ঢাকা: ‘কাল আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন একটি ম্যাচ। ইতিহাস আমাদের পক্ষে।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ভুটানের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের প্লে অফ-২’র প্রথম লেগের ম্যাচে সফরকারী ভুটানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাফুফে সম্মেলন কক্ষে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কোচ বলেন, ‘ভুটানের চেমচো গ্যালস্টেন এর মতো একজন প্লেয়ার আছে। যে একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু এতে হতাশ হবার কিছু নেই। ভুটানকে আমরা অবজ্ঞা করছি না। তবে, সময় এসেছে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার। বাংলাদেশ ফুটবলকে এই কঠিন চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হতে হবে। আমরা জয়ী হবার জন্যই মাঠে নামবো। ’
আর গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচটিকে সামনে রেখে সমৃদ্ধ এক আক্রমণভাগ নিয়ে ২৩ সদস্যের স্কোয়াড সাজিয়েছেন সেইন্টফিট। এই ২৩ জনের মধ্যে আটজনই আক্রমণ ভাগের। আর সমৃদ্ধ আক্রমণ সাজানোর পেছনে কোচের যুক্তি একটিই, ‘গোল এবং জয়’।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সবাই জানে বাংলাদেশ দলের মূল সমস্যা কোথায়। আমরা গোল করার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে। আপনি যদি খেয়াল করেন দেখবেন আমি একটি আক্রমণভাগ নির্ভর দল নির্বাচন করেছি । বাংলাদেশকে গোল করতে হলে এবং ম্যাচ জিততে হলে এর বিকল্প নেই। ’
গেল ১ সেপ্টেম্বর মালেতে প্রস্তুতি ম্যাচে স্বাগতিক মালদ্বীপের বিপক্ষে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। যা কোচ হিসেবে সেইন্টফিটের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট ছিল এবং সেখানে রীতিমতো ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তবে ভুটানের বিপক্ষে এই ম্যাচটিকে নিজের ঘুরে দাঁড়ানোর অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে খেতে চাইছেন লাল-সবুজের এই খন্ডকালীন কোচ।
তিনি জানান, ‘মালদ্বীপের বিপক্ষে ৫-০ গোলের পরাজয় আমার জীবনের সব থেকে বড় ব্যর্থতা। কখনোই পাঁচ গোলে আমার দল হারেনি। কিন্তু এর মাঝেও কথা আছে। নিজেকে বাঁচানোর জন্য বলছি না। একটি প্রদর্শনী ম্যাচে স্থানীয় রেফারি দিয়ে খেলা চালালে কিছু সমস্যা থাকে। মালদ্বীপের রেফারিরা অফসাইড দেখেননি, ফাউল দেখেননি। এমন অনেক কিছুই আমাদের বিপক্ষে হয়েছে। এর মাঝেও প্রথমার্ধটা বাংলাদেশ খুব ভালো খেলেছিলো। দ্বিতীয়ার্ধে সব কিছু কেমন জানি ভেঙে পড়ে। সেখানেই আমি মনযোগ দেব। ’
ভুটানের বিপক্ষে এই পর্যন্ত ৫ বারের মুখেমুখি লড়াইয়ে ৪ বারই জয়ের শেষ হাসি হেসে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। এবার জিততে পারলে হবে লাল-সবুজের পঞ্চম আর সেইন্টফিটের প্রথম জয়। তাই জয়ের দিকেই পাখির চোখ করেছেন আশরাফুল ইসলাম রানাদের এই খন্ডকালীন কোচ।
এদিকে ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে সেরা ২৩ স্কোয়াডে জায়গা হয়নি অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের। তাই রাগে-ক্ষোভে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই দেশসেরা মিডফিল্ডার। তাতে অবশ্য সেইন্টফিট এতটুকু বিচলিত নন। মামুনুলের জায়গায় দলে নিয়েছেন ফরোয়ার্ড আব্দুল্লাহকে। আর তার মাঝেই দারুণ কিছুর সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ সেইন্টফিট।
এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘বেশ কিছু সিনিয়র খেলোয়াড় বাদ পড়েছে। যেমন মামুনুল ইসলাম। কিন্তু তার জায়গায় নবীন আব্দুল্লাহ মোটেও খারাপ করেনি। আমার প্রতিটি বিভাগেই ব্যাকআপ রয়েছে। ভুটান দ্রুতগতির ফুটবল খেলে। সেভাবেই আমি আমার পরিকল্পনা সাজাবো। হোম ম্যাচে জয় বড় ব্যাপার। সাথে অ্যাওয়ে ম্যাচে দলকে গোল করতে না দেওয়াটাও জরুরি। দু’দিকেই আমাদের লক্ষ্য থাকবে। ’
ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২৩ সদস্যের স্কোয়াড: আশরাফুল ইসলাম রানা (অধি), রায়হান হাসান, মনসুর আমিন, তপু বর্মন, মেহেদি হাসান তপু, আতিকুর রহমান ফাহাদ, আতিকুর রহমান মিশু, শাখাওয়াত হোসেন রনি, নাবিব নেওয়াজ জীবন, হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস, জুয়েল রানা, এনামুল হক শরীফ, দিদারুল আলম, মেহবুব হাসান, রুবেল মিয়া, রেজাউল করিম, আরিফুল ইসলাম, মামুন মিয়া, আব্দুল্লাহ, ইমন মাহমুদ, জাফর ইকবাল, শহিদুল আলম ও সোহেল রানা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
এইচএল/এমআরপি