ঢাকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু তিন বছরের মধ্যে একটি পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি কিংবা অবকাঠামো, সব বিষয়ে তিনি দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, একটি ফিলোসফি (দর্শন) দিয়ে গেছেন।
মঙ্গলবার (৬ জুন) কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডা. মিলন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে অনুষ্ঠান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের জন্য এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য এই আয়োজনের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজ আমরা এখানে কমিউনিটি ক্লিনিকের বিষয়ে আলোচনা করলাম। বঙ্গবন্ধু প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করার বিষয়ে বলে গেছেন। তিনি নির্দেশনাগুলো দিয়ে গেছেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আজ আমাদের স্বাস্থ্য সেবা গ্রাম পর্যায়ে চলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ভাবিত ও প্রবর্তিত কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণাটি কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা, যেটি শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে সম্প্রতি জাতিসংঘে প্রস্তাব আকারে গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের কথা ভাবছি। বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করা হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে ১৯টি হোস্টেল নির্মাণ প্রকল্প পাস করেছে। সারাদেশে আটটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনুমোদন হয়েছে এবং আরও বেশ কয়েকটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে চিকিৎসক ও নার্সরা যেভাবে আন্তরিকভাবে সেবা দিয়ে গেছেন সেটি আমাদের স্বাস্থ্য খাতকে অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছে। বাজেটে স্বাস্থ্য সেক্টরকে গতবারের তুলনায় চার শতাংশ বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই, সঙ্গে দাবি রাখি, তিনি যেন স্বাস্থ্য সেক্টরে বাজেট বাড়িয়ে দেন, সেই সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ২৬শ শয্যার হাসপাতাল থেকে পাঁচ হাজার শয্যার হাসপাতাল করা ঘোষণা দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেন, বাংলাদেশের সব মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকদের উদ্দেশে একটি কথা বলতে চাই। চিকিৎসকদের কাছ থেকেই জামায়াতে ইসলামের ফান্ডিং আসে। এটি খুবই দুঃখজনক।
এ ছাড়া স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) উদ্যোগে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো জামাল উদ্দিন চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৩
এজেডএস/আরএইচ