ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

নীল-হলুদ রঙ মেখে অটোগ্রাফের খোঁজে

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৬
নীল-হলুদ রঙ মেখে অটোগ্রাফের খোঁজে ছবি: অনিক খান-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম থেকে: দুর্বল উত্তর বারিধারা কাবকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ম্যাচ শেষে হোটেলে যেতে বাসে চেপেছেন জাতীয় দল ও চট্রগ্রাম আবাহনীর কাপ্তান মামুনুল ইসলাম মামুন।

কিন্তু বাসের জানালা দিয়ে তার অটোগ্রাফ পেতে তাকে যেন পাকড়াও করেছেন ফুটবলপ্রেমী কয়েক তরুণ সমর্থক।

 

‘ভাই আমাকে একটা অটোগ্রাফ দেন। আমাকে অটোগ্রাফ না দিয়ে যাবেন না’ ইত্যাকার অনুরোধ তাদের কন্ঠস্বরে। কাউকে কাউকে দেখা গেলো সেলফি স্টিকে ছবি তুলতেও।  

পুলিশ সরিয়ে দিতে চাচ্ছেন ওদের। কিন্তু এ সমর্থকরা কোন বাঁধাই যেন মানবে না।  

ভক্তদের মন রাখতেই উদ্দীপনা নিয়েই কলমের খোঁচায় অটোগ্রাফ বিলিযে দিচ্ছিলেন মামুনুল। কিন্তু বেরসিক বাস চালকের  তর সইছে না!

গুটিকয়েক তরুণকে অটোগ্রাফ দেবার পরেই ছুটে চললেন চালক। চালকের এমন কান্ডে হতাশার স্পষ্ট ছাপ এ ভক্তকূলদের চোখে-মুখে।

মামুনুলরা ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম ছাড়ার পর বাংলানিউজের ক্যামেরাবন্দি হলেন চট্রগ্রাম আবাহনীর এ সমর্থকরা। দলটির ভক্ত তরুণদের এ দলে রয়েছেন সাজিদ, হৃদয়, সিয়াম, নির্জন, আজমি, বিজন, তূর্য, রিজু, প্রবাদ, নোবেল, অনিক, রিয়ান, সাকিব, ফারদিন ও রিয়াদসহ অনেকেই।  

ওরা ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি ল্যাবরেটরী স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।  

ফুটবল আর চট্রগ্রাম আবাহনীর টানেই নিজেদের মুখে দলটির নীল-হলুদ জার্সি এঁকে মাঠে এসেছিল ওরা। হাতে ছিল আবাহনী লেখা প্ল্যাকার্ড।  

খেলা শেষ হতেই মূলত অটোগ্রাফ নিতে স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখে জড়ো হয়েছিলেন এ তরুণরা।  

রোববার (১৪ আগস্ট) বিকেলে স্টেডিয়ামের সাধারণ গ্যালারিতে দর্শক উপস্থিতি ছিল হাতেগুনা। বরাবরের মতো এবারো ছিল ভুভুজেলা নামক কর্কশ বাঁশির অত্যাচার! 

গ্যালারিতে দর্শক শূন্যতা মোটেও বুঝতে দেয়নি নীল-হলুদ জার্সি মুখে আঁকা এ পাগলাটে সমর্থকরা। এ তরুণদের ভাষ্যে, ময়মনসিংহের মানুষ ফুটবল পাগল।

কিন্তু স্থানীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থা কাঙ্ক্ষিত প্রচারণা চালাতে পারেনি। নগরজুড়ে টিকিটের কোন বুথ নেই। প্রচারণার পাল্লাটা ভারী হলে আয়োজকদের হতাশ হতে হতো না।  

সাজিদ, হৃদয় ও সিয়ামদের কন্ঠে উঠে আসলো, ময়মনসিংহ পর্বে চট্রগ্রাম আবাহনীর দু’টি ম্যাচেই দল বেধে ওরা মাঠে এসেছিল।  

নিজেদের পছন্দের এ কাবকে উৎসাহ দিতেই মূলত তাদের এখানে আসা। এ দলের বেশিরভাগই জাতীয় দলের খেলোয়াড়। ওদের হাত ধরেই নতুন স্বপ্ন বুনছে ফুটবল পাগল সমর্থকরা।  

উদ্দ্যমী তরুণ অনিক, ফারদিন ও রিয়াদ বলেন, ২০০৪ সালে নিটল টাটা জাতীয় ফুটবল লীগ ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে ছিল আমাদের শিশুকাল। ফলে ওই সময় মাঠে আসা হয়নি। এবার আমরা চট্রগ্রাম আবাহনীকে সমর্থন করে মাঠে এসেছি। ওরাই এবার শিরোপা জিতবে।  

দীর্ঘ সময় পর ময়মনসিংহে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) একটি পর্ব অনুষ্ঠিত হওয়ায় আনন্দে উদ্বেল এ তরুণরা। তাদের ভাষ্যে, ‘ফুটবলকে গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরই আমরা ময়মনসিংহে বিপিএল’র খেলা চাই। দেশের ফুটবলের জাগরণের সময়েই এটা আমাদের দাবি। ’

বাংলাদেশ সময় ২০১০ ঘন্টা, আগষ্ট ১৪, ২০১৬
এমএএএম/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।