ঢাকা: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের শতাধিক ডাক্তার-নার্স চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) রাত ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরুরি অনলাইন সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই সিভিল সার্জন কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। যার মধ্যে ছিল প্রায় ১৫ জন চিকিৎসক এবং নার্সসহ অন্যান্য চিকিৎসাকর্মী। বিপুল সংখ্যক রোগীকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে প্রায় ৪০ জন বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকের সঙ্গে অন্যান্য চিকিৎসাকর্মী সেবা দিচ্ছে। পাশের উপজেলা থেকে অতিরিক্ত ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসাকর্মী নিয়ে আসা হয়। আমাদের চিকিৎসাকর্মীরা নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সব মিলে প্রায় ৬০ জন চিকিৎসক, নার্স মিডওয়াইফ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী মিলে প্রায় শতাধিক চিকিৎসক ট্রেন দুর্ঘটনায় চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।
দুর্ঘটনায় কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা হাসপাতাল ও নিকটবর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে জরুরিভাবে প্রস্তুত রাখা হয়। যেহেতু গুরুতর রোগী ঢাকায় আসবে সেজন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নিটোর (পঙ্গু) ও রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে কে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং আগত রোগীকে জরুরিভাবে সেবা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৫ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ২২ জন রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আটজন আহত রোগী, পঙ্গু হাসপাতালে (নিটোর) আটজন রোগী পৌঁছেছে। এছাড়া কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন রোগীকে রেফার করা হলে সেখান থেকে পুনরায় ছয়জনকে ঢাকার হাসপাতালে পাঠানো হয়, বর্তমানে হাসপাতালটিতে ভর্তি আছে নয়জন রোগী। পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলা হাসপাতালে আরও কিছু রোগী চিকিৎসাধীন।
এতে আরও বলা হয়, ট্রেন দুর্ঘটনায় ভৈরব উপজেলা হাসপাতালে বর্তমানে ১৬টি মরদেহ রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়ে এবং বাকি তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ইতোমধ্যে মৃত ১১ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিতে মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান, ভারপ্রাপ্ত ডিডি (প্রশাসন) ডা. মুজিবুর রহমান, কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব জংশনের কাছাকাছি গাইনাহাটি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
আরকেআর/আরআইএস