মমতার পরশে প্রধানমন্ত্রীও ‘নাতিকে’ জড়িয়ে ধরে ছবি তুলেন। স্বভাবতই রঙিন ও উৎসবমুখর এই মিডফিল্ডারের ভুবন।
ফুটবলের এই তারকা কিশোরী বলছিল, ‘এ পর্যন্ত চার থেকে পাঁচবার প্রধানমন্ত্রীর সান্নিধ্য পেয়েছি। আমরা যতোবার জিতি, তিনি আমাদের সংবর্ধনা দেন। আমরা সবাই তাকে ‘নানু’ বলে ডাকি।
‘তিনি আমাদের ভীষণ আদর করেন। রাষ্ট্রের সরকার প্রধান হলেও প্রধানমন্ত্রী অনেক স্নেহপরায়ণ আর মমতাময়ী। ঠিক যেনো আমাদের মা-খালা আর নানীর মতো। তিনিই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণার নাম। তার প্রেরণাতেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি’
যুব সাফের ইতিহাসে নেপালকে হারিয়ে টিম বাংলাদেশের অসামান্য অর্জন, প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শুক্রবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে বাংলানিউজকে এভাবেই বলছিল তহুরা।
আত্নবিশ্বাসী তহুরারা এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের বাছাই পর্বেও ভিয়েতনামকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
দিন কয়েক আগে ভুটানের মাটিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলের ফাইনালের মহারণে নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে অপরাজেয় এই কিশোরীরা রচনা করে নতুন এক অধ্যায়।
মহিলা ফুটবলে নতুন দিগন্তের এই সূচনাপথে নির্ভরতার আরেক নাম কলসিন্দুরের তহুরাই। বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) গণভবনে অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল দলের সংবর্ধনায় তাদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে শৈল্পিক ফুটবলের তহুরা বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সরকারি করে দিতে। ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা দিয়েছেন। আমাদের সামনেই তাৎক্ষণিক নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের কোনো অভাব থাকবে না। তিনি আমাদের বাড়িও করে দেবেন। ’
পুরুষ ফুটবলারদের ব্যর্থতায় এখন নারী ফুটবলারদের জয়জয়কার। চলতি বছরই লাল-সবুজের কিশোরীরা জয় করেছে চারটি টুর্নামেন্ট। সব মিলিয়ে তাদের ‘বৃহস্পতি’ এখন তুঙ্গে।
নারী ফুটবলের সোনালি প্রজন্মের অন্যতম ফেরিওয়ালা মারিয়া মান্দা। কলসিন্দুরের এই ফুটবল কন্যাও আছে ফুরফুরে মেজাজে।
প্রধানমন্ত্রীর এক পাশে তহুরা, অন্য পাশে মারিয়া। এমন ছবি দেশের সব গণমাধ্যমের পাশাপাশি ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে তহুরার ফোন থেকেই উচ্ছ্বসিত মারিয়া বলেন সেই কথাই, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজের নাতির মতোই আমাদের আদর করেন। তিনি সব সময় আমাদের পাশে থাকবেন বলেছেন।
‘আমরা ভালো খেলে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনলে প্রধানমন্ত্রী অনেক খুশি হন। তিনি আমাদের যেভাবে উৎসাহ দেন, তাতে আমরা আরও অনুপ্রাণিত হই। ’
প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার পরিপ্রেক্ষিতে মারিয়া বলেন, ‘একজন প্রধানমন্ত্রী এতো সহজ-সরল হতে পারেন। বিশ্বাসই হয় না। যতোবার তাকে দেখি মুগ্ধ হই। তিনি আমাদের প্রত্যেককে ১০ লাখ করে টাকা দিয়েছেন।
এই টাকা আমরা ব্যাংকে রাখবো। প্রয়োজনে কলসিন্দুরে জমি কিনবো। একদিন আমাদের ভালো বাড়ি হবে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সব করে দেবেন। ’
মারিয়া-তহুরারা পাকিস্তানকে ১৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ভুটানের মাটিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলে দারুণ সূচনা করেছিল। নেপালকে ফাইনালে ১-০ গোলে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা।
তবে বাংলার এই কিশোরীদের চোখের সামনে এখন এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের তাজিকিস্তান মিশন।
আগামী ১৯ অক্টোবর সকালে তাজিকিস্তানের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে ওরা। ভালো করতেই সবার দোয়া চায় মারিয়া-তহুরারা। দুরন্ত কিশোরীদের আরেকটি সাফল্যের প্রত্যাশায় দেশের মানুষ।
বাংলাদেশ সময় ২০৫২ ঘন্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৮
এমএএএম/টিএ