সিলেট: ৪০ ঘণ্টা পর কাজে যোগ দিয়েছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১টার তারা কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আশ্বস্ত হয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত মজুমদার কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আলম ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ৫০ জন আনসার বৃদ্ধির লক্ষে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায় তারা কর্মবিরতি থেকে সরে এসেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে হাসপাতালটির পরিচালকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
বৈঠক শেষে নিজেদের নিরাপত্তা আরও জোরদারের দাবিতে তারা আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তারা ঘোষণা করেছিলেন বুধবার ১২টার মধ্যে তাদের দাবি পূরণ হলে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হবে। অন্যথায় তা চলবে।
বৈঠকে উপস্থিত সূত্রগুলো জানিয়েছিল, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছিলেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম ভুঁইয়া তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও নিরাপত্তার বিষয়টিতে সুনিশ্চিত ঘোষণা চেয়েছিলেন চিকিৎসকরা।
এদিকে, কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা। এছাড়া বহির্বিভাগেও রোগী দেখছেন না চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (২০ আগস্ট) কুচাই শ্রীরামপুর নোয়াগাওয়ে বাতির আলীর ছেলে শাহাব উদ্দিনকে (৪০) মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে হাসপাতালের ৩৫ নম্ব ওয়ার্ডের ১৯ নম্বর শয্যায় ভর্তি করা হয়।
সোমবার (২১ আগস্ট) বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনা নিয়ে রোগীর স্বজনরা ওই ওয়ার্ডে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সদের ডিউটি রুমে ভাঙচুর করেন। রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তোলে স্বজনরা ওয়ার্ডের গ্লাস, চেয়ার, টেবিল, দরজা ও ইজিসি মেশিনসহ কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে হাসপাতাল ক্যাম্প পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং চারজনকে আটক করে।
রোগীর স্বজনদের আক্রমণের মুখে চিকিৎসক ও নার্সরা ওই ওয়ার্ড ছেড়ে চলে যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘটের ডাক দেন।
এছাড়া রোগির মৃত্যু ইস্যুতে ভাঙচুরকারীদের ৪জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের হাসপাতালের পক্ষে ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে এসএমপির কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- মহানগরের মোগলাবাজার থানাধীন কুঁচাই নোয়াগাওয়ের শাহাব উদ্দিনে ছেলে জুবেল আহমদ (২৭), তার সহোদর জুয়েল আহমদ (২৩) ও সাবেল আহমদ (২১) এবং তাদের চাচা একই গ্রামের বাতির আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৫৪)।
সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার ৪ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ