’র হয়ে মাঠে নামেন দলটির নির্ভরযোগ্য এ ফরোয়ার্ড। ক’দিন আগে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে কোনো গোল করতে না পারলেও শেখ রাসেলের বিরুদ্ধে ম্যাচের ৫০ মিনিটেই জিকু সমতাসমূচক গোল করেন।

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বাড়ি জিকুর। নিজের ঘরের মাঠে ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরে গোল করতে পেরে আনন্দে উদ্বেল জিকু।

ম্যাচ শেষে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে জিকু বলেন, ‘নিজের মাঠে গোল করবো, এমন আশা করিনি। সবাই চাচ্ছিল আমি গোল করি। ভাগ্য আমার সহায়ক হয়েছে। আমি গোল করতে পেরেছি। ’

জিকুর ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন বাবা আব্দুল কুদ্দুস দুলালসহ পরিবারের স্বজনরা। সেই কথা জানিয়ে জিকু বলেন, ‘আমার জন্য অনেকেই ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মাঠে এসেছিল। সবাই আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। ’

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও ঢাকা থেকে আসা মিডিয়া কর্মীদেরও আলোচনায় ছিলেন জিকু।

জিকু চাপ সহ্য করতে পারছেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলের কোচ ও ম্যানেজার বললেন, ‘জিকু ভালো খেলোয়াড়। কিন্তু নিজের জেলায় এসে ও নার্ভাস। দর্শক ও বাড়তি মানসিক চাপ রয়েছে ওর। ’

এ বিষয়ে বাংলানিউজকে জিকু বলেন, ‘নিজের মাঠে বেশি ভালো খেলতে গিয়েই বেশি নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। এরপরেও গোল করেছি। আর আমার নিজের জেলার দর্শকদের এ গোল উৎস্বর্গ করেছি। ’ জাতীয় দলে খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন বলেও জানান জিকু।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, আগষ্ট ১২, ২০১৬
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।