কুমিল্লা: কুমিল্লার বরুড়ায় নিখরচায় চোখের চিকিৎসা পেয়েছেন তিন হাজারের বেশি মানুষ।
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ মে) বরুড়া উপজেলার ঝলম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে এই সেবা দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠ ভর্তি রোগী। সেবাগ্রহিতাদের বেশিরভাগ নিম্ন আয়ের মানুষ। টোকেন নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছেন তারা। চোখ দেখা শেষে রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া চশমা দেওয়াসহ যাদের চোখের ছানি ও মাংস বৃদ্ধির সমস্যা রয়েছে, তাদেরও বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, বরুড়া পাশাপাশি কুমিল্লার লাকসাম, লালমাই, পাশের চাঁদপুর, নোয়াখালী থেকেও মানুষজনও এই ক্যাম্পে আসেন সেবা নিতে। বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ১৪ জনের একটি বিশেষজ্ঞ টিম এখানে সেবা দিতে আসেন।
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. সালেহ আহম্মেদের নির্দেশনায় চিকিৎসক দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ডা. মো. রিপন আলী।
সেবা দেওয়ার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক জাকারিয়া তাহের সুমন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মাহবুবুর রহমান, পরিচালক কাউসার আলম সেলিম ও সমন্বয়ক মোয়াজ্জেম হোসেন কল্লোল।
তারা বলেন, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই চিকিৎসাসেবা বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে। আজ আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ এখানে সেবা নিতে এসেছেন। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন এখানে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। মানুষ সেবা নিয়ে চোখের সমস্যা মুক্ত হয়ে যে হাসি দেন তা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমরা বরুড়ায় ২টি সেবা ক্যাম্প করেছি। আশা করছি বসুন্ধরা আই হসপিটালের সঙ্গে আরও ৪টি ক্যাম্প যৌথ উদ্যোগে করতে পারব। বসুন্ধরা আই হসপিটালের সহযোগিতায় চোখের সমস্যা মুক্ত বরুড়া উপজেলা গড়ে তুলতে পারব।
এদিকে বিনামূল্যে এমন সেবা পেয়ে খুশি রোগীরা সবাই। বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা।
বরুড়ার বেওলাইন গ্রামের ৮০ বছর বয়সী কামাল হোসেন বলেন, এই অঞ্চলে এমন উদ্যোগ আর দেখিনি। তারা বিনা খরচে আমাদের সেবা দিয়েছে, ওষুধ দিয়েছে। দোয়া করি, মহান আল্লাহ তাদের ভালো করুক।
ওড্ডা গ্রামের মরিয়ম বেগম বলেন, আমার বয়স ৮০ বছর। চোখে ভালোভাবে দেখি না। দীর্ঘদিন ধরে চোখ নিয়ে যন্ত্রণায় আছি। কিন্তু টাকার জন্য অপারেশন করাতে পারছিলাম না। ডাক্তার ভালোভাবে আমার চোখ দেখেছে। বলছে চোখের অপারেশন করতে হবে। সব খরচ তারা দিয়ে আমাকে ঢাকা নিয়ে অপারেশন করিয়ে আনবে। আমি অনেক খুশি হয়েছি এবং তাদের জন্য দোয়া করি।
চিকিৎসক ডা. মো. রিপন আলী বলেন, বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. সালেহ আহম্মেদ স্যারের নির্দেশনায় আজকের এই কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়েছে। বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। আমাদের এখানে আনার জন্য ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২৩
এসএএইচ