ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

হার্টের সমস্যায় ভোগা শিশুর চলছিল সর্দি-কাশির চিকিৎসা, ১২দিন পর মৃত্যু 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৩
হার্টের সমস্যায় ভোগা শিশুর চলছিল সর্দি-কাশির চিকিৎসা, ১২দিন পর মৃত্যু  চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত শিশুর বাবা-মা সোলেমান ও সীমা আক্তার

কুমিল্লা: নগরীর টমসমব্রিজ এলাকার হলি কেয়ার হাসপাতালে ভর্তির ১২ দিন পর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, চিকিৎসকের ভুলে ওই শিশু মারা গেছে।

তারা বলছেন, হার্টের সমস্যায় ভুগছিল তাদের ছেলে। কিন্তু গত ১২ দিন ধরে সঠিক চিকিৎসা না দিয়ে তার সর্দি-কাশির চিকিৎসা করছিলেন ডাক্তাররা।

রোববার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ৫টায় মো. হোসাইন নামের শিশুটি মারা যায়।  

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়নের বাড়াইপুর গ্রামের মো. সোলেমানের ছেলে হোসাইন। তার বয়স হয়েছিল ২ মাস ১৪ দিন।

শিশুর বাবা সোলেমান বলেন, গত ২৮ অক্টোবর আমার ছেলেকে সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়ে হলি কেয়ার হাসপাতালে আনি। তখন ডা. আব্দুল কাইয়ুমের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১০ নভেম্বর আমার ছেলেকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউতে) নেওয়া হয়। এর আগে তার ইকো বা হার্টের কোনো পরীক্ষা করায়নি চিকিৎসকরা। তারা ১০ অক্টোবর আমাদের হঠাৎ করেই জানালেন আমার সন্তানের হার্টের চার ভাগের তিন ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।  

কেন ভুল চিকিৎসা বা চিকিৎসককে দোষারোপ করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যদি চিকিৎসক প্রথম দিনই বলতেন আমার সন্তানের হার্টের সমস্যা তাহলে আগেই তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতাম বা অন্য কোথাও চিকিৎসার জন্য নিতাম। কিন্তু তারা আমাদের কিছুই জানায়নি। আমার সন্তানের হার্টের সমস্যা বোঝার জন্য কোনো পরীক্ষাও করায়নি। আমরা এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব।  

শিশুর মা সীমা আক্তার বলেন, আমার সন্তানের জন্য প্রয়োজনে রক্ত বিক্রি করতাম। ডাক্তার যা বলছে আমরা তাই করেছি। কিন্তু ডাক্তার আমাদের সন্তানকে সময়মতো চিকিৎসা দেননি। আমরা জানতাম সর্দি-কাশি, আর দুইদিন আগে শুনি হার্টের সমস্যা।  

মৃত শিশুর বাবা-মায়ের অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক কাইয়ুমকে খুঁজে না পাওয়ায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে শিশুটির মৃত্যু খবর শুনে সংবাদ সংগ্রহ করতে রোববার হাসপাতালে গেলে এক টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে এবং ওই চ্যানেলের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোরশেদুল আলমের বিরুদ্ধে।  

এ ঘটনায় টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরাপারসন আহত হন। তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মীরা।  

হাসপাতালে সাংবাদিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি লুৎফর রহমান।  

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোরশেদুল আলম ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি সাংবাদিকককে নিচে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলেছি। তারা কেন দেখা করেনি তাই ক্ষুব্ধ হয়েছি। রোগীর পরিবারের অভিযোগ থাকলে সিভিল সার্জনের কাছে অভিযোগ করতে বলেন।  

এ বিষয়ে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার বলেন, হলি কেয়ার হাসপাতালের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।