ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

ফেনী-বারিধারা গুরুতর অপরাধ করেছে: আসলাম

মহিবুর রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৭
ফেনী-বারিধারা গুরুতর অপরাধ করেছে: আসলাম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সকার ক্লাব ফেনী ও উত্তর বারিধারা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের প্লে অফ ম্যাচ খেলতে মাঠে না এসে যে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা দেশের ফুটবলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বললেন সাবেক ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম। এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ ফুটবলে ফেডারেশনের বিদ্যমান আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে বলেও তিনি মনে করছেন।

‘ফুটবেলের জন্য একটি ক্ষতিকর দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো ফেনী সকার ও উত্তর বারিধারা। যেহেতু লিগ কমিটি আছে তাই তারাই নির্ধারণ করবে যে তাদের পরিণতিটা কি হবে।

বাইলজের মাধ্যমে একটা লিগ পরিচালিত হয়। লিগের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করে মৌসুমের শুরুতেই এটা তৈরি করা হয়। তারা মাঠে না এসে যে গর্হিত অপরাধ করেছে, লিগ কমিটির চেয়ারম্যানকে যেভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে তাতে তাদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। ’ জানান আসলাম।

দেশের ফুটবলে এ যাবতকালে যা ঘটেনি তাই ঘটেছে গত বুধবার (৪ জানুয়ারি)। প্রিমিয়ার লিগে রেলিগেশন এড়াতে বিকেল সাড়ে তিনটায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নামার কথা ছিল এবারের প্রিমিয়ার লিগে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে থাকা দুই দল ফেনী সকার ও উত্তর বারিধারার। কিন্তু ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে মাঠে দেখা গেল না দু’দলের কাউকেই।

তবে প্লেয়াররা হাজির না থাকলেও রেফারি জসিমউদ্দিন, সহকারী রেফারি ফেরদৌস আহমেদ এবং এমজেডএফ নাহিদ ঠিকই উপস্থিত ছিলেন। ম্যাচ শুরুর ৫ মিনিট আগে ফিফার সংগীত বেজে ওঠে। সেই সঙ্গীতের তালে তালে ফিফা ফেয়ার প্লে পতাকা নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন রেফারিরা। মাঠে প্রবেশ করে ১৫ মিনিট অপেক্ষার পরে মাঠ ছেড়ে বেরিয়েও যান তারা। কিন্তু ফেনী ও বারিধারার টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
 
ফুটবলে এমন স্বেচ্ছাচারিতা কেন? ক্লাবগুলোই বা এমন সাহস পেল কোথায়? উত্তরে আসলাম জানান, ‘ফুটবল আজকে যেখানে দাঁড়িয়ে সেখানে এমন ঘটনা ঘটা অসম্ভব কিছু নয়। বিগত দিনে বাফুফের অনেকগুলো পুঞ্জিভূত ভুলের খেসারত আজ এভাবে দিতে হলো। কেননা বাফুফে এর আগেও ছোট ছোট অনেক অনিয়মকে প্রশ্রয় দিয়েছে। যার ফলে এত বড় অন্যায় করতে ক্লাব দুটোকে একবারও ভাবতে হয়নি। ’

বড় অনিয়ম না করলেও ছোট ছোট অনিয়ম বাংলাদেশ ফুটবলের রুটিনে পরিণত হয়েছে একথা বলাই যায়। সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে একাধিকবার সূচি পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ ফুটবলের পেশাদার লিগ কমিটি। শুধু প্রিমিয়ার লিগই কেন? গেল মৌসুমে স্বাধীনতা কাপ ফুটবলে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে ছাড়াই টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত সূচি ঘোষণার পরেও বাফুফে একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে দু’দলকেই অন্তর্ভুক্ত করে জন্ম দিয়েছিল আরেক নাটকের।

এর মাধ্যমে বাফুফে স্পষ্টত প্রমাণ দিয়েছে যে, ক্লাবগুলোর উপরে তাদের নিয়ন্ত্রণ একেবারেই নেই। একথা আমরা সবাই জানি যে বাফুফেকে বলা হয় দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, দেশের ক্লাবগুলো হরহামেশাই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে এভাবে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখানোয় যার সবশেষ উদাহরণ হয়ে থাকলো ফেনী সকার ও বারিধারার মাঠে না আসার এই বিরল ঘটনাটি।

এমন ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আসলাম দেশের ক্লাবগুলোকে আইনের আওতায় এনে আইনের শাষণ মেনে নেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি কোনো ক্লাবই আইনের উর্ধ্বে নয়। তাদেরকে আইন মেনেই লিগ খেলা উচিত, সে যত বড় ক্লাবই হোক না কেন। ’

সব শেষে দেশের ফুটবলের উন্নয়নে সকার ক্লাব ফেনী ও উত্তর বারিধারার যথাযথ শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে বাইলজের যথার্থ প্রয়োগের প্রয়োজনীতার কথা উল্লেখ করে আসলাম জানান, ‘আমাদের ফুটবল আর কত ভুগবে? বাইলজ অনুযায়ী যে শাস্তির ব্যবস্থা করা আছে তার যথাযথ প্রয়োগ যেন এই দু’দলের বিরুদ্ধেই নেয়া হয়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ৫ জানুয়ারি ২০১৭
এইচএল/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।