ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

বিশ্বকাপের আগে কাতারে ২৯টি কুকুর হত্যার ঘটনায় তোলপাড়

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
বিশ্বকাপের আগে কাতারে ২৯টি কুকুর হত্যার ঘটনায় তোলপাড়

বছরের শেষদিকে কাতারে বসবে ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ দেশটি আয়োজকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে সমালোচলার মুখে পড়েছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তো আছেই, এবার দেশটিতে নির্বিচারে কুকুর নিধনের মতো ঘটনাও ঘটেছে, যা নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম 'দ্য গার্ডিয়ান' জানিয়েছে, কাতারে অস্ত্রধারী কয়েকজন ব্যক্তির রাইফেলের গুলিতে ২৯টি কুকুর মারা গেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এর বেশি আর কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু প্রাণী অধিকার কর্মীরা এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, গৃহপালিত প্রাণীদের সুরক্ষায় যে আইন আছে, তার ব্যবহার করছে না সরকার।  

বার্তা সংস্থা 'এএফপি'-কে প্রাণী অধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে গত ১০ জুলাই, রাজধানী দোহার কাছে এক শিল্পাঞ্চলে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন চার ব্যক্তি, এর মধ্যে দুই জনের হাতে ছিল রাইফেল। প্রথমে তারা ফ্যাক্টরির নিরাপত্তারক্ষীদের ভয় দেখান এবং তারপর ২৯টি কুকুরকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেন। তাদের গুলিতে আরও ৩টি কুকুর আহত হয়, যার মধ্যে ২টি আবার গর্ভবতী।

কোন উদ্দেশ্যে কুকুরগুলোকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনও অজানা। কিন্তু প্রাণী অধিকার কর্মীদের দাবি, কাতারে এমন অমানবিক ঘটনা অহরহ ঘটে। দেশটির অনেকের বিশ্বাস, ইসলাম ধর্মে কুকুর 'অপবিত্র'। একজন অধিকার কর্মী জানিয়েছেন, শ্যুটারদের মধ্যে একজনের ছেলেকে নাকি কুকুর কামড়েছিল। কিন্তু ওই কম্পাউন্ড উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা এবং সেখানে কোনো শিশু কুকুরদের সঙ্গে খেলতে যাওয়ার উপায় নেই।  

অধিকার কর্মীদের দাবি, কাতারে সম্প্রতি কুকুর এবং পাখি হত্যার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে রাইফেল ব্যবহার করে ফ্লেমিংগো পাখি শিকার করা দেশটির কিছু মানুষের জন্য শখে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে প্রাণী কল্যাণের সঙ্গে জড়িত 'পাওস রেসকিউই কাতার' রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে ইনস্টাগ্রামে লিখেছে, 'এক্ষেত্রে কোনো আইন প্রয়োগের বালাই দেখা যাচ্ছে না। এর মানে হচ্ছে, এই দানবদের (প্রাণী হত্যাকারী) কখনোই বিচারের আওতায় আনা হবে না। '

বিষয়টি কাতারে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। কিন্তু কাতারি আমিরের বোন শেইখা আল মায়াসা বিনতে হামাদ আল থানি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কুকুর নিধনের ঘটনাটিকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলেছেন।  

এদিকে কুকুর নিধনের ঘটনার প্রেক্ষিতে কাতারের সরকারের পক্ষ থেকে ওই শিল্পাঞ্চলে থাকা সব কুকুরকে উদ্ধার করে একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে; যেখানে একসঙ্গে তিন হাজার রাখা যাবে। কিন্তু অধিকার কর্মীদের অভিযোগ, ওই আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। তারা সেখানে আশ্রিত কুকুরগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।  

কুকুর নিধনের এই খবর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর কাতারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টিও ফের আলোচনায় উঠে আসতে শুরু করেছে। বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণকাজের সঙ্গ জড়িত শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনার কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন অনেকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।