ঢাকা: রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নর্মাল স্যালাইন ও গ্লোকোজ স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইড কেনার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ২১ তম বৈঠকে এ প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবের বিস্তারিত সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ মাহমুদ।
তিনি জানান, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করায় ডেঙ্গু রোগ মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইড সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতেতে কেনার প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পক্ষ থেকে এসেছিল। মন্ত্রিসভা এ প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি জানান, ২০ লাখ পিস আইভি ফ্লুইডের মধ্যে ১২ লাখ পিস নর্মাল স্যালাইন (এক হাজার এমএল) ও ৮ লাখ পিস গ্লোকোজ স্যালাইন (এক হাজার এমএল)। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) মাধ্যমে এ আইভি ফ্লুইড কেনা হবে।
কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়া আইভি ফ্লুইড এবারই প্রথম সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার অনুমোদ দেওয়া হলো কি না? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে অতিরিক্ত সচিব বলেন, এটি প্রথম কিনা এ বিষয়ে আমার জানা নেই।
দরপত্র আহ্বান ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন করে আইভি ফ্লুইড কেনার অনুমোদ দেওয়ার কারণ কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখন যেহেতু ডেঙ্গু পরিস্থিতিটা একটু খারাপ অবস্থায় রয়েছে এবং জরুরিভাবে এ জিনিসগুলো দরকার আছে। টেন্ডারিং প্রসেসিংয়ে যাওয়ার মতো যথেষ্ট সময় নেই। এ কারণে তারা এ প্রস্তাব (সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন) দিয়েছে।
জানা গেছে, এ আইভি ফ্লুইড কেনার অনুমোদন পাওয়া গেলে বর্তমানে স্যালাইনের যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা অনেকটাই মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। প্রয়োজন হলে সামনে আরও স্যালাইন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ২০ লাখ আইভি ফ্লুইড কিনতে ২৯ কোটি টাকার মতো ব্যয় হবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) মাধ্যমে এ আইভি ফ্লুইড কেনা হবে।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৩৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৭৪ জন এবং ঢাকার বাইরের ২৬৫ জন। এ বছর আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৯ হাজার ৬৯২ জন এবং ঢাকার বাইরের ৯০ হাজার ২০৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০ হাজার ৩২ জন ডেঙ্গুরোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩ হাজার ৮৬১ জন এবং ঢাকার বাইরে রয়েছেন ৬ হাজার ১৭১ জন।
২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এছাড়া আজকের বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম সাইলোর বিএমআরইকরণ কার্যক্রম সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
জিসিজি/জেএইচ