ঢাকা: চিকিৎসক এবং রোগীর স্বজনদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা কমাতে ইমারজেন্সি ওয়ার্ডকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বুধবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘রোগীর সেবা নিশ্চিতে চাই স্বাস্থ্যকর্মীর নিরাপদ কর্মস্থল’ শীর্ষক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্য সেবায় আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। আমাদের পাঁচটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ১১০টি মেডিকেল কলেজ এবং অনেক ইনস্টিটিউট হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে গেছে। আমাদের গড় আয়ু ৭৩ বছর হয়েছে। দেশেই এখন কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট, হার্টের বাইপাস সার্জারি হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবায় আমাদের বিভিন্ন অর্জন রয়েছে। দেশে ৯৮ শতাংশ ওষুধ তৈরি হয়। কিন্তু দেশে কিছু কিছু ঘটনা ঘটে, যা আমাদের স্বাস্থ্য সেবার দুর্নাম হয়। মানুষের কাছে ছোট হতে হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, একজন চিকিৎসক, নার্স বা যারা স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন, তারা অনেক প্রেসারে থাকেন, কারণ আমাদের দেশে অনেক রোগী। স্বাস্থ্য কর্মীরা ইচ্ছাকৃত কেউ ভুল করার কথা নয়। করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েও স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা দিয়েছেন। তারপরেও মাঝেমধ্যে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে দুর্ঘটনা এবং সহিংস ঘটনা ঘটে। সেই কারণেই আজকের আলোচনা। আমরা চাচ্ছি কীভাবে এ সহিংস ঘটনাগুলো কমানো যায়। আজকের আলোচনা থেকে অনেক বিষয় বেরিয়ে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন, যেখানে রোগী এবং যারা স্বাস্থ্য সেবা দেবেন তাদেরও সুরক্ষার বিষয়টা থাকবে। আইনটি একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি আগামী অধিবেশনে আমরা সংসদে আইনটি পাশের জন্য উপস্থাপন করতে পারবো। সবার মতামত গ্রহণের মাধ্যমে বর্তমানে এ আইনটি একটি পর্যায়ে এসেছে। এখনো প্রস্তাব আসছে। বেশি আলোচনা করতে করতেই এ আইন বিলম্বিত হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা রোগী তারা চান হাসপাতালের সেবায় তারা সুস্থ হয়ে যাবেন। মৃত্যু পথযাত্রীদের স্বজনরাও মনে করে হাসপাতালে গেলে রোগী ভালো হয়ে যাবে। ঐ সময় যদি হাসপাতালে ডাক্তার না থাকে, মেশিন যদি না চলে তখন রোগীর স্বজনরা অঘটন ঘটায়, আবার এক্সিডেন্টের রোগী হয়তো আগেই মারাই গেছে, ডাক্তার মৃত ঘোষণা করলে আত্মীয় স্বজনরা চড়াও হয়ে যায়। তারা ভাবে ডাক্তার একটু আগে দেখলে রোগী বেঁচে যেত। আমার মনে হয় ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, এটাকে আমাদের আরও বেশি করে সমৃদ্ধ করতে হবে। এখানে আরো বেশি লোকবল এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দিতে হবে। ডাক্তার আর রোগীর মধ্যে কাউন্সিলিং করে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন।
সেমিনারের অংশগ্রহণ করে মতামত তুলে ধরেন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা আবুল বাসার খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া, ফার্মাসিউটিক্যালস অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি এবং সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যপক ডাক্তার এ বি আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক ডাক্তার লিয়াকত আলী, অধ্যাপক ডাক্তার মোদাচ্ছেরসহ স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২৩
আরকেআর/জেএইচ