কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়ে পিএসজির নাটক শেষ পর্যন্ত সমাপ্ত হয়েছে কয়েকদিন আগে চুক্তি নবায়ন করার পর। এর আগে ফরাসি এই তারকা রিয়াল মাদ্রিদে আসার ইঙ্গিত অনেকভাবেই দিয়ে গেছেন।
গত কয়েক মৌসুম ধরেই রিয়াল মাদ্রিদে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করে যাচ্ছিলেন এমবাপ্পে। ফরাসি এই ফরোয়ার্ডকে নিজেদের দলে ভেড়াতে কম চেষ্টা করেনি রিয়ালও। কয়েকবার করে প্রস্তাব দেওয়ার পরেও রাজি হয়নি পিএসজি। শেষ পর্যন্ত বদলে গেলেন এমবাপ্পে নিজেই। পিএসজির সঙ্গে তিন মৌসুমের জন্য চুক্তির মেয়াদ বাড়ান তিনি। তার এমন আচরনের পেছনে ফ্রান্স আর কাতারের রাষ্ট্র প্রধান ও প্যারিসের মেয়র ফোন করে চাপ দেওয়ার কথা জানান রিয়াল সভাপতি।
যে ফুটবলারকে নিয়ে রিয়াল সমর্থকরা আশায় বুক বেঁধেছিল, সেই এমবাপ্পেই শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদল করলো। তাই অনেকের কাছেই ‘বিশ্বাসঘাতক’ হয়ে উঠেছিলেন এই ফরোয়ার্ড। তবে রিয়াল সভাপতি বলছেন বিশ্বাসঘাতকতা করেনি এমবাপ্পে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপে সে তার মত পরিবর্তন করে।
এল চিরিঙ্গিতো টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেরেজ বলেন, ‘এমবাপ্পে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। রিয়ালের হয়ে খেলার ইচ্ছার কথা সে সবাইকে বলেছিল। সে বলেছিল, এটাই তার স্বপ্ন। গত আগস্টে ওরা (পিএসজি) তাকে ছাড়েনি, তারা প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। শেষ পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু (সম্ভাব্য সময়ের) ১৫ দিন আগে সবকিছু বদলে যায়। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপে তার মধ্যে কিছু বাধ্যবাধকতা চলে আসে। ’
চাপের কারণেই এমবাপ্পের ভেতর এমন পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে রিয়াল সভাপতি বলেন, ‘হুট করেই আমরা এমন এক এমবাপ্পেকে দেখলাম, যে আর আগের মতো নেই। যে এমবাপ্পেকে আমি আনতে চেয়েছিলাম, এই এমবাপে সেরকম নয়। মনে হচ্ছিল, তার স্বপ্নই বদলে গেছে। ’
রিয়াল সভাপতি চাপের তীব্রতাও উল্লেখ করেন তার বক্তব্যে। স্বয়ং ফ্রান্সের সভাপতি যেখানে ফোন করে সেখানে স্প্যানিশ ক্লাবটির আর কি করার থাকে! হতাশ কণ্ঠে পেরেজ জানান, এই এমবাপ্পে আগের এমবাপ্পে নয়।
তিনি বলেন, ‘এবাপ্পেকে ফোন করেছিল (ইমানুয়েল) ম্যাক্রোঁ, প্রচণ্ড চাপ ছিল দুটি দেশের রাজনৈতিক চাপ ২৩ বছর বয়সী একজনের জন্য অনেক তীব্র। আইনগত কারণে আমরা প্রাক-চুক্তি করতে পারিনি। তবে যাই হোক, বদলে যাওয়া এমবাপেকে আমি চিনি না। বলা ভালো, এই এমবাপে আমার এমবাপে নয়। ’
এদিকে এমবাপ্পেকে তার স্বপ্নের ক্লাবেই দেখতে চেয়েছিলেন তার মা। এই ব্যাপারে পেরেজ বলেন, ‘এমবাপের মা চাচ্ছিলেন ছেলে রিয়ালে আসুক, কারণ মা তো ছেলের ছোটবেলার স্বপ্নের কথা জানেন। ওর মায়ের সঙ্গে কথা হয়নি আমার। তবে শুনেছি তিনি বিব্রত। ’
শেষ পর্যন্ত আর রিয়ালে আসা হয়নি এমবাপ্পের। বদলে যাওয়ার কারণে ক্লাবও আর আগ্রহ দেখায়নি। একজন ফুটবলারের জন্য ক্লাবের মূল্যবোধের সঙ্গে কখনও আপোস করা হবে না বলেও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন রিয়াল সভাপতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
আরইউ